আম্ফানের চেয়েও শক্তিশালী মোচা! সুন্দরবন এলাকায় বিশেষ সতর্কতা
নিজস্ব প্রতিবেদন, ১৪ মে, কলকাতা : ঘূর্ণিঝড় মোচা 'আম্ফান'-এর চেয়েও শক্তিশালী ঝড়। আবহাওয়া অধিদফতরের সর্বশেষ আপডেট অনুযায়ী, মোচা আজ বিকেলে ঘন্টায় ২১০ কিলোমিটার বেগে মায়ানমারের উপকূলে আছড়ে পড়বে। এ কারণে মায়ানমার ও বাংলাদেশে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। বাংলাদেশ সংলগ্ন সুন্দরবন এলাকায় ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কায় বিশেষ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সুন্দরবনের স্থানীয় বাসিন্দাদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
২০২০ সালে আম্ফানের ক্ষেত্রে যেমনটি হয়েছিল। আম্ফান বাংলায় আঘাত হানার আগে সমুদ্রের ওপর দিয়ে সুপার সাইক্লোনে পরিণত হয়েছিল। এটি ১৯৯৯ সালের পর বঙ্গোপসাগরে প্রথম সুপার সাইক্লোন। দীর্ঘদিন ধরে ঝড়ের গতিবেগ ঘণ্টায় ২৪০ কিলোমিটার।
তবে, পরে আম্ফান ১৮৫ কিলোমিটার বেগে বকখালীতে ল্যান্ডফল করে। বাংলায় সর্বনাশকারী ঘূর্ণিঝড়টি সাগরেও দ্রুত শক্তি অর্জন করেছে। ২০১৭ সালে আরব সাগরে ঘূর্ণিঝড় আক্ষি, ২০০৮ সালে মায়ানমারে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় নার্গিসও চোখের পলকে শক্তি অর্জন করেছিল। ২৪ ঘণ্টায় ৪ বার শক্তিশালী হওয়া নার্গিসের প্রভাবে মায়ানমারে প্রাণ হারিয়েছে ১ লাখ ৩৮ হাজার মানুষ। এবারের ঘূর্ণিঝড় মোচা আরও শক্তিশালী।
ঘূর্ণিঝড় আম্ফান ও ইয়াস সুন্দরবনের বিশাল অংশে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করেছে। এ কারণে বিশেষ সতর্কতা জারি করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সুন্দরবন এলাকায় মাইকিং করা হচ্ছে।
ঝড়ে এসব জাহাজের ক্ষয়ক্ষতি ঠেকাতে ইতিমধ্যে মাতলা নদীর তীরে নোঙর করে নৌকাগুলো শক্ত করে বেঁধে রাখা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় মোচা রবিবার বিকেলে স্থলভাগে আছড়ে পড়তে পারে। তবে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনায় বড় কোনও প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা নেই। স্থানীয় প্রশাসনও জরুরি প্রস্তুতি নিচ্ছে। ট্রলার নিয়ে ফিরছেন জেলেরা।
মোচার প্রভাবে দক্ষিণবঙ্গের উপকূলীয় এলাকায় সতর্ক করা হয়েছে। সোমবার পর্যন্ত জেলেদের সমুদ্রে যেতে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। দিঘা সহ অন্যান্য এলাকায় সকাল থেকেই সাগর উত্তাল থাকায় লোকজনকে সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।
রবিবার ও সোমবার দিঘা সহ সমুদ্রে স্নান নিষিদ্ধ
রবিবার ও সোমবার সমুদ্রে স্নান নিষিদ্ধ। ঘূর্ণিঝড় মোচার প্রভাবে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে। মোচার প্রভাবে উপকূল বরাবর বাতাসের গতিবেগও বাড়তে পারে। তাই দুই দিন সমুদ্র থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
তবে, স্কুলগুলিতে গ্রীষ্মের ছুটিতে প্রচুর পর্যটক দীঘার হোটেলগুলিতে যান। এরপর সপ্তাহান্তে ভিড় আরও বাড়ে। শনি-রবিবার ছুটি থাকায় আগেই দিঘায় পৌঁছেছিলেন বহু মানুষ। এখন প্রশাসনের এ ধরনের নিষেধাজ্ঞায় তারা কিছুটা হতাশ।
তাদের মধ্যে কয়েকজন পর্যটক বলছেন, ঘূর্ণিঝড় এড়াতে এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা যেতে পারে না জেনেই তারা এসেছেন। এমন পরিস্থিতিতে জিনিসপত্র গুছিয়ে বাড়ি ফিরছেন অনেকে।
No comments:
Post a Comment