'এই ৭৫ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কোনও দলকে এভাবে টার্গেট করা হচ্ছে', এমনই মন্তব্য করলেন দিল্লীর মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। আবগারি কেলেঙ্কারিতে সিবিআই-এর সমন নিয়ে শনিবার তিনি সাংবাদিক সম্মেলন করেন। তিনি বলেন যে, 'সিবিআই তাকে রবিবার ডেকেছে এবং তিনি অবশ্যই যাবেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যা বলতে চান যে, কেজরিওয়াল দুর্নীতিগ্রস্ত, তো এই পৃথিবীতে এমন কেউ থাকতে পারে না যে দুর্নীতিতে আকণ্ঠ ডুবে নেই।' তিনি বলেন, '৭৫ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কোনও দলকে এভাবে টার্গেট করা হচ্ছে।'
মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেন, প্রথমে নম্বর তিনকে গ্রেফতার করা হয়, তারপর নম্বর দুইকে গ্রেফতার করা হল। এই সব করেছেন, কারণ প্রধানমন্ত্রী মোদী ইডি- সিবিআইয়ের মাধ্যমে তার ঘাড় ধরতে চান। এই সব এমনি এমনি হচ্ছে না। এর পেছনে একটা বড় কারণ আছে। আমরা দেশের মানুষকে একটা আশা দিয়েছি। এই মানুষগুলো সেই আশা চুরমার করে দিতে কেজরিওয়াল ও আম আদমি পার্টিকে চুরমার করে দিতে চায়। মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেন, ইনি গত ৩০বছর ধরে গুজরাটে সরকার চালাচ্ছেন, কিন্তু ছবি তোলার জন্যও একটি স্কুলের আয়োজন করতে পারেননি।
এই মুহুর্তে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে একটি স্কুলে ছবি তুলতে হয়েছিল, তাই তাঁবুতে সম্পূর্ণ ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এখানে, আমরা দিল্লীর সমস্ত স্কুলকে পুনরুজ্জীবিত করেছি। গোটা দেশ এটা দেখেছে এবং এখন আম আদমি পার্টি থেকে দেশ অনেক আশা করছে। মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল ইডি এবং সিবিআই-এর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, 'একের পর এক ব্যক্তিকে ধরে নিয়ে মারধরের পর চাপ দেওয়া হচ্ছে দিল্লীর রাজনীতিকের নাম নেওয়ার জন্য।'
তাঁর সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল আবগারি নীতিকে সমর্থন করেছেন। তিনি বলেন, 'ওই নীতি বাস্তবায়ন হলে দুর্নীতির অবসান হতো। পাঞ্জাবেও একই নীতি বাস্তবায়ন করেছেন তিনি। এ কারণে সেখানে রাজস্ব বেড়েছে ৫০ শতাংশ। অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেন যে, এনারা এটিকে দিল্লীতে প্রয়োগ করতে দেননি, তবে এটি পাঞ্জাবে প্রয়োগ করা হয়েছে কারণ সেখানে এনাদের প্রভাব চলে না।'
অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেন, 'আবগারি কেলেঙ্কারিতে তাঁকে ফাঁসানোর জন্য প্রতিদিন একজন না একজন ব্যক্তিকে ধরা হয়, মারধর করা হয় এবং বিবৃতিতে স্বাক্ষর করানো হয়।' এমন পাঁচ জনের নাম দিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, 'এমন কতজন লোক রয়েছে তা জানা যায়নি যাদের সাথে ইডি এবং সিবিআই এমন করেছে।' তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে প্রশ্ন করেন, এটা আসলে কী হচ্ছে? কেজরিওয়াল বলেন, 'এখন আমিও সিবিআই সমন পেয়েছি, আগামীকাল সিবিআই অফিসে যাব এবং আমার বক্তব্যও জানাব।'
অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেন, এক বছর ধরে তদন্ত চলছে। এখন তারা অভিযোগ করছে, ১০০ কোটি টাকা ঘুষ নেওয়া হয়েছে। এনারা চার শতাধিক অভিযান চালিয়েছেন। এমনকি মনীশ সিসোদিয়ার বাড়ির গদি পর্যন্ত ছিঁড়ে ফেলেছে, কিন্তু একটা গলদও পাওয়া যায়নি। এমতাবস্থায় প্রধানমন্ত্রী মোদীর বলা উচিৎ যে যদি দুর্নীতি হয়েছে, তাহলে এই ১০০ কোটি টাকা গেল কোথায়?' তিনি বলেন, এর আগে তিনি বলেছিলেন যে, এই টাকাগুলি গোয়ার নির্বাচনে ব্যবহার করা হয়েছিল। এর পর তারা এক এক ভেন্ডারকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। কিন্তু সেখানেও তাদের হাত শূন্য থেকে যায়।
No comments:
Post a Comment