শিশুর জ্বর হলে পরামর্শ নিন ডাক্তারের
প্রেসকার্ড নিউজ,লাইফস্টাইল ডেস্ক,১৫ আগস্ট: আবহাওয়া পরিবর্তন ছোট শিশুদের সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত করে।জ্বর, কাশি,শক্ত হয়ে যাওয়া এবং পেটব্যথার মতো সংক্রমণ শিশুদের সমস্যায় ফেলে।তবে এমন পরিস্থিতিতে আতঙ্কিত হওয়ার দরকার নেই।আগে নিজে চিকিৎসা করুন।জ্বর হলে শিশুদের গায়ে কাপড় কম রাখুন।বেশি জ্বর হলে ভেজা কাপড় দিয়ে শরীর মুছে নিন।কানপুরের বিখ্যাত শিশু বিশেষজ্ঞ ডক্টর অজয় বাজপেয়ী এক বিশেষ বৈঠকে এই তথ্য জানিয়েছেন।তিনি পরিবারের সদস্যদের সতর্ক করে বলেন, অসুস্থ হলে পুরোনো প্রেসক্রিপশনের ওষুধ খাওয়া বা পাশের মেডিক্যাল স্টোরের পরামর্শ নেওয়া থেকে বিরত থাকুন। অন্যথায় এটি শিশুর জন্য ঝামেলার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।শিশুদের চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়ার আগে কী কী চিকিৎসা করা যায় সে বিষয়ে বিশেষ তথ্য দিয়েছেন তিনি।
ডাক্তার বলেছেন,ছোট শিশুদের জ্বর হলে আতঙ্কিত হবেন না। প্রথমত,শিশু যদি অনেক বেশি জামাকাপড় পরে থাকে তবে সেগুলি কমিয়ে দিন।শরীরে বাতাস প্রবেশ করার জন্য শুধুমাত্র পর্যাপ্ত কাপড় থাকা উচিৎ।প্রায়শই যখন শিশুর জ্বর হয়,তখন আমরা অজান্তেই শিশুকে রক্ষা করার জন্য বেশি কাপড় পরাই।
জ্বর হলে ভেজা কাপড় দিয়ে জলপট্টি দিন -
শিশু বিশেষজ্ঞ বলেন,জ্বরের তাপমাত্রা বেশি হলে আতঙ্কিত হওয়ার দরকার নেই।প্রথমে শিশুর কাপড় খুলে পরিষ্কার জলে একটি ঝরঝরে ও পরিষ্কার কাপড় ভিজিয়ে তারপর জল চেপে সারা শরীর মুছে দিন।এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখলে তাপমাত্রা কমবে নিশ্চিত।প্রায়শই মায়েরা শুধুমাত্র মাথায় ভেজা কাপড়ের একটি পট্টি রাখার ভুল করেন।এই ভুল করলে জ্বর কমার সম্ভাবনা কম।
কুড়ি মিনিট ধরে শরীর মোছার কাজ করুন -
ডাক্তার বাজপেয়ী বলেছিলেন যে,আপনি যদি জ্বর কমাতে একটি ভেজা কাপড় ব্যবহার করেন,তবে তার সময়ও কুড়ি মিনিটে নির্ধারিত।এরপর এটি বন্ধ করুন।উপশম পেলেই, একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন এবং চিকিৎসা করুন।
শরীর মোছার জন্য সাধারণ জল ব্যবহার করুন -
তিনি বলেন,ভেজা কাপড় দিয়ে শিশুদের মোছানোর সময় মায়েদের বিশেষ যত্ন নিতে হবে যে তারা যে জল ব্যবহার করছেন,সেটা একেবারে স্বাভাবিক হওয়া উচিৎ।জ্বরের প্রকোপ দেখে ঠাণ্ডা জল একেবারেই ব্যবহার করবেন না।অন্যথায় পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।যদি শিশুর কাঁপুনি হয় তবে আপনি জলটি সামান্য উষ্ণ করতে পারেন।
শিশুরা অসুস্থতার সময় না খেলে চিন্তিত হবেন না -
জ্বর বা অন্য কোনও সমস্যায় শিশু হোক বা প্রাপ্তবয়স্ক,সবাই সবার আগে খাওয়া বন্ধ করে দেয়।এটি একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া।আপনি যখন সমস্যায় পড়েন তখন খাওয়ার স্বাদ ভালো লাগে না।এমতাবস্থায় মায়েদের এই বিষয়টি নিয়ে মোটেও চিন্তিত হওয়া উচিৎ নয়।শিশুর জ্বর বা যাই হোক সমস্যা কমে গেলেই শিশু নিজে থেকে খেতে শুরু করবে।খাবারের চেয়ে ওষুধের দিকে বেশি মনোযোগ দিন।
শিশুর তাপমাত্রা পরীক্ষা করতে ভুলবেন না -
ডাঃ বাজপেয়ী বলেন,প্রায়ই জ্বর হলে পরিবারের সদস্যরা স্পর্শ করে জ্বর নির্ধারণ করেন।কিন্তু এটা সম্পূর্ণ ভুল।জ্বর হলে থার্মোমিটার ব্যবহার করুন।শুধু তাই নয়,সম্ভব হলে মেজরের জন্য ডিজিটাল থার্মোমিটার ব্যবহার করার পরামর্শ দেন তিনি।
পুরনো প্রেসক্রিপশনের ওষুধ এবং মেডিক্যাল স্টোর থেকে দূরে থাকুন -
তিনি বলেন,প্রায়ই কোনও অসুস্থতা দেখা দিলে পরিবারের সদস্যরা পুরনো ওষুধের ব্যবস্থাপত্র খুঁজতে থাকে।কিন্তু এটা সম্পূর্ণ ভুল।প্রতিটি রোগের লক্ষণ একেক রকম।ডাক্তার চেকআপের পর ওষুধ লিখে দেন।তাই চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ওষুধ খান।পাড়ার মেডিক্যাল স্টোরের ওষুধ বেপরোয়াভাবে ব্যবহার করবেন না।
তরল খাবারকে প্রাধান্য দিন -
বিশেষজ্ঞ বলেন,শিশু একটু ভালো হলেই খাওয়ার দিকে মনোযোগ দিতে হবে।তবে এই সময়কালে,শিশুকে তার খাবারে তরল দেওয়া হয় কিনা তা নিশ্চিত করার জন্য বিশেষ যত্ন নেওয়া উচিৎ।যাতে সে সহজে হজম করতে পারে।অসুস্থতার পর হঠাৎ করে শক্ত পদার্থ পেটে পৌঁছালে সমস্যা হতে পারে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার সাথে সাথে স্বাভাবিক রুটিনে ফিরে আসুন।
বি.দ্র: এই বিষয়বস্তু,পরামর্শ সহ, শুধুমাত্র সাধারণ তথ্য প্রদান করে।এটা কোনওভাবেই যোগ্য চিকিৎসা মতামতের বিকল্প নয়। আরও তথ্যের জন্য সর্বদা একজন বিশেষজ্ঞ বা আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন। প্রেসকার্ড নিউজ এর দায় স্বীকার করে না।
No comments:
Post a Comment