টানা দুদিন ধরে বিপুল পরিমাণ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে কলকাতায়। বুধবার বালিগঞ্জের পরে গড়িয়াহাট থেকে ১.৪ কোটি নগদ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। দ্বিতীয় দিনে গাড়ি থেকে প্রায় এক কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় দুলাল রায় ও মুকেশ সারস্বত নামে দুই চালককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের দুজনকেই সোমবার আলিপুর আদালতে পেশ করা হয়েছিল, যেখানে আদালত ২০০০ এর ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন মঞ্জুর করে। অন্যদিকে গড়িয়াহাটে যে গাড়ি থেকে নোটের পাহাড় পাওয়া গেছে, সেটি নিশীথ রায়ের মালিকানাধীন। তাকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। পেশায় ব্যবসায়ী নিশিত রায়ের বাড়ি বাঙ্গুর অ্যাভিনিউতে। তিনি কমপক্ষে ২৫টি শেল কোম্পানির মালিক।
এদিকে গড়িয়াহাট থেকে নগদ টাকা উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসেছে। সূত্রের খবর, নিশীথ রায় অন্তত ২৫টি শেল কোম্পানির পরিচালক। এখন গোয়েন্দা আধিকারিকরা ওই শেল কোম্পানিগুলোর তদন্ত করছেন।
গড়িয়াহাটের কাছে একটি শপিং মলে নিশীথ রাইয়ের অফিস। নিশীথেরও শেয়ার কেনাবেচার ব্যবসা রয়েছে এবং এখান থেকেই প্রশ্ন ওঠে শেল কোম্পানির আড়ালে হাওয়ালা ব্যবসা চলছিল কিনা? এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন শীর্ষ আধিকারিকরা। রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতিতে বাংলার মানুষ শেল কোম্পানী সম্পর্কে অনেক কিছু প্রকাশ করেছে। আরেক ধরনের ব্যবসা হল শেল কোম্পানি, যা সাইন বোর্ডের আড়ালে চলছে। ভুয়ো কোম্পানি খুলে সাশ্রয় হচ্ছে ট্যাক্সের পরিমাণ।
এসব শেল কোম্পানির নেপথ্যে হাওয়ালা ব্যবসা চলছিল বলে আধিকারিকদের সন্দেহ। এক কোম্পানি থেকে অন্য কোম্পানিতে টাকা পাচার এবং এর পেছনে হাওয়ালা ব্যবসা চলছে বলে সন্দেহ করছে পুলিশ। হাওয়ালার টাকা দেওয়া হচ্ছিল বলে গোয়েন্দাদের ধারণা। একই সঙ্গে অভিযানে নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়। গোয়েন্দাদের সন্দেহ, টাকাটা সল্টলেকের এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে নিশীথের অফিসে স্থানান্তর করে বড়বাজারে যাওয়ার পথে। একই সূত্রে নিশীথকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। এই অর্থের উৎস এবং কোথায় যাচ্ছে সে বিষয়ে নিশীথের কাছে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য থাকতে পারে বলে মনে করছে কর্তৃপক্ষ।
গাড়ির চালক দুলাল মণ্ডলকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, টাকা আনা হয়েছে একই শপিংমল থেকে। একই ভিত্তিতে শপিংমল থেকে আসা মুকেশ সারস্বতকে গ্রেপ্তার করা হয়। সেই গাড়িতেই আসছিলেন মুকেশ। তার কাছ থেকে টাকাও উদ্ধার করা হয়েছে। দুলাল দেড় বছর ধরে ওই গাড়িটি চালাচ্ছেন। তার বাড়ি শান্তি কলোনী বেলগাছিয়ায়। বাবা রমেশ রিকশা চালান। নিশীথ অন্তত ২৫টি শেল কোম্পানির পরিচালক। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এটি একটি সাইন বোর্ড কোম্পানি। সেই শপিংমলের চতুর্থ তলায় নিশীথের অফিস। নিশীথের সঙ্গে আরও দুই ব্যবসায়ী নজরদারি করছেন। ওই দুই ব্যবসায়ীর একজনের অফিস নিশীথের অফিসের পাশেই। নিশীথসহ তিন ব্যবসায়ী অন্তত ৫০টি শেল কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত। এর মধ্যে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান নির্মাণ ব্যবসার সঙ্গেও জড়িত।
No comments:
Post a Comment