আরজি কর আবহে নারী-নির্যাতন নিয়ে কবিতা শেয়ার! গ্ৰেফতার পিওকের মহিলা ব্লগার, বাড়িতে হামলা
প্রেসকার্ড নিউজ ওয়ার্ল্ড ডেস্ক, ৩০ আগস্ট: আরজি কর কাণ্ডে দেশ জুড়ে আছড়ে পড়েছে প্রতিবাদের ঢেউ। ন্যায়বিচারের পাশাপাশি নারী সুরক্ষার দাবীতে সরব হয়েছেন সকলেই। এমনকি এই ঘটনার প্রতিবাদের আঁচ পৌঁছে গিয়েছে বিদেশেও। এই আবহে মহিলাদের ওপর উৎপীড়ন নিয়ে সমাজমাধ্যমে কবিতা শেয়ার করে চরম বিপাকে পড়েছেন পাকিস্তানের এক মহিলা ব্লগার। ব্লাসফেমির অভিযোগে তাঁকে শ্রীঘরে পুরে দেওয়া হয়েছে।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে (পিওকে) বসবাসকারী ব্লগার আসমা বাতুল মহিলাদের উৎপীড়ন নিয়ে সালমান হায়দারের একটি কবিতা শেয়ার করেছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, 'ক্ষুদা, ভগবান বা ঈশ্বর সবাই উপস্থিত ছিলেন যখন ধর্ষণ হয়। ফেসবুক পোস্ট ছাড়াও ইনস্টাগ্রাম পোস্টে তিনি আরেকটি কবিতা আবৃত্তি করেছেন। এরপর অনেক মৌলবী আসমার বিরুদ্ধে আল্লাহকে অপমান করার অভিযোগ তোলেন। তাঁর বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে। পরে ব্লাসফেমির অভিযোগে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। জানা গিয়েছে, পিওকে, পুঞ্চের বাসিন্দা মাওলানা তাহির বশির ২৫ আগস্ট তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছিলেন।
এই ঘটনার পর এক জনতার ভিড় তাঁর বাড়িতে হামলাও চালায়, যার কিছু ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরালও হয়। এতে কয়েকজন মৌলবীকেও দেখা যায়। পুলিশে অভিযোগ করেছে আসমার পরিবার। ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, তাদের প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে এবং বাড়িতে আগুন দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।
অপরদিকে কিছু মানুষ ব্লগারের পক্ষে। তাঁরা তাঁর মুক্তির দাবী করছেন। একজন সাংবাদিক এক্স-এ লিখেছেন যে "আসমা বাতুলকে সোশ্যাল মিডিয়ায় কবিতা শেয়ার করার জন্য ব্লাসফেমির অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে, আপনি বিশ্বাস করুন বা না করুন এটাই পাকিস্তান।"
আসমা বাতুল সোশ্যাল মিডিয়ায় খুব সক্রিয়, তাঁর প্রচুর অনুরাগী-অনুসারী রয়েছে। তিনি সবসময় পাকিস্তানে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিরুদ্ধে তাঁর আওয়াজ তুলেছেন। এমতাবস্থায়, একজন ইউজার এক্স পোস্টে লিখেছেন, 'আমি তাঁর ইকবালকে খোঁজার অপেক্ষা করতে পারব না এবং এটি জানার যে, এটা কীভাবে ব্লাসফেমি। এটি ঘৃণ্য এবং আমি সত্যিই বুঝতে পারছি না কীভাবে আমরা এটি পাল্টাতে পারি।'
এর পাশাপাশি মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা গুলালাইও তার গ্রেফতারের নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন যে, ব্লাসফেমি আইন হল নতুন রাষ্ট্রদ্রোহ আইন, যা ভিন্নমত পোষণকারীদের শাস্তি দেওয়ার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। এখন বিষয়টি পাকিস্তানে অনেক প্রাধান্য পেয়েছে।'
No comments:
Post a Comment