আমাদের দেশে সাপ এবং হিন্দু দেবতার মধ্যে একটি পুরানো সম্পর্ক রয়েছে। ভগবান শিব সর্বদা তার গলায় একটি সাপ বহন করেন। প্রতি বছর নাগ পঞ্চমীর দিনে মানুষ সাপের পূজা করে এবং আশীর্বাদ পেতে দুধ নিবেদন করে। একদিকে মানুষ সাপকে ভয় পায়, অন্যদিকে তাদের পূজাও করে। সাপকে ভয় পাওয়াও স্বাভাবিক, কারণ বিষাক্ত সাপ কাউকে কামড়ালে তার জীবন বাঁচানো কঠিন হয়ে পড়ে। কিন্তু জানলে অবাক হবেন যে মহারাষ্ট্রে একটি অনন্য গ্রাম রয়েছে যেখানে মানুষ সাপ নিয়ে থাকে। এর পাশাপাশি, লোকেরা সাপকেও পূজা করে এবং তাদের বাড়িতেও থাকতে দেয়।
এই গ্রামটি মহারাষ্ট্রের পুনে থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরে শোলাপুর জেলায় অবস্থিত, যার নাম শেতপাল। আসুন জেনে নেই এই গ্রামে এমন কি আছে যাতে মানুষ সাপকে ভয় না পায় এবং তাদের ঘরে থাকতে পারে।
মহারাষ্ট্রের শেতপাল গ্রামে, লোকেরা খোলাখুলিভাবে সাপকে স্বাগত জানায়। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো মানুষ বিষাক্ত সাপ কোবরা ছাড়া অন্য কোনো সাপকে বাঁচতে দেয় না। এই গ্রামে সাপের চলাচলে কোনো বাধা নেই। এখন আপনি হয়তো বিশ্বাস করবেন না, কিন্তু এটা একেবারেই সত্য। কোবরা এই গ্রামে ঘুরে বেড়ায়, কিন্তু কেউ কিছু বলে না। শেতপাল গ্রামে প্রায় ২৬০০ মানুষের বসবাস এবং সাপ কারো ক্ষতি করে না। এখানে লোকেরা কোবরাকে তাদের বাড়িতে প্রবেশ করতে দেয়। গ্রামের মানুষ সাপকে ভয় পায় না, এবং সাপও কারো ক্ষতি করে না। মানুষ এখানে কোবরা পূজা করে। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো এখন পর্যন্ত সাপের কামড়ের একটি ঘটনাও এখানে ঘটেনি। এখানে সাপ ঘরের পাশাপাশি স্কুলের শ্রেণীকক্ষে যায় এবং শিশুরাও এসব সাপকে ভয় পায় না। এখানে শিশুরা সাপের মধ্যে বেড়ে ওঠে । এখানকার মানুষ বাড়িতে সাপের জন্য দেবস্থানাম তৈরি করে। এই গ্রামে মানুষ যদি নতুন বাড়ি তৈরি করে, তারা সাপের জন্য একটি ছোট জায়গাও তৈরি করে। এই জায়গাটির নাম দেবস্থানম। এই কোণে অর্থাৎ জায়গায় সাপ বসে। কবে থেকে কিভাবে সাপের সঙ্গে বসবাসের প্রথা শুরু হয়েছিল তা কারো জানা নেই। কিন্তু সাপ মানুষের জীবনের একটি অংশ হয়ে উঠেছে।
No comments:
Post a Comment