জলপাইগুড়ি: বিগত দু'বছরের করোনা আতঙ্ক কাটিয়ে পরিস্থিই এখন অনেকটাই স্বাভাবিক। আর এতেই এখন চওড়া হাসি জলপাইগুড়ির ঢাকিদের মুখে। ভিন রাজ্যে পাড়ি দিচ্ছেন এখানকার ঢাকিরা। বাইরে যাওয়ার আগে তাই নিজেদের ঢাক সারাইয়ের ব্যস্ততা এখন তুঙ্গে।
করোনা কাঁটায় কার্যত দিশেহারা হয়ে পড়েছিলেন ঢাকিরা। সেই সময় গোটা পুজো সহ পুরো মরসুমটাই সেরকম ভাবে বাদ্য যন্ত্র বাজাতে পারেননি। অনেক ঢাকিরাই নিজের পেশা ছেড়ে অন্য পেশার সাথে যুক্ত হয়েছিলেন। এবার করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকায় চিন্তার ভাঁজ দূর হয়েছে বলে দাবী তাঁদের। আর তাই তো দুই বছর পর আবারও দুর্গা পুজোয় ঢাক বাজাতে আসামের উদ্দ্যেশ্যে পাড়ি দিচ্ছেন জলপাইগুড়ির বাদল দাস এবং তার সতীর্থরা।
দুর্গা পুজো মানেই কাঁসর ঘন্টা, ঢাকের কাঠির আওয়াজ, যা নাহলে পুজোটাই মনে হয় অসম্পূর্ণ থেকে যায়। প্রতিমা আনা থেকে শুরু করে, পূজা-পাঠ, আরতি, প্রতিমা বিসর্জন সব কিছুতেই ঢাকের আওয়াজে মাতিয়ে রাখেন ঢাকিরা। প্রতিটি পুজো মণ্ডপে ঢাকের কাঠির শব্দে ভক্তদের উদোম নাচ, মণ্ডপে আগত দর্শনার্থীদেরও মন ছুঁয়ে যায়। বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব মানেই দুর্গা উৎসব। আর এই উৎসবের মজা যে কেউই হাত ছাড়া করতে চায় না, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
বাদল বাবু বলেন, 'গত দুই বছর করোনা পরিস্থিতি মানুষকে পঙ্গু করে দিয়েছিল। আমরা আগে ১৫ থেকে ২০ জন আসামে ঢাক বাজাতে যেতাম। মাঝখানে দুই বছর করোনা পরিস্থিতি থাকায় এই পেশার থেকে বেরিয়ে গিয়ে টোটো চালানো, রঙের কাছ, এমন কি ঢেঁকি শাক পর্যন্ত বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতে হয়েছে অনেককেই।' আক্ষেপের সুরে তিনি বলেন, 'সেই সব দুর্দশার কথা মুখে বলা যায় না। সেই পরিস্থিতি কাটিয়ে সবাই এবার আনন্দে ভাসতে চাই। তাই আসামের উদ্দেশ্যে পাড়ি দিচ্ছি এবার। আশা করি পুজোর সময়টা ভালোই কাটবে।'
No comments:
Post a Comment