ঝাড়খণ্ডের তিন কংগ্রেস বিধায়কের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ নগদ উদ্ধারের পর দল কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে। তিন বিধায়ককেই সাসপেন্ড করেছে কংগ্রেস। ঝাড়খণ্ড কংগ্রেস ইনচার্জ অবিনাশ পান্ডে এই তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, যেসব বিধায়ককে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ নগদ টাকাসহ আটক করেছে, তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। একই সময়ে, এটিও জানা যাচ্ছে যে, হেফাজতে নেওয়া বরখাস্ত বিধায়কদের পাশাপাশি আজ আরও দু'জনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। পাশাপাশি, পশ্চিমবঙ্গ সরকার সিআইডিকে বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।
যে তিনজন বিধায়ককে সাসপেন্ড করেছে কংগ্রেস, তাদের মধ্যে রয়েছেন রাঁচির খিজরির বিধায়ক রাজেশ কাচ্ছাপ, কোঙ্গারি সিমডেগার কোলেবিরার বিধায়ক নমন ভিক্সেল এবং বিধায়ক ইরফান আনসারি। শনিবার এই তিন কংগ্রেস বিধায়ককে গ্রামীণ হাওড়া পুলিশ বিপুল পরিমাণ নগদ টাকাসহ আটক করেছে। তারা সবাই একটি গাড়িতে করে যাচ্ছিলেন। এদিন বিকেলে রানিহাটি মোড়ের কাছে তাদের গাড়ি থামানো হয়। তাতে তল্লাশি চালাতেই উদ্ধার হয় বান্ডিল বান্ডিল টাকা।
উল্লেখ্য, ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশ সুপার স্বাতী ভাঙ্গালিয়া জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রানিহাটি মোড়ে বিশেষ অনুসন্ধান অভিযান চালানো হয়। এদিকে ঝাড়খণ্ডের জামতারা থেকে আসা একটি গাড়িকে থামানো হয়। জামতারার তিন কংগ্রেস বিধায়ক রাজেশ কাচ্ছাপ, নামান ভিক্সেল এবং ইরফান আনসারি গাড়ির ভিতরে উপস্থিত ছিলেন। গাড়ির ভেতর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বিপুল পরিমাণ টাকা।
এসপি স্বাতী ভাঙ্গালিয়া জানিয়েছিলেন, গাড়ি থেকে কত টাকা উদ্ধার হয়েছে তা এখনই বলা সম্ভব নয়। মেশিন দিয়ে নগদ গণনা করা হবে। তিনি বলেন, বিধায়কদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জামতারা বিধায়কের বোর্ডও লাগানো হয়েছিল বিধায়কের গাড়িতে। মামলার তদন্ত চলছে।
এরপর রবিবার তিন বিধায়ক সহ পাঁচজনকে পুলিশ গ্রেফতার করে। পুলিশ এদের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করেছে। রবিবার পুলিশ এই মামলার তদন্ত ভার সিআইডির হাতে তুলে দেয়। পুলিশ সূত্রে খবর, এই গাড়ি থেকে ৪৯ লক্ষ টাকা উদ্ধার হয়েছে। শনিবার রাতভর তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে হাওড়া গ্রামীণ পুলিশ। কিন্তু জিজ্ঞাসাবাদে তারা এই টাকার উৎস সম্পর্কে সঠিক তথ্য দিতে পারেনি। তাদের কথায় অসঙ্গতি ধরা পরে। তারা জানায়, ঝাড়খণ্ডে একটি আদিবাসীদের উৎসব আছে। সেই টাকা দিয়ে তারি আদিবাসীদের জন্য কলকাতার বড় বাজারে এসেছিল সস্তায় শাড়ি কিনতে।
পুলিশ জানতে পারে, তারা শুক্রবার রাতে অসমের গুয়াহাটি গিয়েছিল। আবার শনিবারই তারা সেখান থেকে চলে আসে। কিন্তু এই কথা তারা প্রথমে পুলিশের কাছে বলেনি। পুলিশ প্রশ্ন করতে তাদের কথায় অসঙ্গতি ধরা পরে। এই ঘটনায় ক্রমশ রহস্য ঘনাচ্ছে। প্রশ্ন উঠছে কেন একটা রাতের জন্য এই তিন বিধায়ক অসমে গিয়েছিল? নানা বিষয় খতিয়ে দেখে রবিবার তাদের তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এই তিনজন কংগ্রেস বিধায়কের সঙ্গে আরও দুজন ছিল। তাদেরও পুলিশ গ্রেফতার করে। পাঁচ জনকে আজ হাওড়া আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়।
No comments:
Post a Comment