মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় 'তেলেভাজা' বা 'চপ' তৈরির বিক্রিকে 'কুটির শিল্প' বলে বর্ণনা করেছিলেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায় অনুপ্রাণিত হয়ে, মালদার ছাত্র কণা সরকার 'চপ ইন্ডাস্ট্রি অ্যান্ড অ্যামেনিটিস' বিষয় নিয়ে গবেষণা করেছেন যে কীভাবে এই গ্রামীণ শিল্প পরিবার চালাতে সাহায্য করে। স্নাতকোত্তর পরীক্ষার জন্য কণা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি গবেষণাপত্র জমা দিয়েছেন। সে রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের চতুর্থ সেমিস্টারের পড়ুয়া। তাঁর গবেষণার বিষয় হল 'গ্রামীণ চপ শিল্প এবং পরিবারের ব্যবস্থাপনায় এর প্রভাব'। তিনি মালদা জেলার গাজোল-১, গাজোল-২ এবং করকোচ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় এই গবেষণার কাজ করেছেন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন 'তেলে ভাজা' বিক্রিকে 'চপ ইন্ডাস্ট্রি' হিসাবে বর্ণনা করেছিলেন। সেই সময় বাংলার বিজেপি নেতারা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রচুর উপহাস করেছিলেন। তিনি বলেন, বাংলায় শিল্প আসছে না, তাই চপ তৈরি শিল্পে পরিণত হয়েছে।
কণা সরকার একা গবেষণার বিষয় নির্বাচন করেননি। তাঁর 'গাইড' অর্থাৎ ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের অধ্যাপক তাপস পাল তাঁকে বিষয়টি বেছে নিতে সাহায্য করেছিলেন। কেন এমন একটি বিষয় বেছে নেয় সে? অধ্যাপক তাপস পাল মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “আমাদের অর্থনীতির ৮৩ শতাংশ মানুষ অসংগঠিত ক্ষেত্রে কাজ করে। রিকশাওয়ালা, টোটোওয়ালা থেকে শুরু করে তেল বিক্রেতারা এই ক্যাটাগরির অন্তর্ভুক্ত। এই অসংগঠিত খাতকে ফিরিয়ে আনতে হবে। চপ বিক্রেতারা কত তৈরি করে? এ বিষয়ে আমাদের কাছে কোনও নির্ভরযোগ্য তথ্য নেই। তাই গবেষণা প্রয়োজন। এই সমীক্ষায় বলা হয়েছে, 'তেলে ভাজা' বিক্রি করে মহিলারা প্রতি মাসে ৯ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করেন। পুরুষদের ক্ষেত্রে সেই আয় ১৫ হাজার টাকার সমান।
কিন্তু কেন 'গবেষণা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চপ ক্রাফট কনসেপ্ট থেকে অনুপ্রাণিত' বলে গবেষণাপত্র লেখা হল? জবাবে তাপস রায় বলেন, "প্রাথমিক ও ব্যক্তিগত কপিতে লেখা ছিল, কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে জমা দেওয়া গবেষণাপত্রের কপিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম নেই। শুধুমাত্র ইংরেজি শিরোনাম রয়েছে।" তবে, কণা সরকার দাবী করেছেন, "অনেকেই চপ শিল্প নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য সম্পর্কে অনেক কথা বলেছেন এবং সেখান থেকেই আমি এই গবেষণার ধারণা পেয়েছি।" "আমি গবেষণা করে দেখেছি যে অনেক লোক রাস্তার পাশের চপের দোকানের উপর নির্ভরশীল," তিনি বলেছিলেন। সমীক্ষায় আরও জানানো হয়েছে যে কীভাবে মহিলারা দোকান শিল্পের মাধ্যমে স্বাবলম্বী হয়েছেন।
No comments:
Post a Comment