কারি পাতার অনেক গুণ রয়েছে। কারি পাতা চুলের বৃদ্ধি এবং তাদের পড়া রোধ করতে কার্যকর। এর সাথে, এটি আপনার মাথার ত্বককেও শক্তিশালী করে, যার কারণে আপনার চুল চকচকে এবং শক্তিশালী দেখায়। এর পাশাপাশি এটি মাথাব্যথার উপশমও দেয়। আসলে কারি পাতায় প্রোটিন, ভিটামিন, বিটা ক্যারোটিনের মতো পুষ্টি উপাদান পাওয়া যায়, যা চুলের জন্য খুবই উপকারী। এছাড়াও এতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টি-হিস্টামিনিক, অ্যান্টি-কার্সিনোজেনিক এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য, যা চুলের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। কারি পাতার ব্যবহার চুল পড়া ও শুষ্কতাও কমায়। আসুন জেনে নিই চুল পড়া এবং মাথা ব্যথার ক্ষেত্রে কারি পাতা কীভাবে উপকারী এবং কীভাবে ব্যবহার করতে পারেন।
চুলের জন্য কারি পাতার উপকারিতা
1. চুল পড়া রোধ করুন
কারি পাতা ব্যবহার করে চুল পড়া বন্ধ করা যায়। প্রোটিনের অভাবে চুল পড়ে এবং পাতলা হয়ে যায় কোয়াশিওরকর ও ম্যারাসমাস রোগের কারণে। কারি পাতায় প্রোটিন এবং বিটা-ক্যারোটিন পাওয়া যায়, যা চুলের গোড়ায় পর্যাপ্ত পুষ্টি জোগায়। এর সাহায্যে চুল লম্বা ও মজবুত হতে পারে। এটি চুল পড়াও বন্ধ করতে পারে।
ব্যবহারবিধি
কারি পাতা ব্যবহার করতে, একটি পাত্রে এক মুঠো কারি পাতা এবং 3 টেবিল চামচ দই নিন। কারি পাতা ভালো করে পিষে দইয়ের সঙ্গে ভালো করে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। তারপর এই হেয়ার মাস্কটি আপনার মাথার ত্বকে এবং চুলের গোড়ায় লাগিয়ে হালকা হাতে ম্যাসাজ করুন। এই মাস্কটি প্রায় 30 মিনিটের জন্য রেখে দিন এবং তারপরে একটি হালকা শ্যাম্পু দিয়ে আপনার চুল ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে দুবার ব্যবহার করতে পারেন।
2. খুশকি থেকে মুক্তি পান
কারি পাতায় অ্যান্টিফাঙ্গাল এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা খুশকি এবং শুষ্কতা থেকে মাথার ত্বককে রক্ষা করে। এর সাথে, আপনার চুলের গোড়ার ফোলাভাবও কমানো যেতে পারে এবং এটি মাথাব্যথাতেও উপশম দেয়।
ব্যবহারবিধি
কারি পাতা ব্যবহার করতে, এক চামচ কারি পাতার তেল এবং কয়েক ফোঁটা কর্পূর তেল ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণটি দিয়ে আপনার চুলে হালকাভাবে ম্যাসাজ করুন। এর পর শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। এটি স্নানের আগে মাসে দুবার ব্যবহার করা যেতে পারে।
3. সংক্রমণ থেকে মাথার ত্বক রক্ষা করে
মাথার ত্বকে সংক্রমণ আপনার চুল দ্রুত পড়ে। সংক্রমণ আপনার মাথার ত্বকেও ঘা হতে পারে। কারি পাতায় অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুণ রয়েছে, যা চুল পড়া রোধ করে এবং চকচকে করে। এর সাহায্যে মাথার ত্বকও পরিষ্কার করা যায় এবং সংক্রমণও এড়ানো যায়।
ব্যবহারবিধি
সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে, এক চা চামচ কারি পাতার তেল, এক চা চামচ নারকেল তেল এবং আধা চা চামচ কর্পূর তেলের মিশ্রণ তৈরি করুন। এই মিশ্রণটি আপনার মাথার ত্বকে হালকা হাতে লাগিয়ে আলতো করে ম্যাসাজ করুন। প্রায় 30 মিনিট পর চুল ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে একবার ব্যবহার করতে পারেন।
4. চুলের বৃদ্ধির জন্য উপকারী
কারি পাতায় প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন ও আয়রন পাওয়া যায়। এই পুষ্টিগুণ চুলের বৃদ্ধির জন্য অপরিহার্য। এটি চুলকে গোড়া থেকে মজবুত করে এবং তাদের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এছাড়াও, এটি চুলকে প্রাণহীন দেখায় না।
ব্যবহারবিধি
চুলের বৃদ্ধির জন্য, একটি প্যানে এক মুঠো কারি পাতা এবং 3 চামচ নারকেল তেল গরম করুন। কারি পাতা কালো না হওয়া পর্যন্ত তেল গরম করুন। তেল ঠাণ্ডা করার পর চুলের গোড়ায় ভালো করে লাগান এবং তারপর আঙুলের সাহায্যে আলতো করে ম্যাসাজ করুন। মাথার ত্বকে ১ ঘণ্টা রেখে তারপর শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে একবার ব্যবহার করতে পারেন।
5. চুল গভীর কন্ডিশনার
চুলের উজ্জ্বলতা এবং বৃদ্ধির জন্য তাদের গভীর কন্ডিশনিং প্রয়োজন। কারি পাতার ব্যবহার চুলের গোড়া পর্যন্ত পুষ্টি জোগায়। এছাড়াও, আপনি বিভক্ত চুল থেকেও মুক্তি পেতে পারেন।
ব্যবহারবিধি
চুলকে গভীর কন্ডিশনার দিতে, আপনি কারি পাতা এবং মেহেদির পেস্টে সামান্য নারকেল তেল বা ডিম মিশিয়ে চুলের জন্য একটি কন্ডিশনার প্যাক তৈরি করতে পারেন। এরপর এই হেয়ার মাস্কটি মাথার ত্বকে ভালোভাবে লাগিয়ে ৩০ মিনিট পর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এতে চুল চকচকে দেখায়। সপ্তাহে একবার ব্যবহার করুন।
No comments:
Post a Comment