বিয়ে জীবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ হলেও অনেকেই আছেন, এর থেকে দূরত্ব বজায় রেখে চলেন। আমাদের আশেপাশেও এমন অনেক মানুষের দেখা মেলে, যিনি গাঁটছড়া বাঁধতে নারাজ। এর জন্য বাবা-মায়ের চিন্তা তো হয়-ই, তবে সব থেকে বেশি ফোসকা যেন পড়ে প্রতিবেশীদের গায়ে। তখন অবশ্য হাজার যুক্তি দেখাতে হয়। এই চিত্র আমাদের দেশে একেবারেই সাধারণ। কিন্তু বিশ্বে এমন দেশও আছে, যেখানে বিয়ে না করলে পেতে হয় শাস্তি। এমনই একটি দেশ হল ডেনমার্ক।
কোনও পুরুষ যদি ২৫ পেরিয়েও অবিবাহিত থাকেন, তাহলে তাকে পেতে হয় এক ধরণের শাস্তি, আর তিনি কোনও ভাবেই তা এড়িয়ে যেতে পারেন না। ঐ দেশে অবিবাহিত পুরুষের ২৫ তম জন্মদিনে তাঁর শরীরে মাখানো হয় দারুচিনির গুঁড়ো। এখানেই শেষ নয়, এরপর তার গায়ে ছেটানো হয় জল, যাতে দারুচিনির গুঁড়ো ভালোভাবে শরীরে লেগে যায়। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয়, এটা করতে কারও অনুমতিরও প্রয়োজন হয় না। এই রীতির মাধ্যমে বরং তাকে মনে করে দেওয়া হয়, বাছাধন তোমার বিয়ের বয়স হয়েছে। শত শত বছর ধরে এই প্রথা চলে আসছে ডেনমার্কে।
তবে এই অদ্ভুত প্রথার নেপথ্যে রয়েছে কষ্টের এক কাহিনী। কয়েকশো বছর আগে এই প্রথার প্রচলন; সেই সময় মসলা বিক্রির জন্য বিভিন্ন স্থানে ঘুরতেন ব্যবসায়ীরা। এভাবেই ঘুরে ঘুরে সংসার সুখ থেকে বঞ্চিত হতেন অনেকেই, থেকে যেতেন অবিবাহিত। ব্যবসার কারণে যাযাবরের মত দিনপাত করতে হতো বলে, জীবন সঙ্গী জুটত না অনেকেরই। এমন অবিবাহিত সেলসম্যানদের বলা হত পেপার ডুডস ও এমন অবিবাহিত মহিলাদের বলা হত পেপার মেইডেন এবং তাদের পথ যেন ডেনমার্কের তরুণ প্রজন্ম অনুসরণ না করে, তাই আজও এই প্রথা মানা হয়।
অবিবাহিতদের বয়স ২৫-৩০ বছরের মধ্যে হলে তাদের গায়ে দারুচিনির গুঁড়ো মাখানো হয়, কিন্তু বয়স ৩০-এর কোটা পেরোলেই দারুচিনির সঙ্গে লঙ্কার গুঁড়োও মাখানো হয়। কখনও আবার এর সঙ্গে যুক্ত হয় ডিমও।
উল্লেখ্য, ২৫ বছর আগে এই শাস্তি দেওয়ার যে রীতি ছিল, আজ সেটা কেবল মজা করেই পালন করা হয়। বন্ধুরাই মূলত বন্ধুদের ২৫ তম জন্মদিনে এই কাজটি করে থাকেন। পাশাপাশি, এই প্রথা ডেনমার্কে চালু থাকলেও বর্তমানে সেখানকার পুরুষদের বিয়ের গড় বয়স ৩৪ এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে ৩২ বছর।
No comments:
Post a Comment