গ্রহাণুগুলিকে দীর্ঘকাল ধরে পৃথিবীর জন্য হুমকি হিসাবে বিবেচনা করা হচ্ছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, গ্রহাণু যদি পৃথিবীর সঙ্গে ধাক্কা খায়, তাহলে বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটতে পারে। কথিত আছে যে একবার পৃথিবী এবং একটি গ্রহাণুর মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছিল, যার পরে পৃথিবী থেকে ডাইনোসরগুলি নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছিল। এর পর বিজ্ঞানীরা বহুবার পৃথিবীতে গ্রহাণুর আঘাতের সম্ভাবনা প্রকাশ করলেও তা কখনোই সত্য বলে প্রমাণিত হয়নি। এবার ন্যাশনাল সায়েন্স ফাউন্ডেশনের বিজ্ঞানীরা একটি ঘাতক গ্রহাণুর সন্ধান পেয়েছেন। এই গ্রহাণু পৃথিবীকে ধ্বংস করতে পারে। প্রায় দেড় কিলোমিটার চওড়া একটি গ্রহাণু যদি পৃথিবীর একটু কাছে থেকেও চলে যায় তাহলে পৃথিবীতে বিপর্যয় দেখা দিতে পারে। বিজ্ঞানীদের মতে, পৃথিবী ও এই গ্রহাণুর মধ্যে সংঘর্ষ হলে অনেক মহাদেশে ভয়াবহ বিপর্যয় ঘটবে। পৃথিবীতে ডাইনোসরের সময় ধ্বংসযজ্ঞ ঘটতে পারে। এই গ্রহাণুর নাম দেওয়া হয়েছে ২০২২AP৭।
২০২২AP৭ গ্রহাণুটি পৃথিবী থেকে ৭০.৮১ লাখ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এবং সূর্যের কক্ষপথে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করছে। এই গ্রহাণুটি পৃথিবীর চাঁদের দূরত্বের চেয়ে ১৮ গুণ বেশি দূরে। যাইহোক, এটি একটি সম্ভাব্য বিপদ গ্রহাণু হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়েছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত গ্রহাণুর মধ্যে শুধু এই গ্রহাণুই পৃথিবীর জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে তারা বলে যে এটি পৃথিবীতে আঘাত করার খুব কম সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু পৃথিবীর খুব কাছ দিয়ে গেলেও তা ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ঘটাতে পারে। কার্নেগি ইনস্টিটিউশন ফর সায়েন্সের জ্যোতির্বিজ্ঞানী স্কট শেফার্ড এই গ্রহাণু সম্পর্কে অনেক চমকপ্রদ তথ্য দিয়েছেন। তিনি বলেন, এই ধরনের গ্রহাণুকে বলা হয় 'প্ল্যানেট কিলার'। তিনি বলেন, এটি যদি পৃথিবীর সঙ্গে ধাক্কা খায়, তাহলে পুরো গ্রহে বিপর্যয় নেমে আসতে পারে। এর ফলে অনেক মহাদেশে জীবন শেষ হয়ে যাবে।
এই গ্রহাণুটি সূর্যের উজ্জ্বল আলোর আড়ালে যে তিনটি বস্তু লুকিয়ে আছে তার একটি। সবচেয়ে বড় বিপদ হল এই গ্রহাণুর আকার। পৃথিবীর কক্ষপথে আসার পর এটি বড় ধরনের বিপর্যয় ডেকে আনবে। গত আট বছরে আবিষ্কৃত গ্রহাণুগুলির মধ্যে গ্রহাণু ২০২২AP৭ সবচেয়ে বিপজ্জনক। এই গ্রহাণুটি ২০২২ সালের জানুয়ারিতে আবিষ্কৃত হয়েছিল। সূর্যের আলোর আড়ালে থাকায় ঠিকমতো দেখা যাচ্ছিল না। এর কারণ ছিল এটা নিয়ে গবেষণা করতে ঝামেলা। এরপর সারা বিশ্বের বহু টেলিস্কোপ ব্যবহার করে তথ্য পাওয়া গেছে। দ্য অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল জার্নালে এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
No comments:
Post a Comment