মেয়েদের হোস্টেলে ঢুকে অশালীন আচরণ! বিচারের দাবীতে বিক্ষোভ-অবরোধ পড়ুয়াদের - press card news

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Monday 12 August 2024

মেয়েদের হোস্টেলে ঢুকে অশালীন আচরণ! বিচারের দাবীতে বিক্ষোভ-অবরোধ পড়ুয়াদের

 


মেয়েদের হোস্টেলে ঢুকে অশালীন আচরণ! বিচারের দাবীতে বিক্ষোভ-অবরোধ পড়ুয়াদের 




নিজস্ব সংবাদদাতা, উত্তর ২৪ পরগনা, ১২ আগস্ট: রাতে নেশাগ্রস্ত হয়ে মেয়েদের হোস্টেলের ঘরে ঢুকে অশালীন আচরণের অভিযোগ করার চারদিন কেটে গিয়েছে। এরপরও পদক্ষেপ করেনি পুলিশ প্রশাসন। অভিযুক্ত নার্সিং কলেজের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সিদ্ধার্থ ঘোষ ছাত্রীদের কাছে ক্ষমাও চাননি। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী তুলে সোমবার দুপুরে বারাসত ব্যারাকপুর রোডের দত্তপুকুর থানার রঙ্গপুর মোড়ে বিক্ষোভ অবরোধ করলেন পড়ুয়ারা। সেখান থেকেই তাঁদের স্লোগান, 'আমরা বিচার চাই।'


গত রবিবার রাতে মদ্যপ অবস্থায় নার্সিং কলেজের হোস্টেলে ঢুকে মেয়েদের সাথে অশালীন আচরণের অভিযোগ ওঠে সেই কলেজের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সিদ্ধার্থ ঘোষের বিরুদ্ধে। ঘটনা উত্তর ২৪ পরগনা জেলার দত্তপুকুর থানার অন্তর্গত নীলগঞ্জ এলাকার একটি নার্সিং কলেজের। জেলাশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছিলেন শিক্ষার্থীদের। 


ছাত্রীদের অভিযোগ, গত রবিবার রাত প্রায় ১১ টা নাগাদ মেয়েদের হোস্টেলে আসেন কলেজের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সিদ্ধার্থ ঘোষ। ছাত্রীদের অভিযোগ, সেই সময় তিনি মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন। আরও অভিযোগ, হোস্টেলের ঘরে সেদিন ছাত্রীরা রাতের পোশাক পরে নিজেদের কাজ করছিলেন। দরজায় কড়া না নেড়ে হঠাৎ ঘরের ভিতরে ঢুকে যান তিনি। বেশ কয়েকজন ছাত্রীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার, এমনকি অশালীন আচরণও করেন।


ছাত্রীদের দাবী, পরিচালন কমিটির আর এক সদস্য তথা সিদ্ধার্থ ঘোষের দিদি অর্পিতা মিত্রও হঠাৎ হাজির হন সেখানে। ভাইকে বোঝানোর চেষ্টা করেন। সেই সময় সিদ্ধার্থ ঘোষ তার দিদিকে ঘর থেকে বের করে দেন এবং ফের ছাত্রীদের সঙ্গে অশালীন আচরণ শুরু করেন। ছাত্রীদের অভিযোগ, প্রায় আড়াই ঘন্টা চলে এই অশালীন আচরণ। 


ছাত্রীদের আরও অভিযোগ, তাদের সঙ্গে প্রতারণা ও খারাপ আচরণ করা হচ্ছে। তাঁদের কথায়, "এখানে পার্টি করা হয়, মদ খাওয়া হয়। আমাদের নাচতে বলা হয় ম্যানেজমেন্টের থেকে। এমনকি হোস্টেল ছাড়লে ফেল করিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয় সিদ্ধার্থ স্যার।" পড়াশোনার বিষয়েও বিস্তর অভিযোগ করেন ছাত্রীরা। 


কলেজের ছাত্রী ঐত্রেয়ী পন্ডা বলেন, " উনি মদ্যপ হয়ে এসে একটা রুমে বসে আমাদের সঙ্গে বকেছেন। তারপর অন্য একটা রুমে ঢুকে আমার সহপাঠীর শরীরে হাত দিয়েছেন। আমার হাত ধরে টেনেছেন। আমি জোর করে হাত না সরালে কী হত জানি না। উনি আমাদের খুব কাছাকাছি এসে কথা বলছিলেন। আগেও এমন একবার হয়েছে, এবার একটু বেশি হয়েছে। পুলিশ ও জেলা শাসকের অফিসে জানানো হয়েছে।"


কলেজেরই অন্য এক ছাত্রী সংকলিতা ভট্টাচার্য বলেন, "আমাদের বাথরুমের সামনে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। আমাদের মেয়েদের হোস্টেলে কেন সিসিটিভি ক্যামেরা থাকবে। আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।"


যদিও এই সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ওই কলেজের পরিচালন কমিটির সদস্য অর্পিতা মিত্র। তিনি বলেন," ছাত্রীদের অভিযোগ ভিত্তিহীন। কলেজটি নতুন হয়েছে হয়তো কোনও চক্রান্তের শিকার হয়ে ছাত্রীরা এমন অভিযোগ করছে। আমি একজন মহিলা হয়ে বলছি এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি।" তিনি বলেন, "আমাদের অনেক কষ্টে গড়া এই কলেজ। কেউ চাইবে না নিজের কলেজ কেউ নিজে নষ্ট করুক।" তাঁর দাবী, ভিডিও ফুটেজ, প্রমাণ সব কথা বলবে।" তবে, ছাত্রীরা কেন এমন গুরুতর অভিযোগ করছেন, সেই প্রশ্নের সদুত্তর তিনি দিতে পারেননি। 


শুক্রবার ছাত্রীরা জেলা শাসকের কাছে এই সকল বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ করেন। জেলাশাসক দফতর সূত্রের খবর, ছাত্রীদের অভিযোগ পেয়ে তাদের তদন্তের আশ্বাস দেওয়ার হয়েছে। ইতিমধ্যে পুলিশের সাথে আলোচনা করে পদক্ষেপ করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।


এদিকে কলেজের হোস্টেলে এমন ঘটনা ঘটায় ছাত্রীদের পাশাপাশি ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে অভিভাবকদের মধ্যেও। অনেকেই কলেজ থেকে নিজের মেয়েকে ছাড়িয়ে নিতে এবং সেইসঙ্গে টাকা ফেরত পেতে চান।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad