তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিরাই ক্ষতি করছে বেশি, দিতে হচ্ছে মোটা অংকের টাকা! ক্ষোভ উগড়ে দিলেন শ্রমিক নেতারা
নিজস্ব সংবাদদাতা, উত্তর ২৪ পরগনা, ৩১ মে: শ্রমিক আন্দোলনে জনপ্রতিনিধিদের হস্তক্ষেপের অভিযোগ। তৃণমূলের অন্দরে এবার তৃণমূলের শাখা সংগঠনের বিষেদাগার। নিজেদের স্বার্থে জনপ্রতিনিধিরা বারবার থামিয়ে দেয় শ্রমিক আন্দোলন। এমনই অভিযোগ তুললেন বারাসতের সংসদীয় জেলার আইএনটিটিইউসি-র সম্মেলনের শ্রমিক প্রতিনিধিরা।
বুধবার বিধাননগরের আইএনটিটিইউসি সাধারণ সম্পাদক শেখ আনোয়ার হোসেন মঞ্চে ভাষণ দিতে গিয়ে বলেন, 'বিভিন্ন সময় কাউন্সিলর থেকে বিধায়ক, সাংসদ প্রত্যেকেই তাদের আন্দোলনকে থামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। ভোটের রাজনীতি করেন। তাতে ক্ষুন্ন হচ্ছে শ্রমিক স্বার্থ। আনোয়ারের বক্তব্যকে সমর্থন করেন এবং তার সুরেই সুর মেলান দক্ষিণ ২৪ পরগনার আইএনটিটিইউসি-র সভাপতি শক্তিপদ মণ্ডলও। তিনি এও অভিযোগ করেন, অটো বেরোনো থেকে শুরু করে চালানো সর্বত্র টাকা দিয়ে তারপর চালাতে হয়।
শ্রমিকদের আন্দোলন, শ্রমিকদের স্বার্থ যদি বারবার ক্ষুন্ন করে দেয় জনপ্রতিনিধিরা, তাহলে শ্রমিক স্বার্থ রক্ষা হবে কি করে এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তবে সকল সমস্যা মেটানোর আশ্বাস দিয়েছেন আইএনটিটিইউসি-র রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে খাদ্য মন্ত্রী রথীন ঘোষ প্রত্যেকেই।
এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সম্পাদক শেখ আনোয়ার হোসেন বলেন, "আমরা তৃণমূল শ্রমিক সংগঠন করি। সংগঠনের কাজ করতে গিয়ে অনেক সময় কাউন্সিলর, বিধায়ক বা সাংসদ আমাদের আন্দোলনে হস্তক্ষেপ করেন। যার ফলে আমরা দেখছি বা অনুভব করছি আমাদের শ্রমিক আন্দোলন বাধাপ্রাপ্ত হয়। সেটাই আজ আমরা আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে তুলে ধরেছি।"
তিনি আরও বলেন, "আমরা চাইছি শ্রমিক আন্দোলন শ্রমিকদের স্বার্থেই হবে বা শ্রমিক নেতৃত্বই করবেন। তবে আন্দোলনগত কোনও ভুল থাকলে বিধায়ক আমাদের ডেকে বলতে বা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাতে পারেন।"
সভাপতি শক্তিপদ মণ্ডল বলেন, 'পুলিশ তো আমাদের কেনা দাস নয়।' তিনি অভিযোগ করে বলেন, 'পরিবহণ কর্মীদের পুলিশের কিছু অংশ মিথ্যা মামলা দিয়ে ঝামেলায় ফেলেন। এটা আমরা আমাদের ওপর মহলে জানাচ্ছি। দল চেষ্টা করছে।'
জনপ্রতিনিধি বা নেতাদের হস্তক্ষেপ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "শুধু এই জেলা নয়, রাজ্য জুড়ে এই সমস্য।" তিনি আরও বলেন, "নিচু তলার কর্মীদের কাছে আমাদের বার্তা আমরা এখনও সঠিকভাবে পৌঁছে দিতে পারিনি। প্রশাসন এবং মানুষের মধ্যে এখনও যে অন্তর আছে, তা পুরোপুরি সমাধান করা যায়নি।"
অপরদিকে এই অভিযোগ প্রসঙ্গে খাদ্য মন্ত্রী রথীন ঘোষ বলেন, "আইএনটিটিইউসির এখানে যে আমাদের জেলা সভাপতি আছেন, তিনি এই বিষয়ে সুবিধা-অসুবিধার কথা উপলব্ধি করেছেন, শুনেছেন এবং এর সুবিচার করে ব্যবস্থা করবেন। কিন্তু যাই হোক না কেন দিনের শেষে আমরা সবাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৈনিক। সৈনিকরা হয়তো একসঙ্গে চলতে গিয়ে অনেক জায়গায় দ্বিধাগ্রস্ত বা বিভাজন থাকে। কিন্তু আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে আলোচনা করে সব ঠিক করে নেব।"
ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "শুধু নেতা নয়, কর্মীরা কী বলছেন সেটা শোনাও জরুরি। আমরা সবটাই নোট করেছি, কথা বলে সমাধান সূত্রে পৌঁছাব।"
No comments:
Post a Comment