বেগুন আমাদের দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় সবজি। সারা বছরই এর চাষ করা যায়। বারান্দায় সহজেই বেগুন চাষ করা যায়। তবে বেগুনে রোগবালাই ও পোকামাকড়ের প্রকোপ বেশি থাকায় বেগুন চাষে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়।
এঁটেল দোআঁশ ও পলি দোআঁশ মাটি বেগুন চাষের জন্য অধিক উপযোগী। এ মাটিতে বেগুনের ফলন বেশি হয়। বেগুন চাষের জন্য প্রথমে বীজতলায় চারা রোপণ করে তারপর টবে বা ড্রামে লাগাতে হবে। কাঠের বাক্স, প্লাস্টিকের ট্রে, পাত্র বা অর্ধ-ড্রামগুলি ছাদে অল্প সংখ্যক চারা জন্মানোর জন্য বীজতলা হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে। বীজতলা থেকে জল যাতে দ্রুত বের হয়ে যায় সে ব্যবস্থা করতে হবে। বীজতলার পাত্র জৈব সার মিশ্রিত দোআঁশ মাটি দিয়ে পূর্ণ করতে হবে। তারপর বেগুনের বীজ পাত্রে বপন করা যেতে পারে। বেগুনের বাগান সাধারণত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়। এসব রোগের অধিকাংশই বীজবাহিত। তাই বপনের আগে বীজ শোধন করা প্রয়োজন। ক্ষেতে বীজ বপনের আগে একটি ভালো ছত্রাকনাশক এমনভাবে মেশাতে হবে যেন সব বেগুনের বীজ ভালোভাবে মিশে। তারপর খাঁটি বীজ 5/6 ঘন্টা ছায়ায় শুকিয়ে ক্ষেতে বপন করতে হবে। বীজ বপনের পর মাটি সমান করে হাত দিয়ে চেপে দিতে হবে। বপনের এক মাস পর বেগুনের চারা ছাদের জন্য উপযোগী। বীজতলা থেকে চারা তোলার কয়েক ঘণ্টা আগে চারাকে জল দিতে হবে। যাতে সহজে চারা তোলা যায়। চারা বাছাই করার সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন কান্ডের শিকড় বেশি কাটা না হয় এবং শিকড়ের সাথে কিছুটা মাটি থাকে। তবে বেডে চারা রোপণের ১৫-২০ দিন আগে রোপণের প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে হবে।
মাটি তৈরি:
বারান্দায় বেগুন গাছ লাগাতে ১০-১২ ইঞ্চি মাটির টব সংগ্রহ করতে হবে। টবের নিচের গর্তগুলো ছোট ছোট ইটের টুকরো দিয়ে বন্ধ করতে হবে। এবার ২ ভাগ এঁটেল দোআঁশ বা পলি দোআঁশ মাটি, ১ ভাগ গোবর, ২০-৩০ গ্রাম T, S, P সার, ২০-৩০ গ্রাম পটাশ সার মিশিয়ে একটি ড্রাম বা টবে ভরে ১০ দিন পর্যন্ত জলে ভিজিয়ে রাখুন। তারপর মাটি একটু খনন করে এভাবে ৪-৫ দিন রেখে দিন। মাটি আলগা হয়ে গেলে বেগুন গাছ টবে লাগাতে হবে।
রোপণ:
বিকেলে বা রাতে রোপন করা ভালো। গাছপালা সোজা করে লাগাতে হবে। সেই সঙ্গে গাছের গোড়ায় মাটি সামান্য তুলে হাত দিয়ে মাটি চেপে দিতে হবে। যাতে গাছের শিকড় দিয়ে অতিরিক্ত জল প্রবেশ করতে না পারে। রোপণের পর শুরুতে অল্প জল দিতে হবে। ধীরে ধীরে জল বাড়াতে হবে। গাছের নিচে যেন জল জমে না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
অন্যান্য যত্ন:
টবের মাটি কয়েকদিন পর পর হালকা কোদাল দিয়ে আলগা করে দিতে হবে। যাতে বেগুন গাছে আগাছা না জন্মে। অন্যদিকে মাটি একটু আলগা করে দিলে গাছের শিকড় ভালোভাবে গড়ে ওঠে।
No comments:
Post a Comment