অপরাধ করতে গিয়ে মানুষ কখন নৃশংস শয়তানে পরিণত হয়ে যায়, সে নিজেও জানে না। দেশে এমন অনেক ঘটনা সামনে এসেছে, যা সম্পর্কগুলোকে এমন জায়গায় এনে দাঁড় করিয়েছে, যা ভাষায় বর্ণনা করা কঠিন। এই ঘটনাগুলো সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়েছে যে, একজন মানুষকে সত্যিকারের শয়তানে পরিণত হতে সময় লাগে না। বর্তমানে শ্রাদ্ধ খুন মামলাকে কেন্দ্র করে সারাদেশে শিহরিত। এমন ঘটনায় কার্যত বাকরুদ্ধ সকলে। তবে এর বাইরেও এমন অনেক কাণ্ড রয়েছে যেখানে খুনিরা খুন করে দেহ টুকরো টুকরো করে ফেলেছে। সম্প্রতি আমাদের রাজ্যেই ঘটছে এই হাড় হিম ঘটনা।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুর এলাকায়, বাবাকে খুন করে এবং মায়ের সাথে মিলে মৃতদেহটি টুকরো-টুকরো করে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ছেলের বিরুদ্ধে। মৃত বাবা অবসরপ্রাপ্ত নৌসেনা কর্মী। অভিযোগ, তিনি মদ্যপানে আসক্ত ছিলেন। বাবা-ছেলের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো, ১৪ নভেম্বর সেই ঝগড়া চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছায়। এরপর ছেলে বাবাকে খুন করে এবং দেহ পাঁচ টুকরো করে লোপাট দেয়। এতে তার মাও তাকে সহযোগিতা করেন। কিন্তু ঐ যে কথায় বলে, অপরাধীর হাত লম্বা হলেও আইন-কানুনের থেকে বড় নয়। পুলিশের জালে ধরা পড়েন অভিযুক্ত মা-ছেলে।
এছাড়াও ২০১০ সালে, উত্তরাখণ্ডের দেরাদুন থেকে একই রকম একটি নৃশংস ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারের বিরুদ্ধে তার স্ত্রীকে খুন করে দেহ ছোট ছোট টুকরোয় কেটে ফ্রিজে লুকিয়ে রাখার অভিযোগ ওঠে। আরও অভিযোগ, দেহটি ৭২ টুকরো করা হয় এবং প্রতিদিন এক একটি করে টুকরোগুলো সরিয়ে ফেলা হত এবং এত বড় ঘটনার পরও অভিযুক্ত রাজেশ তার দুই সন্তানকে নিয়ে সেই ফ্ল্যাটে স্বাভাবিক জীবনযাপন করছিলেন। উল্লেখ্য, দুজনেরই প্রেমের বিয়ে হয়েছিল।
সাল ২০০৮; মুম্বাইয়ে প্রকাশিত নীরজ গ্রোভার খুনের মামলাটিও যথেষ্ট হাড়হিম। এটি এমন একটি বিষয় যা কেউ ভুলতে পারে না। নীরজ গ্রোভার একজন টিভি প্রযোজক ছিলেন। ত্রিকোণ প্রেমের জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। মামলায় কন্নড় অভিনেত্রী মারিয়া সুসাইরাজ ও নৌবাহিনীর আধিকারিক ম্যাথু জড়িত ছিলেন। অভিযোগ, মারিয়ার ফ্ল্যাটে ম্যাথু ও নীরজের মধ্যে মারামারিতে নিহত হন নীরজ। এরপর মারিয়া ও ম্যাথিউ মিলে নীরজের মৃতদেহ ৩০০ টুকরো করে প্লাস্টিকের ব্যাগে ভরে দেহের টুকরোগুলো বনের বিভিন্ন স্থানে ফেলে দেয়।
এরকমই আরও একটি ঘটনা হল নয়না সাহনি হত্যা মামলা, যা তন্দুর কাণ্ড নামে পরিচিত। যেখানে নয়না সাহনির প্রেমিক সন্দেহের বশবর্তী হয়ে সঙ্গিনীকে খুন করেছে বলে অভিযোগ। অভিযোগ, এরপর নয়নার মৃতদেহের টুকরোগুলো তন্দুরে রেখে পুড়িয়ে ফেলা হয়। দুজনেই লিভ-ইনে থাকতেন। পরে উভয়ের মধ্যে ঝগড়া শুরু হয় এবং সন্দেহের বশবর্তী হয়ে সুশীল তাকে খুন করে এবং টুকরো টুকরো করে কেটে তন্দুরে ফেলে পুড়িয়ে দেয়।
সম্প্রতি সামনে আসা শ্রদ্ধা খুন মামলার এখনও পুরোপুরি সমাধান হয়নি। এই হত্যাকাণ্ডের অভিযুক্ত হল শ্রদ্ধার প্রেমিক আফতাব, যে তাকে খুন করে তার দেহকে ৩৫ টুকরো করে। একের পর এক এই টুকরোগুলো সে মেহরাউলি জঙ্গলে ফেলে দিত। পুলিশ সন্দেহের ভিত্তিতে শ্রদ্ধার লিভ ইন পার্টনারকে আটক করেছিল, এখন এই বিষয়ে ধীরে ধীরে অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ্যে আসছে।
No comments:
Post a Comment