পাকিস্তানে মাঙ্কিপক্সের প্রকোপ! ভারতের হাসপাতাল-বিমানবন্দরে সতর্কতা
প্রেসকার্ড নিউজ ন্যাশনাল ডেস্ক, ১৯ আগস্ট: আফ্রিকার পর বিপজ্জনক মাঙ্কিপক্স ভারতের প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানে আঘাত হেনেছে। এ নিয়ে আমাদের দেশেও উদ্বেগ বাড়ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) মাঙ্কিপক্সের প্রাদুর্ভাবকে আন্তর্জাতিক জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। ডব্লিউএইচওর মহাপরিচালক ডঃ টেড্রোস আধানম ঘেব্রেয়াসুস বলেছেন যে, ১৫ আগস্ট, মাঙ্কিপক্স নিয়ে জরুরি কমিটির বৈঠক হয়েছিল। এই সময়ে এটি জানা গেছে যে, ১২টিরও বেশি দেশে শিশু এবং প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে মাঙ্কিপক্সের ঘটনা নিশ্চিত করা হয়েছে। ভাইরাসের নতুন রূপ ছড়িয়ে পড়ছে। পাশাপাশি, মহাদেশে খুব কম ভ্যাকসিন ডোজ উপলব্ধ রয়েছে।
বৈশ্বিক স্তরে মাঙ্কিপক্স নিয়ে বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে ভারত সরকারও পুরোপুরি সতর্ক। ইন্ডিয়া টুডে-র প্রতিবেদন অনুযায়ী, স্বাস্থ্য মন্ত্রক সূত্র জানিয়েছে, মাঙ্কিপক্স নিয়ে প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। এর আওতায় জরুরি ওয়ার্ড তৈরি এবং বিমানবন্দরে সতর্কতা বাড়ানোর মতো সতর্কতামূলক পদক্ষেপ করা হয়েছে। সূত্রের খবর, ফুসকুড়ি বা র্যাশ আছে, এমন রোগীদের চিহ্নিত করতে হাসপাতালগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে সরকার। তাদের জন্য আইসোলেশন ওয়ার্ড প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে। দিল্লীর ৩টি নোডাল হাসপাতাল (সফদরজং, লেডি হার্ডিঞ্জ মেডিক্যখল কলেজ এবং রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতাল) এর জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সন্দেহভাজন রোগীদের আরটি-পিসিআর এবং নাকের সোয়াব পরীক্ষা করা হবে। পাশাপাশি বিমানবন্দরকে প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করতে সতর্ক করা হয়েছে। এই আবহে, কংগ্রেস নেতা পৃথ্বীরাজ চভান অন্যান্য দেশে রিপোর্ট করা মাঙ্কিপক্সের ক্ষেত্রে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি মুম্বাই বিমানবন্দরে কঠোর পরীক্ষা এবং পৃথকীকরণের নিয়ম বাস্তবায়নের দাবীতে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডেকে চিঠি লিখেছেন। তিনি ভারতে এর বিস্তার বন্ধে যথাযথ পদক্ষেপ করার জন্য সরকারের কাছে আবেদন করেছেন।
চভান এক্স পোস্টে বলেছেন, "মাঙ্কিপক্স আমাদের প্রতিবেশী পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছে। আমাদের ব্যবস্থা নিতে হবে। আমি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চিঠি লিখে এমন দেশ থেকে আগত সমস্ত যাত্রীদের জন্য মুম্বাই বিমানবন্দরে কঠোর পরীক্ষা এবং পৃথকীকরণের নিয়ম বাস্তবায়নের দাবী জানিয়েছি, যেখানে মাঙ্কিপক্স সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকি রয়েছে।
উল্লেখ্য, আফ্রিকা সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন সম্প্রতি ঘোষণা করেছে যে, মাঙ্কিপক্সের প্রকোপ সর্বজনীন স্বাস্থ্য জরুরি স্থিতি। এতে মৃত্যু হয়েছে ৫ শতাধিক। ভাইরাসের বিস্তার রোধে আন্তর্জাতিক সাহায্যের আহ্বান জানানো হয়েছে। অপরদিকে, পাকিস্তানে এখনও পর্যন্ত অন্তত ৩ জন মাঙ্কিপক্স ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে।
এই আবহে সরকার বিমানবন্দরে পরীক্ষামূলক ব্যবস্থা জোরদার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পাকিস্তানে মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত রোগী পাওয়া, এশিয়ায় এই রোগের কড়া নাড়া এবং খুব সহজে ছড়িয়ে পড়তে পারে। তিনটি রোগীই উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত খাইবার-পাখতুনখোয়া প্রদেশের, যেটি আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী একটি বিদ্রোহ-প্রবণ এলাকা। এই রোগী কোন ধরনের মাঙ্কিপক্সে ভুগছেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়। এটি কি সেই একই ফর্ম যা প্রথম আফ্রিকার বাইরে সুইডেনে নিশ্চিত হয়েছিল!
No comments:
Post a Comment