কালবৈশাখীর সম্ভাবনা নেই ন্যূনত, ধাপে ধাপে চড়তে থাকবে দহনের পারদ। আগামী ৭২ ঘন্টায় আরও ২ থেকে ৩ ডিগ্রি বাড়বে রাজ্যের তাপমাত্রা। পশ্চিমাঞ্চলের জেলায় এই বৃদ্ধির হার আরও সামান্য বেশি থাকার প্রবণতা। এমনই পূর্বাভাস দিল আবহাওয়া অফিস।
দেবব্রত ব্যানার্জী; আবহাওয়া বিজ্ঞানী, আলিপুর আবহাওয়া দফতর, জানান ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত কলকাতার তাপমাত্রা বাড়তে বাড়তে ৩৯ ডিগ্রির কোঠায় পৌঁছাবে। ১৪ তারিখের পর তা ৪০ ডিগ্রি ছুঁয়ে ফেলতে বা অতিক্রম করে যেতে পারে। একদিন আগেই বাঁকুড়ার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৯ ডিগ্রি ছিল, যা চৈত্রে রেকর্ড। শুধুমাত্র দার্জিলিং ছিটেফোঁটা বৃষ্টি পেতে পারে। বাকি রাজ্যের সব জেলাতেই শুষ্ক গরম। দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় লু-র তপ্ত বাতাস বইবার মতো পরিস্থিতি।
এপ্রিলের শুরুতেই বঙ্গে তাপদাহ শুরু হয়েছে। আলিপুর আবহাওয়া দফতর আজ, শনিবার অর্থাৎ ৮ এপ্রিল থেকে পারদ বাড়ার পূর্বাভাস দিয়েছে। গত দুদিনে দমদম বা হাওড়ার তাপমাত্রা প্রায় ৩৬.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, শনিবারই তা ৩৮-এ পৌঁছবে। পাশাপাশি রাজ্যের একাধিক জেলার তাপমাত্রা ৪০ ছুঁইছুঁই।
আবহাওয়া অফিস বলছে, শনি ও রবিবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ১০ এপ্রিল ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ১১ এপ্রিল ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ১২ এপ্রিল ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং ১৩ এপ্রিল ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস হতে পারে। অন্যদিকে, পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোতে তাপমাত্রা আরও বাড়বে। বাঁকুড়ার তাপমাত্রা ৪১ থেকে ৪২ ডিগ্রি ছুঁতে পারে।
আবহাওয়াবিদদের মতে, ৪০ ডিগ্রি তাপমাত্রাও অসামান্য নয়। ২০১৬ সাল থেকে, এপ্রিল এত গরম এর আগে কখনও অনুভব করেনি। এই বছরের মার্চ ছিল গত ২৩ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ঠাণ্ডা এবং এপ্রিল ঠিক বিপরীত। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, এর কারণ হিসেবে তৈরি হওয়া পশ্চিমা ঝড়গুলো খুব বেশি শক্তিশালী নয়। জলীয় বাষ্পও কমেছে। সেখানে উপস্থিত জলীয় বাষ্পও উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে আসা উষ্ণ বায়ু দ্বারা শোষিত হয়েছে। যে কারণে পরিস্থিতি এমন যে কলকাতা সহ রাজ্যের বিভিন্ন জেলা আগুনে জ্বলছে। বৃষ্টি হচ্ছে না এবং সকাল থেকেই রোদ উজ্জ্বল আকাশ।
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অনুমান, কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গে তাপমাত্রা আরও বাড়বে। আগামী সপ্তাহে কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছুঁতে পারে। সেই সঙ্গে পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোর কিছু জায়গায় তাপপ্রবাহের সম্ভাবনাও রয়েছে। এপ্রিলের শুরু থেকেই কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে চাতক পাখির মতো বৃষ্টির অপেক্ষায় রাজ্যবাসী। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, আপাতত রাজ্যে বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। বাংলা নববর্ষ অর্থাৎ পয়লা বৈশাখ পর্যন্ত এমন অস্থিরতা অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
No comments:
Post a Comment