বহুতলে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১৪ জনের মৃত্যু। গুরুতর আহত হয়েছেন আরও ১৮ জন। ঝাড়খণ্ডের ধানবাদের ব্যাঙ্ক মোড থানার অন্তর্গত জোদা ফাটক রোডে অবস্থিত বহুতলে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অ্যাপার্টমেন্টের তৃতীয় তলায় আগুন লাগে। দমকলের ৮টি ইঞ্জিন আগুন নেভানোর কাজে নিয়োজিত রয়েছে। এই ঘটনায় ১০ জন মহিলা ও তিন শিশু সহ ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে এ পর্যন্ত ৬ জনের দেহ বের করা হয়েছে। বিয়ের সময় সিলিন্ডার ফেটে এই অগ্নিকাণ্ড এবং আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে বলে জানা গিয়েছে, যদিও নিশ্চিতভাবে এখনও কিছু বলা হয়নি।
এ ঘটনায় অনেকের প্রাণহানির আশঙ্কা করছে পুলিশ। আগুন এতটাই বিধ্বংসী, যে ক্ষয়ক্ষতি ও মৃত্যুর পরিসংখ্যান আরও বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। ঘটনাস্থলে এখনও উদ্ধার কার্য চলছে। আধিকারিকদের মতে, সন্ধ্যায় ঐ আবাসনে আগুন লাগে। পুলিশ জানায়, কিছু লোক সেখানে আটকা পড়েছে, উদ্ধার কার্য দ্রুত শুরু করা হয়। খবর পেয়ে দমকলের একাধিক ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রায় ৩ ঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এই অগ্নিকাণ্ডে বহু ফ্ল্যাট পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আগুন ভয়াবহভাবে ছড়িয়ে পড়ায় সমস্যায় পড়েছেন দমকলকর্মীরা। ঘটনাস্থলে আশেপাশের থানার পুলিশ বাহিনীকেও ডাকা হয়েছে।
বলা হচ্ছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ধানবাদের এই আবাসনের তৃতীয় তলায় আগুন লাগে। গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ থেকে এই আগুনের সূত্রপাত বলে জানা গিয়েছে। আগুন ৩য় তলায় লাগলেও কিছুক্ষণের মধ্যেই দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং ৫ম তলায় পৌঁছে যায়। আগুনে পুড়ে মৃতদের অবস্থা এমন হয়েছে যে, তাদের শনাক্ত করা কঠিন। কিছু দেহ একসাথে আটকে আছে বলে জানা গেছে।
সরকারি সূত্র বলছে, এখনও বহু মানুষ ভবনে আটকে থাকার কারণে মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে। আতঙ্কের বিষয় হল ভবনের নিচ থেকে আগুন ছড়িয়ে পড়ে এবং উপরের তলায় ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
পুলিশ ও ফায়ার ব্রিগেড উদ্ধার ও ত্রাণ কাজে নিয়োজিত রয়েছে। দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১৮ জন গুরুতর আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। আহতদের কাছের বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে বিপুল সংখ্যক অ্যাম্বুলেন্স ডেকেছে জেলা প্রশাসন।
জানা গিয়েছে, এই অ্যাপার্টমেন্টে তিনটি ব্লক রয়েছে। বি ব্লকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। ১০ তলা আবাসনটিতে প্রায় ৭০টি ফ্ল্যাট রয়েছে বলে জানা গেছে। আগুন নেভাতে কোনও সমস্যা যাতে না হয়, তাই শক্তিমন্দির রোডে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
উল্লেখ্য, চার দিনে ধানবাদে এটি দ্বিতীয় বড় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা। গত শুক্রবার রাতে হাজরা হাসপাতালে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে এক চিকিৎসক দম্পতি সহ পাঁচজনের মৃত্যু হয়। এছাড়াও একদিন আগেই অর্থাৎ ৩০ শে জানুয়ারী ধানবাদের কুমারধুবি মার্কেটে একটি বিশাল অগ্নিকাণ্ড ঘটে, যাতে ১৯টি দোকান পুড়ে ছাই হয়ে যায়। ফায়ার সার্ভিসের তিন ঘন্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে ব্যাপক পরিমাণে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
স্থানীয় লোকজন আগে নিজেরাই আগুন নেভানোর চেষ্টা করলেও কিছুক্ষণের মধ্যেই আগুনে ১৯টি দোকান পুড়ে যায়। এর মধ্যে চারটি কাপড়ের দোকান, দুটি পূজার সামগ্রীর দোকান এবং ১৩টি ফল ও সবজির দোকান রয়েছে। কীভাবে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে তাও জানা যায়নি। এ ঘটনায় অসামাজিক চক্র জড়িত থাকার আশংকা করেছেন দোকানদাররা। এই আগুন নেভাতে ফায়ার ব্রিগেডের চারটি গাড়িকে অনেক হিমশিম খেতে হয়।
No comments:
Post a Comment