স্ত্রীকে ফ্রেঞ্চ ফ্রাই খেতে বাধা! ব্যক্তির বিরুদ্ধে লুক আউট সার্কুলার জারি, কী বলল হাইকোর্ট?
প্রেসকার্ড নিউজ ন্যাশনাল ডেস্ক, ২৫ আগস্ট: সন্তানের জন্ম দেওয়ার পর স্ত্রীকে ফ্রেঞ্চ ফ্রাই খেতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ। আর অভিযোগ নিয়ে সোজা পুলিশের দ্বারস্থ হন স্ত্রী। আমেরিকায় কর্মরত স্বামীর বিরুদ্ধে যৌতুকের জন্য নিষ্ঠুরতা ও হয়রানির অভিযোগ এনে একটি রিপোর্ট দায়ের করেন তিনি। এরপরেই লুক আউট সার্কুলার জারি করে পুলিশ। এর পাশাপাশি কর্ণাটক হাইকোর্টেও আবেদন করেন সেই স্ত্রী। শুনানির পর অভিযুক্ত ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলার তদন্তে স্থগিতাদেশ দিয়েছে কর্ণাটক হাইকোর্ট। বিচারপতি এম নাগপ্রসন্ন ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলি নগন্য বলে মনে করেন আর এই কারণেই তদন্তে স্থগিতাদেশ দেন। বিচারক তাঁর রায়ে বলেছেন, তদন্ত চালিয়ে যাওয়া আইনি প্রক্রিয়ার অপব্যবহার হবে।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, হাইকোর্ট বলেছে, "স্বামীর বিরুদ্ধে কোনও তদন্তের অনুমতি দেওয়া আইনের প্রক্রিয়ার অপব্যবহার হবে। এর পাশাপাশি এটি স্ত্রীর অভিযোগকে শক্তিশালী করবে যে তাকে কোনও সময়ে ফ্রেঞ্চ ফ্রাই খেতে দেওয়া হয়নি। তাই স্বামীর বিরুদ্ধে যাবতীয় তদন্ত স্থগিত রাখার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ দেওয়া উচিৎ।"
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কর্মরত মহিলার স্বামীকেও চাকরিতে ফেরার অনুমতি দেওয়া হয়, যখন তিনি আদালতকে আশ্বাস দেন যে, তিনি তদন্তকারী আধিকারিকদের সঙ্গে সহযোগিতা করবেন এবং প্রক্রিয়াটি এড়িয়ে যাবেন না। মহিলার স্বামী তাঁর আবেদনে তদন্তে স্থগিতাদেশ দেওয়ার অনুরোধ করেছিলেন। তিনি যুক্তি দিয়েছিলেন যে, অভিযোগটি খুবই সামান্য।
ওই ব্যক্তির আইনজীবী বলেছেন যে, তাঁর স্ত্রীর অভিযোগের পর, ব্যক্তির বিরুদ্ধে লুক আউট সার্কুলার (এলওসি) জারি করা হয়েছিল, যা তাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কাজে ফিরে যেতে বাধা দেয়। আদালত এর আগে ওই ব্যক্তির বাবা-মায়ের বিরুদ্ধে তদন্তে স্থগিতাদেশ দিয়েছিল, যাঁদের নামও অভিযোগে ছিল।
বেঙ্গালুরুর বাসনাগুড়ির বাসিন্দা এক মহিলা তার স্বামীর বিরুদ্ধে যৌতুকের হয়রানি এবং নিষ্ঠুরতার অভিযোগ এনে দক্ষিণ মহিলা থানায় একটি রিপোর্ট দায়ের করেছিলেন। এরপর কর্ণাটক হাইকোর্টে পিটিশন দাখিল করার সময় ওই মহিলা জানান, সন্তান জন্ম দেওয়ার পর তাঁর উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা হয়। স্ত্রীর ওজন বাড়বে বলে ভয়ে তার স্বামী তাকে ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, ভাত ও মাংস খেতে দেয়নি।
অপরদিকে আদালতে স্বামী জানান, স্ত্রীর গর্ভাবস্থায় তিনি আমেরিকায় ছিলেন। এ সময় তিনি ঘরের সব কাজ করতেন। স্ত্রী শুধু টিভি দেখতেন আর ফোনে কথা বলতেন। স্বামী আরও জানান, তিনি বাসন-কোসন ধুতেন, ঘর ঝাড়ু দিতেন এবং তারপর কাজে যেতেন।
বিচারপতি নাগপ্রসন্ন এই ক্ষেত্রে এলওসি ব্যবহারের সমালোচনা করেন এবং এটিকে আইনি প্রক্রিয়ার অপব্যবহার বলে অভিহিত করেন। আদালত বিস্ময় প্রকাশ করেছেন যে, পুলিশ একটি ছোট বিষয়ে স্বামীর বিরুদ্ধে লুক আউট নোটিশ জারি করেছে; এটা পুলিশের ক্ষমতার ব্যবহার নয়, মহিলার ইশারায় ক্ষমতার অপব্যবহার। অভিযোগের উদ্দেশ্য মনে হচ্ছে স্বামীর আমেরিকা যাওয়া বন্ধ করা। তিনি সিদ্ধান্তে পৌঁছান যে, অভিযোগটি তুচ্ছ এবং ওই ব্যক্তিকে তাঁর পেশাগত দায়িত্বের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যাওয়ার অনুমতি দেয়।
No comments:
Post a Comment