খোলা বাজারে বিকোচ্ছে টাকা! চাইলেই কিনতে পারেন যতখুশি - press card news

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Wednesday, 26 July 2023

খোলা বাজারে বিকোচ্ছে টাকা! চাইলেই কিনতে পারেন যতখুশি


খোলা বাজারে বিকোচ্ছে টাকা! চাইলেই কিনতে পারেন  যতখুশি 



প্রেসকার্ড নিউজ ওয়ার্ল্ড ডেস্ক, ২৬ জুলাই: বাজারে আলু পটলের মতো বিক্রি হচ্ছে কাড়ি কাড়ি টাকা। আপনি চাইলে বান্ডিল বান্ডিল টাকা কিনতে পারবেন, সে টাকা কিন্তু নকল নয়। আশ্চর্যের বিষয় টাকাগুলি নকল নয়। শুধু বিক্রেতাকে গিয়ে বলতে হবে আপরার কত কেজি টাকার প্রয়োজন। আলু পটলের মতো মেপে মেপে আপনাকে টাকা দেওয়া হবে। হয় তো ভাবছেন এমনটা হয় নাকি! বিশ্বে রয়েছে এমন এক আশ্চর্য বাজার যেখানে কেনা বেচা হয় টাকা। কেমন ভাবে হয়? যদি টাকা কিনেন তবে কতটা লাভবান হবেন? এক কেজি কিনতে কত খরচ পড়ে? জেনে নিন এই প্রতিবেদনে। 


পৃথিবীতে রয়েছে আশ্চর্য টাকার বাজার। যেখানে জলের দরে বিক্রি হচ্ছে আসল টাকা। সাধারণত টাকা লেনদেন হয় ব্যাঙ্কের মাধ্যমে। এছাড়াও কিছু সংস্থা রয়েছে। কিন্তু টাকা যে হাটে বিক্রি হতে পারে এমনটা আগে শুনেছেন? দৈনন্দিন চাহিদার কারণে মাছ, মাংস পোষাক, বই কত কিছুই না পাওয়া যায়। কিন্তু এ বাজারে রাস্তার দুই ধারে সারি দিয়ে মানুষ বসে রয়েছেন বস্তা বস্তা টাকা নিয়ে, যেখানে দিনেদুপুরে মানুষ নোট কিনে নিচ্ছেন, তাও আবার কেজি দরে। 


এ টাকা একেবারে আসল টাকা। এ অদ্ভুত টাকার বাজার দেখতে গেলে আপনাকে যেতে হবে আফ্রিকার সোমালিল্যান্ডে। টাকার বাজারে না আছে অতিরিক্ত কোনও নিরাপত্তা ব্যবস্থা না আছে কোনও ভয়। কোনও বারতি পুলিশ বা আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীকেও দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না এখানে। আপনার কাছে প্রায় ১০ থেকে ১১ ডলার থাকলে পেয়ে যাবেন প্রায় ৫০ কেজি নোট। বিশ্বাস হচ্ছে না তো! আসলে এখানে কয়েক বছর আগে এক মার্কিন ডলারের দাম প্রায় ১০ হাজার শিলিংয়ের কাছাকাছি পৌঁছেছিল। এখানে টাকার মুল্য এতটাই কম যা গোটা বিশ্বকে আবাক করে দেয়। মাত্র কয়েক ডলারের বিনিময়ে যদি এখানে টাকা কেনেন আপনাকে রীতিমত কয়টা বস্তা বা ঠেলা গাড়ি নিয়ে বাজারে যেতে হবে। 


বাজারে আলু-পটল, চাল-ডাল কিনতেও আপনাকে বস্তা নিয়ে বেরতে হবে। এখানে সেরিং এতটাই মূল্যহীন হয়ে পড়েছে যে, চোর ডাকাতও সেরিং চুরি করতে চায় না। তা রাস্তার পাশে কিংবা পথের ওপরে টাকা ফেলে রাখলেও চুরি হওয়ার ভয় খুব একটা নেই। দিনেদুপুরে ক্রেতারা অনায়াসে বিনিময় করে যায় রাশি রাশি টাকা। 


বাজারে টাকার মূল্যহীনতার নেপথ্যে কাজ করছে সোমারিল্যান্ডের আর্থিক কাঠামো।দেশ টিকে বলা হয় শিলিং, এর দাম ব্যাপক ভাবে কমে গিয়েছে। ২০০০ সালে এখানে ১ ডলারের বিনিময়ে পাওয়া যেত প্রায় ১০ হাজার সিরিং। ২০১৭ সালের দিকে এসে ১ ডলারের বিনিময়ে পাওয়া যেত ৯ হাজার শিলিং। ভাবতে পারছেন এখানে যদি কয়েক ডলার নিয়ে যান তাহলে টাকা পেতে আপনাকে ঠেলা গাড়ি কিংবা বস্তা নিয়ে যেতে হবে। 


যদিও ধীরে ধীরে পরিস্থিতি উন্নত হচ্ছে। ২০১৮ সালে এসে দেশটিতে ১ মার্কিন ডলারের দাম দাঁড়ায় ৫৮১ শিলিং- এর কাছে। সোমালিল্যান্ডের টাকার দাম এতটা কম মানুষ জলের দরে টাকা কেনে। এখানে আমাদের দেশের মতো চোর-ডাকাতের উৎপাত একেবারেই নেই। এখানে যদি ১ কেজি সবজি কিনতে চান তাহলে গুনতে হবে প্রায় কয়েক হাজার টাকা। রাস্তার পাশে যদি কেউ বস্তা বস্তা টাকা নিয়ে হাজির হয়, চুরি হওয়ার কোনও ভয় নেই। প্রতি বছর বহু পর্যটক বেড়াতে আসেন এই অদ্ভুত বাজারে। কিনে নিয়ে আসেন সোমালিল্যান্ডের টাকা শিলিং। 


কয়েক বছর আগে গোটা বিশ্ব জুড়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে শিরোনামে ছিল খাট। এই খাট কিন্তু বাড়ির খাটের কথা বা আসবাবপত্রের কথা নয়। এটি এক ধরনের আজব নেশা দ্রব্য। খাট নিয়ন্ত্রণ করছে দেশটির অর্থনীতিক এবং সাংস্কৃতিক জনজীবনকে। দেশটির ছেলে-বুড়ো, ধনী-গরীব সবাই খাটে আসক্ত। খাট এক ধরনের সবুজ পাতা, যা প্রথমে কিছুক্ষণ চুষে গালের মধ্যে রেখে দিতে হবে। তারপর পাতার রস শরীরে উত্তেজনা আর উদ্দীপনা ছড়ায়। ইউরোপে উত্তর আমেরিকার বহু দেশে খাট ব্যবহার নিষিদ্ধ। তবে ইথোয়পিয়া, ইউএমএন সোমলির সংস্কৃতিতে এটি বেশি জনপ্রিয়। চরম দারিদ্রতায় ভুগছে দেশটি। এখানে এখনও পর্যন্ত কোনও সরকারী ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা বাস্তুবায়িত হয় নি। সেভাবে কর্ম সংস্থান নেই। দেশের মুদ্রের মুল্য তলানিতে। মুদ্রাস্ফীতি এতটাই চরমে যে রুটি কিনতে গেলে বস্তা ভরে টাকা নিতে হয়। এখানে বড় নোটের মত ৫০০ কিংবা ১০০০ এর নোট প্রচলিত আছে। দেশটিতে আন্তর্জাতিক স্বকৃত কোনও ব্যাঙ্কও নেই। তা এখানে ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা বা এটিএম -এর সুবিধা আশা করা বোকামি হবে। 


তবে সাম্প্রতিক সময়ে সোমালিল্যান্ডের বেসরকারী ব্যবস্থা মোবাইল ব্যাঙ্কিং ও নীতির ব্যবস্থা করা করেছে। মূলত প্রচুর পরিমাণে বস্তা বস্তা টাকা নিয়ে বাজারে গিয়ে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস কেনা প্রায় অসম্ভব। টাকা বহন করা বেশ কষ্টকর। এ সমস্যার কথা বিবেচনা করে দুটো কম্পানি ফোনের মাধ্যমে টাকা জমা করে, ফোনের মাধ্যমেই পণ্য বিক্রি ও কেনা হয়। এখানকার বাসিন্দাদের আয়ের অন্যতম উৎস হল পর্যটন শিল্প।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad