'ম্যাকবেথের মত লাগছে', রাজ্যপালকে নিশানা ব্রাত্যর
নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতা, ০৯ মে: রাজভবন-নবান্ন সম্পর্কের টানাপোড়েনে এবারে শেক্সপিয়ার সাহিত্যের পরশ। সোমবার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের মন্তব্যে উঠে এসেছিল হ্যামলেটের কথা। আর মঙ্গলবার শেক্সপিয়ারের আরও দুই চরিত্র ম্যাকবেথ ও জুলিয়াস সিজারের সঙ্গে রাজ্যপালের তুলনা টানলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু।
উল্লেখ্য, সোমবার জোড়াসাঁকোতে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে রাজ্যপাল সুফি আনন্দবাস বলেছিলেন, রাজ্যে সাংবিধানিক সংকট হলে হ্যামলেটের মত বসে থাকবেন না'। মঙ্গলবার রবীন্দ্রজয়ন্তী উপলক্ষে জোড়াসাঁকোতে এসে তারই পাল্টা দিলেন ব্রাত্য বসু।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, "ভুলে গেলে চলবে না হ্যামলেট কিন্তু শেষ পর্যন্ত নিষ্ক্রিয় থাকেনি, সক্রিয় হয়েছিল এবং লেয়ারথিসের হাতে কি দশা হয়েছিল সেটাও আমরা জানি। উচ্চশিক্ষা দফতরকে বাইপাস করে সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে কুক্ষিগত করার উনার যে মানসিকতা দেখা যাচ্ছে যেটা আমাদের মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী কালকে উল্লেখ করেছেন, এটা ঠিক হ্যামলেটিও লাগছে না, ম্যাকবেথের মত লাগছে, মানে একটা তীব্র উচ্চাশা কাজ করছে।"
"উনি যেহারে বিজেপির মার্কাস-ব্রুটাস দ্বারা পরিবৃত, অবস্থানে জুলিয়াস সিজারের মত দাঁড়ায়, সেটাই ভাবছি। কিন্তু আজ তো রবীন্দ্রনাথের দিন, ফলে আমি রাজ্যপালকে বলব রবীন্দ্রনাথের কথা, পুরানো সেই দিনের কথা ভুলবি কি রে হায় ও সে", সংযোজন ব্রাত্যর।
ব্রাত্য আরও বলেন, "বুঝতে পারছি না কেন উনি এমন করছেন! আমরা উচ্চশিক্ষা দফতর থেকে ওনাকে বারবার বার্তা দিয়েছি, যা করব রাজ্যপালের সঙ্গে আলোচনা করে। রাজভবনকে বাইপাস করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে কখনও কোন তৎপরতা দেখায়নি। সেখানে উনি কেন এমন আচরণ করছেন! একটা নির্বাচিত সরকার, একটা নির্বাচিত শিক্ষা দফতর এবং যেখানে আইনে পরিষ্কার করে বলা আছে যে, রাজ্যপাল যা সিদ্ধান্তই নিন না কেন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্ষেত্রে, সেখানে উচ্চশিক্ষা দফতরের সঙ্গে আলোচনা বাধ্যতামূলক। সেখানে ওনার দিক থেকে এই আচরণ প্রত্যাশিত নয়।"
খোঁচা দিয়ে তিনি বলেন, "যে সম্প্রীতির বাতাবরণ দিয়ে রাজভবনের সঙ্গে উচ্চ শিক্ষা দফতরের সম্পর্ক শুরু হয়েছিল, উনি সেটা বিস্মৃত হতে পারেন, কিন্তু আমরা যেহেতু নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি আমাদের ওই বিস্ফোরণের দায় আমরা নিতে পারি না।" রাজ্যপালকে নিশানা করতে গিয়ে কবি সুধীন্দ্রনাথ দত্তের কবিতার লাইন তুলে ধরেন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, "অখিল ক্ষুদায়ে শেষে কি নিজেকে খাবে? ফাটা ডিমে তা দিয়ে কি আর ফল পাবে? মনস্তাপেও লাগবে না ওতে জোড়া!"
No comments:
Post a Comment