সুস্বাস্থ্যের জন্য ছয় মাস বয়সের পর শিশুর ডায়েট চার্ট কেমন হওয়া উচিৎ?
প্রেসকার্ড নিউজ,লাইফস্টাইল ডেস্ক,২৩ আগস্ট: জন্মের ৬ মাস পর শুধু মায়ের দুধেই শিশুর পেট ভরে না।এই কারণে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা ৬ মাস পর থেকে শিশুকে দুধের সঙ্গে শক্ত খাবার দেওয়ার পরামর্শ দেন।একটি শিশু যখন দুধের সাথে শক্ত খাবার খায়,তখন তা তার মানসিক ও শারীরিক বিকাশে সহায়তা করে।শিশুকে শক্ত খাবার খাওয়ানোর ক্ষেত্রে,বেশিরভাগ বাবা-মা তাকে ডাল,রুটি এবং নিয়মিত খাবার দেয়।তবে শিশু তা খেতে পছন্দ করে না। এমতাবস্থায়,পিতামাতারা তাদের সন্তানকে শক্ত খাবার হিসাবে কী দেবেন যাতে সে কেবল পুষ্টিই পায় না,মন প্রাণ দিয়েও খায়,তা নিয়ে চিন্তিত থাকেন।আপনিও যদি এই নিয়ে চিন্তিত থাকেন,তাহলে আজকে আমরা আপনার দুশ্চিন্তা দূর করতে চলেছি।লখনউয়ের শিশু বিশেষজ্ঞ ডাঃ তরুণ আনন্দ তার ইনস্টাগ্রামে একটি ভিডিও শেয়ার করেছেন।এই ভিডিওতে,৬ মাস বয়সের পর শিশুকে কী এবং কতটা পরিমাণে খাওয়ানো উচিৎ সেই সম্পর্কে তিনি তথ্য দিয়েছেন।
৬ মাস পর শিশুকে কী খাওয়ানো উচিৎ?
ডাঃ তরুন আনন্দ বলেন,৬ মাস পর শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য তাকে শক্ত খাবারে খিচুড়ি,বাজরা, রাগি ও উপমা দিয়ে তৈরি খাবার দেওয়া যেতে পারে।৬ থেকে ১০ মাস বয়সী একটি শিশুকে মায়ের দুধ এবং ১ বার জলখাবার সহ দিনে ২ বার খাবার দিতে হবে।একই সময়ে,১০ থেকে ১২ মাস পর শিশুকে ৩ বার খাবার এবং ২ বার জলখাবার দিতে হবে।১২ মাস পর শিশুকে নিয়মিত খাবার ও দুধ দিতে হবে।এছাড়া শিশুকে ফিঙ্গার ফুডও দিতে পারেন। ডাক্তারের মতে,১২ মাস পর্যন্ত একটি শিশুর মাড়ি সম্পূর্ণরূপে বিকশিত হয়।১ বছর পর শিশুকে ফিঙ্গার ফুড দেওয়া মাড়িকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে।শুধু তাই নয়,ফিঙ্গার ফুড খেলে শিশু সঠিকভাবে খাবার চিবিয়ে খেতে শেখে।এভাবে শিশুকে খাবার দিলে তার মানসিক ও শারীরিক বিকাশ সঠিকভাবে হয়।
পিউরি দিয়ে শুরু করুন -
ডাঃ তরুন বলেন,৬ মাস পর শিশুকে সরাসরি শক্ত খাবার দেওয়া উচিৎ নয়।পিউরি দিয়ে শিশুকে খাবার দেওয়া শুরু করতে হবে।অভিভাবকরা প্রাথমিকভাবে শিশুকে আপেল, গাজর বা মিষ্টি আলুর পিউরি দিতে পারেন।একটি ছোট শিশুকে পিউরি দেওয়ার সময় মনে রাখবেন যে একই ফল বা সবজির পিউরি শিশুকে ক্রমাগত দেবেন না।আপনি যদি আপনার শিশুকে সকালে আপেলের পিউরি দিয়ে থাকেন, তবে সন্ধ্যায় তাকে মিষ্টি আলুর পিউরি দিন।এতে শিশু ভিন্ন স্বাদ অনুভব করবে এবং খাবারের প্রতি আরও আগ্রহ দেখাবে।
বিনস এবং ডাল দিন -
৬ মাস পর শিশুর শরীরে যাতে রক্তশূন্যতা না থাকে সে জন্য খাদ্যতালিকায় বিনস ও ডাল অন্তর্ভুক্ত করুন।ডাক্তারের মতে, বিনসের মধ্যে ফলিক অ্যাসিড পাওয়া যায়,যা লোহিত রক্তকণিকার বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।তাছাড়া সবুজ বিনসে উপস্থিত ফলিক অ্যাসিড শিশুদের মস্তিষ্কের বিকাশের জন্যও দারুণ কাজ করে।বিনস এবং ডাল ছাড়াও,শিশুকে শক্তিশালী সিরিয়াল দিন।
জল গুরুত্বপূর্ণ -
অনেক সময় বাবা-মা শিশুকে শক্ত খাবার দিলেও জল দেন না।এতে শিশুর জলশূন্যতার সমস্যা হতে পারে।বিশেষজ্ঞরা বলছেন,শক্ত খাবারের পাশাপাশি শিশুকে ছোট ছোট চুমুক জল দেওয়াও জরুরি।প্রতিবার খাওয়ানোর পর শিশুকে ১ থেকে ২ চামচ জল দিন।
নিজেকে খেতে দিন -
পিতামাতারা তাদের নিজের হাতে শিশুকে খাওয়াতে পছন্দ করেন,যাতে শিশুটি খাবার ছড়িয়ে না পড়ে বা পড়ে না যায়। কিন্তু ডক্টর তরুণ আনন্দ বলেন,একটি শিশু যখন নিজের হাতে খাবার খায়,তখন সে কেবল খেতেই আনন্দ পায় না,এটি তাকে শেখার ক্ষেত্রেও সাহায্য করে।
অ্যালার্জির দিকে মনোযোগ দিন -
শক্ত খাবার দেওয়ার সময় চিনাবাদাম,ডিম এবং দুগ্ধজাত জিনিসগুলি ধীরে ধীরে চালু করুন যাতে শিশুর কোনও ধরণের অ্যালার্জি না থাকে।শিশুকে কখনই পনির এবং চিনাবাদাম একসাথে দেবেন না।এছাড়াও,আপনার সন্তানকে আপনার সাথে টেবিলে বসতে দিন।এটি শৈশব থেকেই স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসকে উৎসাহিত করার একটি দুর্দান্ত উপায়।
৬ মাস পর শিশুকে কোন মশলা দিতে হবে?
ডাঃ তরুণ আনন্দের মতে লবণ,হলুদ,এলাচ ও পুদিনার মতো মশলা ৬ মাস পর শিশুকে দেওয়া যেতে পারে।এসব মশলা শিশুর রুচি বাড়াতে সাহায্য করে।শুধু তাই নয়,হলুদ এবং পুদিনার পুষ্টিগুণ শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করতে এবং সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতেও সাহায্য করে।
বি.দ্র: এই বিষয়বস্তু,পরামর্শ সহ, শুধুমাত্র সাধারণ তথ্য প্রদান করে।এটা কোনওভাবেই যোগ্য চিকিৎসা মতামতের বিকল্প নয়। আরও তথ্যের জন্য সর্বদা একজন বিশেষজ্ঞ বা আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন। প্রেসকার্ড নিউজ এর দায় স্বীকার করে না।
No comments:
Post a Comment