মাদকের জন্য টাকা না দেওয়ায় মাকে মারধর। ক্ষোভে বড় ভাইকে খুন করল যুবক। ঘটনাটি দিল্লীর মঙ্গোলপুরির। খুনের রহস্য আড়াল করতে অভিযুক্ত দেহ খাটের নিচে লুকিয়ে রাখে। সন্ধ্যায় বাবার সাথে মিলে দেহটি চাদরে জড়িয়ে লুকানোর চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হয়ে দেহ বাড়ির পাশের পার্কে ফেলে দেয়।
ঘটনা জানতে পেরে মা অভিযুক্তকে পুরো বিষয়টি পুলিশকে বলতে বলেন। এরপর বুধবার গভীর রাতে অভিযুক্ত নিজেই থানায় পৌঁছে অপরাধ স্বীকার করে। অভিযুক্তের কথায় পুলিশ পার্ক থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করে। অভিযুক্তকে খুনের অভিযোগে এবং বাবাকে প্রমাণ গোপন করার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ অভিযুক্তের কাছ থেকে ঘটনায় ব্যবহৃত হাতুড়ি ও ছুরি উদ্ধার করেছে।
পুলিশ জানায়, জয়কিশান (৩০) তার বাবা-মা ও দুই ভাইয়ের সঙ্গে মঙ্গোলপুরি ই-ব্লকে থাকতেন। বাবা ওমপ্রকাশ ছোট ছেলে ললিতকে নিয়ে পেরাগড়িতে জুতার কারখানায় কাজ করেন। ১৩ ডিসেম্বর গভীর রাতে আড়াইটার দিকে ললিত মঙ্গোলপুরি থানায় পৌঁছে পুলিশকে জানায় যে সে জয়কিশানকে খুন করেছে। পুলিশ অভিযুক্তকে হেফাজতে নিয়ে পার্কে পৌঁছে যায় যেখানে দেহ ফেলে রাখা ছিল।
সেখান থেকে জয় কিষানের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। জয়কিশানের মাথা কেটে গলা কেটে ফেলা ছিল। ললিত জানান, জয়কিশান মাদকাসক্ত ছিল এবং টাকার জন্য পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঝগড়া করত। মাদকের টাকা না দেওয়ায় ১২ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় মাকে মারধর করে। এ কারণে মা বাড়ি ছেড়ে চলে যান।
১৩ ডিসেম্বর, বাবা এবং ভাই আকাশ কাজে যাওয়ার পরে, ললিত তার মাকে মারধরের বিষয়টি নিয়ে জয়কিশানের সাথে তর্ক করে। এতে ললিত জয়কিশানের মাথায় হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করেন। এরপর ছুরি দিয়ে গলা কেটে খাটের নিচে দেহ লুকিয়ে রাখে। ললিত ঘটনাটি তার বাবাকে জানান। বাবা-ছেলে দেহ চাদরে মুড়িয়ে পার্কে কবর দেন। সন্ধ্যায় ফিরে মা ঘটনাটি জানতে পারেন। তিনি ললিতকে থানায় গিয়ে পুরো বিষয়টি পুলিশকে বলতে বলেন। জয়কিশান গাঁজা ও স্ম্যাকে আসক্ত ছিল। তার বিরুদ্ধে ছিনতাইয়ের মামলাও রয়েছে।
সূত্র জানায়, জয়কিষাণকে খুনের জন্য পরিবারের সদস্যদের কোনও অনুশোচনা নেই। জয়কিশানের কর্মকাণ্ডে তিনি খুবই বিরক্ত হন। জয়কিশান দুষ্কৃতীদের সংস্পর্শে এসে ছিনতাইও করছিলেন। প্রয়োজনে টাকা দেওয়ার জন্য পরিবারের সদস্যদের চাপ দিতেন। টাকা না পেয়ে তাণ্ডব চালাতেন।
খুনের পর দেহ খাটের নিচে লুকিয়ে রাখে ললিত। বাবা বাড়িতে পৌছালে দুজনেই দেহ চাদরে মুড়ে দেহ সাইকেলে রেখে লুকানোর জন্য বের হয়ে গেলেও রাস্তায় দেহ পড়ে যায়। লোকজন দেখে ও ধরা পড়ার ভয়ে দুজনেই বাড়ির পাশের পার্কে দেহ ফেলে দেয়। সন্ধ্যায় মাও বাড়িতে এসে ললিতকে পুলিশে খবর দিতে বলেন। পরিবারে অনেক ভাবনাচিন্তার পর ভোর আড়াইটায় থানায় পৌঁছায় ললিত এবং অপরাধ স্বীকার করেন।
No comments:
Post a Comment