'এই সরকারের বিসর্জন আসন্ন', আরজি করের নির্যাতিতার পরিবারের পাশে থাকার বার্তা সুকান্তর
নিজস্ব সংবাদদাতা, উত্তর ২৪ পরগনা, ২৬ আগস্ট: আরজি করের নির্যাতিতা তরুণী চিকিৎসকের পরিবারের পাশে থাকা এবং লড়াই এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বার্তা দিয়ে তাঁর পরিবারের সঙ্গে প্রদীপ প্রজ্বলন করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। সোমবার সন্ধ্যায় নির্যাতিতার নাটাগরের বাড়িতে আসেন সুকান্ত। সাথে ছিলেন বিজেপির উত্তর শহরতলী সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অরিজিৎ বক্সি।
পরে বিজেপি রাজ্য সভাপতির হুঁশিয়ারি 'ছাত্র সমাজের ডাকা আগামীকালের নবান্ন অভিযান শান্তিপূর্ণ হোক। যদি অশান্তি হয় তবে আগামী দিনে বিজেপি পথে নামবে। আগামীকালও নামতে পারি।' নবান্ন অভিযানে যদিও তিনি নিজে থাকবেন না বলেও জানান সুকান্ত মজুমদার। তিনি বলেন, তবে এমন কোনও পরিস্থিতি যেন তৈরি না হয়, যেখানে আমাদের নামতে বাধ্য হতে হচ্ছে। পুলিশ যদি এঁদের ওপর অত্যাচার করে, দমন-পীড়ন নীতি নেয়, তবে আমাদের নামতে হবে। বিজেপি আগামী দিনে আলাদা করে নবান্ন অভিযানের ডাক দেবে।'
সুকান্ত বলেন, 'এই আন্দোলনের প্রতি আমাদের পূর্ণ সমর্থন আছে। গণতান্ত্রিক আন্দোলনের প্রতি বিজেপির পূর্ণ সমর্থন রয়েছে।'
নবান্নের অভিযানের অনুমতি নেওয়া নিয়ে সুকান্ত বলেন 'কোনও অভিযানের জন্য কি পুলিশের থেকে অনুমতি নিতে হয় নাকি? ভারতীয় ন্যায় সংহিতার কোন ধারায় পুলিশ অনুমতি চায়? আসলে পুলিশ ভয়ে আছে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভয় আছেন। মুখ্যমন্ত্রী ভয়ে লুকিয়ে আছেন মেঘনাদের মতো, মাঝে মাঝে মেঘের আড়াল থেকে বাণী দিচ্ছেন। আগে যেরকম যাত্রাপালা হত- ঠিক তেমন মাঝেমধ্যেই তৃণমূলের একজন নেতা হিসেবে বিবেকের বাণী দিয়ে যাচ্ছেন।'
বিজেপি নেতা বলেন, 'পরিবারের সাথে আমার কথা হয়েছে। ন্যায় বিচারের দাবীতেই তাঁরা চান আন্দোলনটা চলুক। কারণ ওদের সন্দেহ আন্দোলন থেমে গেলে আর ন্যায়বিচার পাওয়া সম্ভব নয়। আমিও ব্যক্তিগতভাবে সকলকে আবেদন জানাব রাজনৈতিক বা সংগঠন নির্বিশেষে সকলেই যেন এই আন্দোলনে সামিল হয়।'
তিনি বলেন, 'আমার তো মনে হচ্ছে যে পুরো নাটকের একটা স্ক্রিপ্ট তৈরি করা হয়েছিল যে কি বলা হবে, কি দেখানো হবে তদন্তের কি ফলাফল আসবে। আমার তো সন্দেহ আছে যে যাকে ধরা হয়েছে সেই কি আদৌ অপরাধী, নাকি অন্য কেউ অপরাধী!'
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উদ্দেশ্য করে রাজ্যের ৪৮ হাজারের বেশি ধর্ষণের মামলা এখনও নিষ্পত্তি না হওয়া নিয়ে কেন্দ্রীয় নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রী অন্নপূর্ণা দেবীর লেখা চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে সুকান্ত বলেন, 'রাজ্য সরকার ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট গঠন করেনি। ধর্ষিতারা এখানে ন্যায় পাচ্ছেন না। তার সবচেয়ে বড় উদাহরণ হল কামদুনির গণধর্ষণ মামলা। নিম্ন আদালতে শাস্তি পেয়েও দোষীরা উচ্চ আদালতে বেকসুর খালাস পেয়ে গেলেন কেবলমাত্র প্রমাণের অভাবে। সে সময় সিআইডি আইজি ছিলেন বিনীত গোয়েল, এখন তিনি কলকাতার পুলিশ কমিশনার। এই সরকার একটা পাপ ঢাকতে আরেকটা পাপ করছে। এই সরকারের পাপের ঘড়া পূর্ণ হয়ে গেছে। এই সরকারের বিসর্জন আসন্ন।'
মঙ্গলবারের নবান্ন অভিযান নিয়ে সুকান্ত বলেন, "মানুষ প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ। তারা বুঝতে পারছেন যে, অপরাধীরা এখনও শাস্তি পাচ্ছে না। কারণ প্রমাণ হাপিশ করে দেওয়া হয়েছে। সবচেয়ে বড় প্রমাণ ছিল নির্যাতিতার মরদেহ। কিন্তু স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক (নির্মল ঘোষ) তড়িঘড়ি সকলকে ম্যানেজ করে সেই দেহ পোড়ানোর ব্যবস্থা করেছেন। তাঁকে তো 'শ্মশান শ্রী' পুরস্কার দেওয়া উচিৎ।"
No comments:
Post a Comment