জেনে নিন মহিলাদের হিস্টিরিয়া সম্পর্কে - press card news

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Wednesday 31 May 2023

জেনে নিন মহিলাদের হিস্টিরিয়া সম্পর্কে


জেনে নিন মহিলাদের হিস্টিরিয়া সম্পর্কে

প্রেসকার্ড নিউজ, হেল্থ ডেস্ক, ৩১ মে: হিস্টিরিয়া বা কনভার্সন ডিসঅর্ডার হল এক ধরনের মানসিক ব্যাধি, যার মধ্যে কাঁপুনি, মাথা ঘোরা, শ্বাসকষ্ট বা জিভ জড়িয়ে যাওয়ার মতো উপসর্গ থাকতে পারে। এই রোগটি এক ধরণের সাইকোনিরোসিস এবং এটি কোন জৈব বা কাঠামোগত প্যাথলজির উপর ভিত্তি করে হয় না। বলা হয় যে,হিস্টিরিয়া একচেটিয়াভাবে মহিলাদের একটি ব্যাধি, যার মানে হল হিস্টিরিয়া সমস্যাটি বেশিরভাগ মহিলা এবং মেয়েদের মধ্যেই দেখা যায়। এতে ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা অজ্ঞান হয়ে থাকা ও ঘুমের সমস্যা দেখা যায়।

হিস্টিরিয়া একটি স্নায়বিক অবস্থা, যার কারণে মানসিক এবং স্নায়বিক ব্যাধির সমস্যা দেখা দিতে পারে। এতে মহিলারা নিজেদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। জার্নাল অফ ক্লিনিক্যাল প্র্যাকটিস অ্যান্ড এপিডেমিওলজি অনুসারে, প্রাচীনকালে হিস্টিরিয়ার কোনও প্রতিকার ছিল না। বিংশ শতক পর্যন্ত, এটি আমাদের দেশে ঝাড়-ফুঁক, যাদুটোনা ও টোটকার মাধ্যমে চিকিৎসা করা হত। বহুদিন পর জানা যায় এই রোগ শুধু মহিলাদের নয় পুরুষদেরও হয়।  ভিক্টোরিয়ান সময়ে, হিস্টিরিয়া ছিলো একটি সাধারণ চিকিৎসা নির্ণয়, বিশেষ করে মহিলাদের জন্য। এটি ১৯৮০ সাল পর্যন্ত "ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড স্ট্যাটিস্টিক্যাল ম্যানুয়াল অফ মেন্টাল ডিসঅর্ডার" (DSM) থেকে সরানো হয়নি।

হিস্টিরিয়া কি?

মনস্থলি সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা-পরিচালক এবং সিনিয়র সাইকিয়াট্রিস্ট ডক্টর জ্যোতি কাপুর, হিস্টিরিয়া সম্পর্কে ব্যাখ্যা করেছেন যে, "হিস্টিরিয়া একটি মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা। এটি একটি অত্যন্ত গুরুতর সমস্যা যাতে হিস্টিরিয়ায় আক্রান্ত একজন ব্যক্তি একটি অদ্ভুত বিভ্রম পান এবং শ্বাসরোধের অনুভূতির কারণে  বারবার অজ্ঞান হয়ে যেতে পারেন। এই রোগটি পুরুষদের মধ্যেও হয়ে থাকে তবে আলাদা উপসর্গের কারণে এটি মহিলাদের হিস্টিরিয়ার সাথে যুক্ত করা হয় না। মহিলাদের মধ্যে আক্রমণ হলে তাদের হাত-পা শক্ত হয়ে যায়,মুখের আকৃতি পরিবর্তন হয়ে যায়,যার কারণে সে চিৎকার করতে শুরু করে এবং নিজের মনে বিড়বিড় করতে থাকে।

হোলিস্টিক কনসেপ্ট কী বলে?

The Holistic Concepts অনুসারে, হিস্টিরিয়া রোগীদের সম্পূর্ণ পুষ্টিকর খাদ্য প্রয়োজন। ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। আঙুর, কমলা, আনারস ও পেঁপে জাতীয় ফল বেশি করে খেতে হবে। যদি বারবার হিস্টিরিয়ার আক্রমণ হতে থাকে, তাহলে এক মাস দুগ্ধজাত খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। হিস্টিরিয়া রোগীরা নিয়মিত ১ চামচ মধু ও ১ গ্রাম হিং খেলে উপকার পাবেন।  এর পাশাপাশি সঠিক ঘুম এবং নিয়মিত ব্যায়ামও হিস্টিরিয়া রোগীদের জন্য উপকারী।

হিস্টিরিয়ার ইতিহাস -

১৯০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত, হিস্টিরিয়া এক ধরণের মানসিক ব্যাধি হিসাবে বিবেচিত হত। এটি ঘটেছিল যখন এই রোগটিকে প্রথম মিশরীয়রা "স্পন্টেনিয়াস ইউটেরাস মুভমেন্ট" বা "স্বতঃস্ফূর্ত জরায়ু আন্দোলন" হিসাবে বর্ণনা করেছিল।  ১৬০০-এর দশকে অ্যানাটোমিস্ট টমাস ওয়াইলস এই ধারণাটি উড়িয়ে দিয়েছিলেন যে হিস্টিরিয়া মহিলাদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। তিনি নিশ্চিত করেছেন যে হিস্টিরিয়া রোগের উৎপত্তি জরায়ুতে নয়, মস্তিষ্কে। এর থেকেই জানা গেল,  হিস্টিরিয়া পুরুষদেরও হতে পারে।

হিস্টিরিয়ার লক্ষণ -

ক্লান্ত বোধ করা।

মাথা ঘোরা এবং অজ্ঞান হয়ে যাওয়া।

স্ট্রেস।

মাথাব্যথা।

শ্বাসকষ্ট।

শরীরে ক্র্যাম্প।

হিস্টিরিয়ার কারণ -

মানসিক ব্যাধি।

বিষণ্নতা।

ফোবিয়া।

উদ্বেগ বা মানসিক চাপ।

স্নায়বিক চাপ।

অধিক আলস্য।

হিস্টিরিয়া নিরাময়ে এই ঘরোয়া প্রতিকারগুলি অনুসরণ করতে পারেন -

প্রতিদিন ১ চা চামচ মধু খান।

প্রতিদিন জাম খান।

কলাগাছের কান্ডের টাটকা রস পান করুন।

গরম জলে ভাজা হিং-জিরা দিয়ে  পান করুন।

বি.দ্র: এখানে দেওয়া তথ্য সাধারণ জ্ঞান ও ঘরোয়া প্রতিকার হিসেবে দেওয়া। প্রেসকার্ড নিউজ এটি নিশ্চিত করে না। কোনও নতুন কিছু শুরুর আগে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞর পরামর্শ অবশ্যই নিন।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad