নতুন খোঁজ বিজ্ঞানীদের! বিশ্বের ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা কমিয়ে দেবে এই ব্যাকটেরিয়া
প্রেসকার্ড নিউজ ওয়ার্ল্ড ডেস্ক, ২৯ আগস্ট: বছরের পর বছর ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা সারা বিশ্বের মানুষকে উদ্বিগ্ন করে তুলছে। এখন বিজ্ঞানীরা এর সমাধান খুঁজে পেয়েছেন। তারা এমন ব্যাকটেরিয়া খুঁজে পাওয়ার দাবী করেছেন, যা বৈশ্বিক উষ্ণতার প্রভাব কমাতে পারে। এই ব্যাকটেরিয়াটির নাম মেথেনোট্রফস। রিসার্চ ক্যালিফোর্নিয়া ইউনিভার্সিটি লং বিচ দাবী করেছে যে, এর সাহায্যে বিশ্ব উষ্ণায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী মিথেন গ্যাস কমানো যাবে।
এমতাবস্থায় প্রশ্ন উঠছে কীভাবে একটি ব্যাকটেরিয়া গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের প্রভাব কমাতে পারে? জেনে নিন, কীভাবে একটি ব্যাকটেরিয়া মিথেস গ্যাস কমাতে সাহায্য করতে পারে।
ব্যাকটেরিয়া এভাবে কাজ করে
গবেষকরা দাবী করেছেন যে, মেথেনোট্রফস ব্যাকটেরিয়া প্রাকৃতিকভাবে মিথেনকে কার্বন ডাই অক্সাইডে রূপান্তর করতে কাজ করে। এটি বাতাসে উপস্থিত মিথেন খেতে কাজ করে। এই সময় এটি বাতাস থেকে মিথেন সরিয়ে দেয়। যদিও, এটি শুধুমাত্র অল্প পরিমাণে বাতাস থেকে মিথেন নির্মূল করে, তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই ব্যাকটেরিয়াকে বড় আকারে ব্যবহার করা হলে তা স্পষ্টতই বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রভাব কমাতে সাহায্য করবে।
মিথেন গ্যাসকে গ্রিন পাওয়ার হাউস গ্যাস বলা হয়। এটি সাধারণত মানুষের কার্যকলাপ থেকে উদ্ভূত হয়। যেমন- কৃষি, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, কারখানা। এই গ্যাস গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের প্রভাব বাড়াতে কাজ করে। এটি কার্বন ডাই অক্সাইডের চেয়ে ২৫ গুণ বেশি বিপজ্জনক বলে মনে করা হয়।
ব্যাকটেরিয়া কতটা পরিবর্তন করতে পারে?
জার্নাল প্রসিডিংসে প্রকাশিত গবেষণা অনুযায়ী, এই ব্যাকটেরিয়ার সাহায্যে ২০৫০ সালের মধ্যে ২৪ কোটি টন মিথেন গ্যাস পরিবেশে পৌঁছানো থেকে রোধ করা যাবে। বিজ্ঞানীরা যে ব্যাকটেরিয়া আবিষ্কার করেছেন তা অন্যান্য ব্যাকটেরিয়ার তুলনায় ৫ গুণ বেশি শক্তিশালী।
এই ব্যাকটেরিয়া সেই জায়গাগুলির জন্য আরও অনুকূল হতে পারে যেখানে গবাদি পশুর পাল বেশি। পূর্বের গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে, গবাদি পশুর ঢেঁকুর থেকে প্রচুর মিথেন গ্যাস বের হয়।
ব্যাকটেরিয়া কীভাবে কাজ করে?
ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের গবেষক ইউয়ান নিসবেট বলেন, 'এই ব্যাকটেরিয়া মিথেনকে অক্সিডাইজ করে কার্বন ডাই অক্সাইডে রূপান্তরিত করে, যা মিথেন গ্যাসের চেয়ে কম ক্ষতিকর। তবে এই ব্যাকটেরিয়ার মাধ্যমে বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাব কমাতে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে।
কতটা চ্যালেঞ্জ?
এই ব্যাকটেরিয়ার মাধ্যমে বৈশ্বিক উষ্ণতা কমাতে কতটা চ্যালেঞ্জ রয়েছে সে বিষয়ে বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই ব্যাকটেরিয়াকে যদি বৈশ্বিক উষ্ণতা বন্ধ করতে ব্যবহার করতে হয় তাহলে হাজার হাজার রিঅ্যাক্টর্স প্রয়োজন হবে। এতে প্রযুক্তিরও প্রয়োজন হবে এবং এর জন্য তাপমাত্রা বজায় রাখাও প্রয়োজন হবে। তাপমাত্রা ২৫ থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বাইরে থাকলে এই ব্যাকটেরিয়াগুলির বৃদ্ধি বাধাপ্রাপ্ত হয়।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, এর জন্য আমাদের মিথেন ট্রিটমেন্ট ইউনিট ২০ গুণ বাড়ানোর প্রয়োজন হবে। এমন ব্যবস্থা করা গেলেও মানুষের পক্ষে তা গ্রহণ করা এবং এর জন্য বিনিয়োগ বাড়ানো সহজ হবে না। এজন্য আগামী ৩ থেকে ৪ বছরের মধ্যে পাইলট টেস্ট করা যেতে পারে।
No comments:
Post a Comment