হনুমান জয়ন্তীতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর ঘেরাটোপ, রাজনৈতিক মন্তব্যে নিষেধাজ্ঞা: কলকাতা হাইকোর্ট - press card news

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Wednesday 5 April 2023

হনুমান জয়ন্তীতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর ঘেরাটোপ, রাজনৈতিক মন্তব্যে নিষেধাজ্ঞা: কলকাতা হাইকোর্ট


হনুমান জয়ন্তীর দিন অর্থাৎ ৬ এপ্রিল নিয়ে আগেই সতর্ক করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবারে হনুমান জয়ন্তী ঘিরে অশান্তির আশঙ্কার মাঝেই কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়নের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। রাজ্যের যেসব এলাকায় হনুমান জয়ন্তীকে কেন্দ্র করে অশান্তির আশঙ্কা রয়েছে, সেখানে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতে হবে। রাজ্যকে দ্রুত কেন্দ্রীয় বাহিনীর আবেদন করতে বুধবার নির্দেশ দিয়েছে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে। 


রাজ্যে অশান্তির ঘটনা নিয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী একটি জনস্বার্থ মামলা করেছিলেন, কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়ন ও এনআইএ তদন্ত চেয়ে। সেই মামলার সঙ্গেই এই সংক্রান্ত আরও কয়েকটি মামলা যুক্ত হয়। তার শুনানিতেই রিষড়ায় শান্তি ফেরাতে রাজ্য সরকারকে প্রয়োজনে আধা সামরিক বাহিনীর সাহায্য নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। এক্ষেত্রে কি কি পদক্ষেপ করা যায়, এক ঘন্টার মধ্যে তা অ্যাডভোকেট জেনারেলকে রাজ্যের কাছে জানাতেও বলেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। এরপর এদিন দুপুর ১২ টায় ফের শুনানি হলে হাইকোর্টে নির্দেশ দেয়। 

 

বৃহস্পতিবার ৬ এপ্রিল হনুমান জয়ন্তী। হনুমান পুজো করার জন্য আবেদন জমা পড়েছে প্রায় দুই হাজার। কোথায় যেন অশান্তি না ছড়ায় সেটা নিশ্চিত করতে হবে। 


প্রধান বিচারপতি ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, হনুমান জয়ন্তী উপলক্ষে কোথাও অশান্তির সম্ভাবনা থাকলে আগে থেকে প্রস্তুতি নিতে হবে রাজ্য সরকারকে। প্রয়োজনে সেখানে কেন্দ্রীয় বাহিনীর মোতায়েন করতে হবে। রাজ্য সরকার কেন্দ্রীয় বাহিনী চাইলে কেন্দ্রকে সঙ্গে সঙ্গে সাহায্য করতে হবে। মানুষের মনে আস্থা ফেরাতে অশান্তি কবলিত এলাকায় পুলিশ ও আধা সামরিক বাহিনীর রুট মার্চ অত্যন্ত দরকারি, এমনই মন্তব্য আদালতের। 


আদালত জানায়, রাজনৈতিক নেতা সহ অন্য কোনও মানুষ হনুমান জয়ন্তী নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে পারবেন না। শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় যেকোনও মিছিল যে কোন জায়গায় থামিয়ে দেওয়ার অধিকার পুলিশের রয়েছে। পথে কোথাও অশান্তির সম্ভাবনা থাকলে আগে থেকে রাস্তার পাশে ব্যারিকেড দিতে হবে পুলিশকে, বসাতে হবে সিসিটিভি ক্যামেরা। 


এছাড়াও আদালতের কথায়, কেন্দ্রের কাছ থেকে বাহিনীর সাহায্য চাওয়ার অর্থ এই নয় যে, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে। রাজ্যকে শুধু সাহায্য করবে কেন্দ্রীয় বাহিনী। সিসিটিভি ক্যামেরা কোথায় লাগাতে হবে? কোথায় কোথায় ড্রোন উড়াতে হবে, মিছিলে কত সংখ্যক মানুষ থাকবে এবং তারা কতদূর যাবে, তা রাজ্য সরকার ঠিক করবে। 


উল্লেখ্য, রাম নবমীর মিছিলকে কেন্দ্র করে হাওড়ার শিবপুর, ডালখোলায় অশান্তি ছড়িয়ে পড়ে। শিবপুরের পরিস্থিতি শান্ত হতে না হতেই রবিবার হুগলির রিষড়ায় রাম নবমীর মিছিলকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায়। বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষের নেতৃত্বে রাম নবমীর মিছিল বের হয়, সেই মিছিলেই হামলার অভিযোগ ওঠে; পাথর বৃষ্টি, আগুন বাদ যায়নি কিছুই। এমনকি পরের দিনও‌ অশান্ত হয়ে ওঠে এলাকা। 


এদিন আদালতে রাজ্য সরকারের তরফে বলা হয় মিছিল যদি প্রশাসনের কোন শর্ত লঙ্ঘন করে তাহলে তার দায় সেই প্রতিষ্ঠান এবং তার আধিকারিকদের ওপর বর্তাবে। কতজন শোভাযাত্রায় থাকবেন, তা আগে থেকেই পুলিশকে জানাতে হবে। নির্দিষ্ট সময়ে শোভাযাত্রা শুরু ও শেষ করতে হবে। রাজ্য সরকারের তরফে আরো বলা হয় ২০০০ আবেদন জমা পড়েছে পুরো রূপে ব্যারিকেট করা এই মুহূর্তে সম্ভব নয় তবে স্পর্শকাতর এলাকায় ব্যারিকেড করা হবে; দূরত্ব ঠিক করবে পুলিশ, বসানো হবে সিসিটিভি। 


এসব শুনে বিচারপতি বলেন, 'যে ধরনের সমস্যার কথা বলা হচ্ছে তাতে মনে হচ্ছে রাজ্য পুলিশ একা হাতে সমাধান করতে পারবে না। প্রয়োজনে আধা সামরিক বাহিনীর সাহায্য নেওয়া যেতে পারে।'

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad