জেসিবি দিয়ে নেভানো হচ্ছে আগুন! নষ্ট হচ্ছে একাধিক গাছ, ইসিএলের কাণ্ডে ক্ষোভ
নিজস্ব সংবাদদাতা, পশ্চিম বর্ধমান, ২২ এপ্রিল: আগুন নেভাতে অগ্নি নির্বাপন যন্ত্র বা দমকল নয়, জেসিবির সাহায্যে নেওয়া হচ্ছে কয়লা খনি কর্তৃপক্ষের তরফে। এমনই আশ্চর্য ঘটনা দেখা গেল পশ্চিম বর্ধমানের রানীগঞ্জের বাঁশড়ার ওসিপি সংলগ্ন এলাকায়। শনিবার ওসিপি সংলগ্ন এলাকায় বিস্তীর্ণ অংশে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। এরপর সেই আগুন জেসিবি দিয়ে নেভাতে তৎপর হয় ইসিএল কর্তৃপক্ষ।
ঘটনা প্রসঙ্গে জানা যায়, বাঁশড়া ওসিপি সংলগ্ন ও ইন্ডিয়ান অয়েলের পাইপলাইন যাওয়ার বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে, দীর্ঘক্ষণ ধরে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। সেই আগুন নেভাতে কোনও দমকল বা অগ্নিনির্বাপক দল নয়, পরিবর্তে সেখানে পৌঁছে যায় মাটি কাটার ও কয়লা খনির কাজে ব্যবহৃত হওয়া ১টি জেসিবি। আর এই যন্ত্র দিয়ে চলছে বিস্তীর্ণ এলাকার মধ্যে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা আগুন নেভানোর কাজ।
প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবী, এর দ্বারা যতটা না আগুন নেভানো যাচ্ছে, তার থেকে বেশি বৃক্ষ ছেদন হয়ে পড়ছে। তাদের দাবী, আগুনের থেকে বেশি গাছ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে এভাবে জেসিবি চালিয়ে আগুন নেভানোর ফলে। রানীগঞ্জের বাঁশড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ইসিএলের বাঁশড়া ওসিপি সংলগ্ন সোনাচোরা জঙ্গল এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা তথা প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবী, এদিন সকাল প্রায় ন'টা নাগাদ এই আগুন লাগলেও বেলা প্রায় বারোটা নাগাদ এই আগুন নেভাতে তৎপর হয় ইসিএল। তাও আবার সেই আগুন নেভাতে কোন দমকল বিভাগের সাহায্যের পরিবর্তে জেসিবি দিয়েই চলে দিকে দিকে গাছপালা মাড়িয়ে দিয়ে, অসংখ্য গাছ উপড়ে ফেলে, মাটি ঢাকা দিয়ে আগুন নেভানোর কাজ।
সংলগ্ন এলাকায় যেখানে এত সহজ দাহ্য ইন্ডিয়ান অয়েলের পাইপলাইন গিয়েছে, সেখানে এভাবে আগুন নেভানো কতটা নিরাপদ? তা নিয়েই উঠছে প্রশ্ন।
উল্লেখ্য, প্রবল গ্রীষ্মের দাবদাহে এই বাঁশড়া অঞ্চলে আগুন লাগার ঘটনা এই প্রথম নয়, এর আগেও বেশ কয়েক দফায় আগুন লাগার ঘটনায় সংলগ্ন এলাকার টাইগার হিলে থাকা আম বাগানের অসংখ্য আম গাছ নষ্ট হয়ে যায় আগুনে পুড়ে। এরপর ফের এই ধরণের আগুন লাগায় শনিবার অসংখ্য গাছ নষ্ট হতে দেখা গেল খনি অঞ্চলের এই এলাকায়। অনেকেই দাবী করেছেন, অবহেলার কারণেই এ ধরনের আগুন লাগার ঘটনা বারংবার ঘটছে, আর যার জেরে পুড়ে নষ্ট হচ্ছে হাজার হাজার গাছ।
এছাড়াও এতসব কাণ্ড ঘটে যাওয়ার পরও কিলোমিটার দূরে থাকা ফরেস্ট ডিপার্টমেন্ট বা ইন্ডিয়ান ওয়েলের তরফে কোনও আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে আসেননি বলেই অভিযোগ, যা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
No comments:
Post a Comment