শিশুদের স্নান করানোর সময় যে বিষয়গুলির প্রতি নজর দেওয়া উচিৎ,জেনে নিন সেগুলি কি কি - press card news

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Wednesday 12 April 2023

শিশুদের স্নান করানোর সময় যে বিষয়গুলির প্রতি নজর দেওয়া উচিৎ,জেনে নিন সেগুলি কি কি


শিশুকে বড় করা সহজ নয়, বিশেষ করে প্রথমবার মায়েদের জন্য। শিশুর জন্মের পর কয়েক মাস পর্যন্ত তাকে কীভাবে ঘুম পাড়াতে হয়, কীভাবে ধরতে হয় বা কীভাবে বুকের দুধ খাওয়ানো হয় সবকিছুই যেন ধাঁধার মতো।  যদিও ধীরে ধীরে অনুশীলনে আত্মবিশ্বাস বাড়তে থাকে এবং তারপরে সবকিছু সহজ মনে হয়। তবে প্রথম কয়েক দিন বেশ কঠিন। একইভাবে, শিশুকে স্নান  করানোও এই কঠিন কাজের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত। একটি ছোট শিশুকে হাতে ধরে সাবান লাগানো বা সাবানমাখা শিশুকে স্নান করানো খুব কঠিন মনে হয়। তবে একটু অনুশীলন এবং কিছু সাধারণ জিনিসের প্রতি নজর দিলে আপনি এই কাজটি সহজেই করতে সক্ষম হবেন।  আজ আমরা আপনাকে জানাতে যাচ্ছি শিশুকে স্নান করানোর সময় কী কী বিষয় মাথায় রাখা উচিৎ।

শিশুর স্নানের সময় -

দিনের কোন সময়ে শিশুকে স্নান  করাতে হবে,সেই ব্যাপারে বিশেষ যত্ন নিতে হবে। একটি শিশুকে স্নান করানো তার রুটিনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তাই শিশুকে স্নান করানোর জন্য এমন একটি সময় বেছে নিন যখন আপনি তাকে পুরো সময় দিতে পারবেন।  এর জন্য, আপনার সমস্ত কাজ শেষ করার সময়টি ঠিক করুন এবং এর সাথে এটাও দেখে নিন যে শিশুরও ঘুম শেষ হয়েছে কিনা এবং একই সাথে সে ক্ষুধার্তও কিনা। এতে করে শিশু স্নানের সময় আনন্দ পাবে। দিনের এমন একটি সময়ে শিশুকে স্নান করান যখন খুব গরম বা ঠান্ডা নয়।  শীতকালে তাকে রোদে স্নান করানো ভালো এবং গ্রীষ্মে তাকে প্রয়োজনে দু-তিনবার স্নান করানো যেতে পারে। যদি শিশুর ত্বক বেশি শুষ্ক বা সংবেদনশীল হয়, তবে একদিন পরপর স্নান করান বা স্পঞ্জ করুন।

প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র প্রস্তুত রাখুন -

শিশুকে স্নান করানো এবং কাপড় খোলার আগে, স্নানের জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত কিছু সংগ্রহ করুন। তার স্নানের জল আগে থেকেই রেডি করে রাখুন। এতে  জিনিসপত্র পেতে বারবার উঠতে হবে না, এবং আপনার বা শিশুর কোনও সমস্যা হবে না। বাচ্চা খুব ছোট হলে তাকে স্নান করাতে বাড়ির অন্য সদস্যের সাহায্য নিতে পারেন। কিছু জিনিস যা আপনাকে আগে থেকেই তৈরি  রাখতে হবে তা হল- শিশুর সাবান, শ্যাম্পু, বাথটাব, মগ, কাপড়, তোয়ালে, বেবি ক্রিম, পাউডার, চিরুনি, ন্যাপি ইত্যাদি।

জলের তাপমাত্রার দিকে মনোযোগ দিন -

শিশুর স্নানের জন্য জলের  তাপমাত্রা পরীক্ষা করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শিশুর স্নানের জল খুব গরম বা ঠাণ্ডা হওয়া উচিৎ নয় বরং উষ্ণ হওয়া উচিৎ। এটা বলা হয় যে একটি শিশুর স্নানের জন্য জলের তাপমাত্রা প্রায় ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস হওয়া উচিৎ। বাজারে জলের তাপমাত্রা মাপার জন্য বাথ থার্মোমিটার পাওয়া যায়, যাতে আপনি জলের তাপমাত্রা পরীক্ষা করতে পারেন। কিন্তু আপনার কাছে এই থার্মোমিটার না থাকলেও আপনি আপনার কনুই দিয়ে জলের তাপমাত্রা পরীক্ষা করতে পারেন।

স্নানের পদ্ধতি -

সাধারণত শিশুকে স্নান করানোর জন্য বাথটাব ব্যবহার করা হয়। আপনিও যদি বাথটাব ব্যবহার করেন তবে মনে রাখবেন স্নানের সময় বাচ্চাকে বাথটাবে রাখলে ভালো করে ধরে রাখুন কারণ এতে বাচ্চা পিছলে যাওয়ার ভয় থাকে। পাশাপাশি শিশুর মাথাকে রক্ষা করাও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আজও অনেক বাড়িতে বাচ্চাদের পায়ে বসিয়ে স্নান করানো হয়।  এতে শিশুকে এক হাত দিয়ে পায়ের ওপর বসিয়ে সাপোর্ট দেওয়া হয় এবং অন্য হাতে সাবান মাখিয়ে তার ওপর জল ঢেলে দেওয়া হয়। এইভাবে স্নান করানোর জন্য বিশেষ অভ্যাস লাগে, কারণ পায়ে বসালে শিশুকে স্নান করানো কঠিন হতে পারে। এক্ষেত্রে অন্য কারো সাহায্য নেওয়া প্রয়োজন।

সঠিক পণ্য নির্বাচন করুন -

শিশুর সাবান, শ্যাম্পু, পাউডার, ক্রিম বাছাই করার সময় খেয়াল রাখবেন তা যেন শিশুর ত্বকের জন্য রুক্ষ না হয়। শিশুর ত্বক খুবই কোমল, তাই তাদের ত্বকের জন্য ব্যবহৃত পণ্যগুলিও মৃদু হওয়া উচিৎ। শিশুর সাবান বা শ্যাম্পু এমন হওয়া উচিৎ যাতে এটি তার ত্বককে শুষ্ক না করে বরং পুষ্টি জোগায়। শিশুদের জন্য  এমন পণ্য ব্যবহার করা উচিৎ যা তাদের জন্যই বিশেষভাবে তৈরি।  বাচ্চাদের জিনিসে কিছু বিশেষ রাসায়নিক, যেমন- প্যারাবেন, ডাই, সালফেট ইত্যাদির দিকে খেয়াল রাখুন। কারণ এই রাসায়নিকগুলি শিশুর ত্বকের ক্ষতি করতে পারে। তাই সব সময় এই সমস্ত রাসায়নিক মুক্ত পণ্য ব্যবহার করার চেষ্টা করুন।

মালিশ করুন -

স্নানের আগে শিশুকে মালিশ করা উচিৎ। মালিশ শুধুমাত্র শিশুর মাংসপেশিকে শক্তিশালীই করে না, শিশুর বিকাশেও সাহায্য করে। মালিশ করার আধা ঘন্টা পরে শিশুদের স্নান করালে তাদের ভালো ঘুম হয় এবং শিশু প্রফুল্ল এবং সক্রিয় থাকে। এর সাথে শিশুর শরীর প্রয়োজনীয় পুষ্টি পায় এবং তার শরীরও ব্যায়াম পায়। এই সব কিছুই একটি শিশুর জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ।  স্নানের পর শিশুর গায়ে ময়েশ্চারাইজার লাগান যাতে তার ত্বক পুরোপুরি পুষ্ট হয়।

শিশুকে কখনোই একা ছেড়ে যাবেন না -

শিশুকে স্নান করানোর সময় এটাও মাথায় রাখতে হবে যে, স্নানের সময় শিশুকে কখনও একা ফেলে রাখবেন না। তাকে একা রেখে যাওয়াটাও কোনও সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। যদি কোনও কারণে চলে যেতে হয়, তাহলে অন্য কাউকে শিশুর কাছে রেখে দিন বা শিশুটিকে জল থেকে উঠিয়ে  একটি কাপড়ে মুড়িয়ে আপনার সাথে নিয়ে যান।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad