'শাসকদল আন্দোলন আটকনোর চেষ্টা করলে বাংলা স্তব্ধ হবে', নবান্ন অভিযান নিয়ে সুর চড়াল ছাত্র সমাজ
কলকাতা: শাসক দল যদি আমাদের এই আন্দোলন আটকানোর চেষ্টা করে তাহলে বাংলা স্তব্ধ হবে', নবান্ন অভিযান নিয়ে এভাবেই সুর চড়াল ছাত্র সমাজ। রাজ্যের আপত্তির তোয়াক্কা না করে মিছিলের অনুমতি দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। শুক্রবার এই রায় প্রকাশ্যে আসতেই কলকাতা প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করে ছাত্র সমাজ। সাংবাদিক সম্মেলনে অংশ নেন প্রবীর দাস, শুভঙ্কর হালদার, সায়ন লাহিড়ী। উল্লেখ্য, আগামী ২৭ আগস্ট নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছে ছাত্র সমাজ। কেন এই প্রতিবাদ মিছিল, কোথা থেকে শুরু ইত্যাদি বিষয়ে। এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে জানানো হয়।
সাংবাদিক সম্মেলন কিছুটা দেরিতে শুরু হওয়ায় প্রথমেই উদ্যোক্তারা ক্ষমা চেয়ে নেন। তাঁরা বলেন, আজকে ছাত্র সমাজের ডাকে প্রেস কনফারেন্স আয়োজন করেছি। ক্ষমা চাইছি কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে হল। ক্ষমা চাইছি সেসব পুরুষদের পক্ষ থেকে, কারণ যেভাবে নারী নির্যাতন চলছে।
তাঁরা বলেন, "২৭ তারিখ আমরা নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছি। আমরা ছাত্র সমাজ। আরজি করের ঘটনার জন্য আমরা নিত্য নৈমিত্তিক কোনও কাজ করতে পারছিনা। ব্যাকুলতা আমাদের গ্রাস করেছে। মূলত, সোশ্যাল মিডিয়ায় মানুষের সব প্রশ্ন সাজিয়ে আমরা ছাত্র সমাজ তৈরি করেছি। মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবী জানিয়েছে প্রত্যেকে। রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান এখনও চুপ করে রয়েছেন। কোনও প্রশ্নের উত্তর তিনি দেননি। মানুষের ধোঁয়াশা কাটানোর জন্য আমরা এই ছাত্র সমাজ তৈরি করেছি।"
তাঁদের তরফে তিনটি দাবীর কথা জানানো হয়। তাঁরা বলেন, "আমরা দাবী রেখেছি তিনটে; নির্যাতিতার সুবিচার, দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং পুলিশ মন্ত্রী ও স্বাস্থ্য মন্ত্রী হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগ।"
তাঁদের কথায়, মুখ্যমন্ত্রী স্বাস্থ্য দফতর ও পুলিশ দফতরের প্রধান, দুই দফতরই ব্যর্থ। স্বাভাবিক ভাবেই তাকে এই দায়ভার নিতে হবে। তার শাসনকাল থেকেই তো এগুলো বলে গেছেন তিনি। কখনও বলেছেন নির্যাতিতার দোষ, বিচ্ছিন্ন ঘটনা। আমাদের সমাজে এটা খারাপ বার্তা দিচ্ছে। আমরা তাই এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছি।'
সকলকে এতে অংশ নিতে আহ্বান জানান তাঁরা। তাঁরা বলেন, "ডাক্তারি পড়ুয়াদের আহ্বান জানিয়েছি। এখানে কোনও দলমত, বর্ণ নেই। আরজি করের সমর্থন আমরা আশা রাখছি। পুলিশকে জানানো হয়েছে কিন্তু তারা কতদূর কী করবেন জানি না। তাদের অনুমতির ভরসায় নেই আমরা। আমাদের পক্ষ থেকে যখন ২৭ তারিখ নবান্ন অভিযানের ডাক দেওয়া হয়েছিল, তখন এটাকে এবিভিপির আন্দোলন বলে চালানোর চেষ্টা হয়েছিল, কিন্তু তাদের জানানোর পর তারা জানিয়েছে তাদের সঙ্গে এই আন্দোলনের কোনও যোগাযোগ নেই। তবে নৈতিক ভাবে তারা আমাদের পাশে থাকবে বলে জানিয়েছে।"
উদ্যোক্তারা বলেন, "যদি আমরা দেখি আগামী ২৭ তারিখ এবিভিপি বা এসএফআই আমাদের নবান্ন অভিযানে সাড়া দিয়ে আমাদের সঙ্গে সামিল হয়, আগামীদিনে আমরাও তাদের আন্দোলনে সাড়া দিয়ে তাদের সঙ্গে যোগ দেব।" তাঁরা বলেন, "কলেজ স্ট্রিট আর সাঁতরাগাছিতে জমায়েত করে আমরা যাব নবান্নে, শান্তিপূর্ণ ভাবেই মিছিল হবে। আমাদের সঙ্গে শ্রীলেখা দি আছেন, স্বস্তিকা দি আছেন, কিরণ আছেন, তাদেরও আমরা আহ্বান জানিয়েছি। আগামী ২৭ তারিখ ছাত্র সমাজের নাম, প্ল্যাকার্ড আর পোস্টার করে আমরা নিয়ে যাব। আমরা সব রাজনৈতিক সংগঠনকে আহ্বান জানিয়েছি। বাংলার শাসক দল বা কোনও সংগঠন আমাদের এই আন্দোলন বা মিছিল আটকানোর চেষ্টা করে তাহলে বাংলা স্তব্ধ হবে, শহর স্তব্ধ।"
তাঁদের সংযোজন, "বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের বলতে চাই, যদি তারা আমাদের সঙ্গে যোগ দিতে চান তাহলে তাদের দলের কোনও পতাকা আনতে হবে না। জাতীয় পতাকা নিয়ে আমরা আন্দোলন করব।"
No comments:
Post a Comment