সরকারি হাসপাতালে ঢুকে তৃণমূল নেতার তাণ্ডব! কর্তব্যরত চিকিৎসক-নার্সদের মারধর, খুনের হুমকি
নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদা, ১৯ আগস্ট: কর্তব্যরত ডাক্তার এবং নার্সদের বেধড়ক মারধরের অভিযোগ তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, খুনের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ। মালদার হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে এই ঘটনাটি ঘটেছে। অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঘটনার জেরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
সম্প্রতি কলকাতার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় শিউড়ে উঠেছে গোটা দেশ। ঘটনার প্রতিবাদে আন্দোলনে নেমেছেন চিকিৎসক থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ। হাসপাতালে রাত্রিকালীন ডিউটিতে থাকা ডাক্তার এবং নার্সদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। আর এই আবহেই মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নাইট ডিউটিতে থাকা চিকিৎসক এবং নার্সদের ওপর হামলা চালানোর অভিযোগ এলাকার তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে।
অভিযোগ, অভিনাশ দাস নামে ওই তৃণমূল নেতা রবিবার রাত এগারোটা নাগাদ হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালের নার্সিং স্টেশনে ঢুকে হঠাৎ করে কর্তব্যরত নার্সদের দিকে অশ্লীল ভাষায় আক্রমণ করেন। অশ্রাব্য গালিগালাজ শুরু করেন নার্সদের। এমনকি সেখানে উপস্থিত মেডিক্যাল অফিসার প্রভাকর সাহা, ঘটনার প্রতিবাদ করলে তাঁকেও বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। পাশাপাশি তাঁদের খুনের হুমকি দেন ওই নেতা। আরও অভিযোগ, নার্সদের দিকে তিনি শারীরিক নিগ্রহ করতে তেড়ে যান। যদিও সেখানে উপস্থিত চিকিৎসক এবং জিডিএ কর্মীরা ওই নেতাকে আটকে দেন।
এরপরই খবর দেওয়া হয় হরিশ্চন্দ্রপুর থানায়। ঘটনার খবর পেয়ে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার আইসি সঙ্গে বিশাল পুলিশ বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং অভিযুক্ত তৃণমূল নেতাকে গ্রেফতার করেন। আর এই ঘটনার পরে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালেও কী চিকিৎসক স্বাস্থ্য-কর্মীদের কোনও নিরাপত্তা নেই? ঘটনায়আতঙ্কে রয়েছেন নার্স ও চিকিৎসকরা। ইতিমধ্যেই হাসপাতালের পক্ষ থেকে হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রভাকর সাহা বলেন, 'অভিযুক্ত ব্যক্তি এক রোগীর খোঁজ করতে এসে আমার সঙ্গে অশালীন ভাষায় কথা বলতে শুরু করেন। উপস্থিত নার্সদেরকেও অস্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। আমি এর প্রতিবাদ করলে আমাকে মারধর করা হয়। এরপর সেখানে উপস্থিত নার্সদেরও তিনি মারতে যান। আমরা তাতে বাধা দিই। এরপরই ওই ব্যক্তি আমাদের খুনের হুমকি দেয়। আমরা নিরাপত্তার অভাব বোধ করছি।'
উল্লেখ্য, অভিনাশ দাস নামে ওই তৃণমূল নেতাকে হরিশ্চন্দ্রপুরের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী এবং হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীন হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তাজমুল হোসেনের সঙ্গে আরজিকর কাণ্ডের প্রতিবাদ মিছিলে এক সঙ্গে হাঁটতে দেখা গিয়েছে। এতেই সরব হয়েছেন বিরোধীরা। তাদের দাবী, এলাকায় শাসক দলের মস্তানদের পিছনে দলের মন্ত্রীর হাত রয়েছে। অবিলম্বে ওই নেতার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা না নিলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন এলাকার বিরোধীরা। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকা জুড়ে।
অন্যদিকে তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি সঞ্জীব গুপ্তার সাফাই, অভিযুক্ত দলের কেউ কিনা জানিনা। তবে, যে দলেরই হোক কঠিন শাস্তি হবে। আইন আইনের পথেই চলবে।'
No comments:
Post a Comment