'নবান্ন অভিযান' ঘিরে ধুন্ধুমার! লাঠিচার্জ-কাঁদানে গ্যাস, রণক্ষেত্র শহর
কলকাতা: আরজি করে চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় আছড়ে পড়েছে প্রতিবাদের ঝড়। এই আবহে আজ মঙ্গলবার নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছে ছাত্র সমাজ। আর সেই 'নবান্ন অভিযান' ঘিরেই ধুন্ধুমার কাণ্ড। এই অভিযান ঘিরে কড়া প্রস্তুতি আগেই নিয়েছিল পুলিশ প্রশাসন। পাশাপাশি এর পেছনে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অভিযোগও তুলেছিল পুলিশ। এদিন অভিযান রুখতে কড়া পদক্ষেপ করতে দেখা যায় পুলিশকে। তথ্য অনুযায়ী, নবান্ন অভিযানের সময় আন্দোলনকারীরা ব্যারিকেড ভেঙে দেয়। এমনকি উড়ে আসে ইট-পাথর। পাল্টা লাঠিচার্জ করে পুলিশ। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের শেলও ফাটানো হয়। অনেক বিক্ষোভকারীকে আটকও করা হয়েছে।
এই নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে, হাওড়া ব্রিজ আগেই সিল করে দেওয়া হয় এবং মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবন সহ অনেক নেতার নিরাপত্তা বাড়ানো হয়। বিক্ষোভ থামাতে অনেক রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। বিক্ষোভকারীরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগ দাবী করছেন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর অফিসে উপস্থিত ছিলেন যখন বিক্ষোভকারীরা ব্যারিকেড ভেঙে পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছুঁড়তে শুরু করে। হাওড়া পুলিশ জানিয়েছে যে, আগে থেকেই সংঘর্ষের সম্ভাবনা ছিল তাই সহিংসতা-বিরোধী যানবাহন মোতায়েন করা হয়েছিল। দুপুর ১টা নাগাদ হাওড়া ব্রিজে প্রথম জলকামান ব্যবহার করা হয়। এরপর সাঁতরাগাছির কাছে বিক্ষোভকারীরা নিয়ন্ত্রণের বাইরে যেতে শুরু করলে কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায় পুলিশ।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার এই অভিযান বেআইনি বলে অভিহিত করেছিল এবং বলেছিল যে, বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। নবান্ন অভিযানের এই পর্বে পুলিশকর্মীদের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়। বিক্ষোভকারীদের নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ১৯টি স্থানে ব্যারিকেড দিয়েছিল। সচিবালয়ের সামনের ব্যারিকেড ভেঙে দেয় আন্দোলনকারীরা। পরে পুলিশ জলকামান ব্যবহার করে এবং লাঠিচার্জও করে। সর্বাত্মক চেষ্টা করা হয় এই অভিযান রুখতে।
এদিকে মমতা সরকারের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন বিরোধী নেতা শুভেন্দু অধিকারী। আন্দোলনকারীরা যাতে সচিবালয়ে পৌঁছাতে না পারে সেজন্য পুলিশ সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়েছিল। তবে কিছু শিক্ষার্থী সেখানে পৌঁছাতে সক্ষম হয় এবং পুলিশ তাদের হেফাজতে নেয়।
উল্লেখ্য, গত ৯ আগস্ট আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের সেমিনার হলে এক তরুণী চিকিৎসকের মৃতদেহ পাওয়া যায়। ময়নাতদন্তে জানা যায়, ধর্ষণের পর নির্মমভাবে খুন করা হয়েছে ওই চিকিৎসককে। এ ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ নিয়ে সারাদেশের চিকিৎসকদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। প্রতিবাদে পথে নেমেছেন সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে তারকারাও। বর্তমানে সিবিআই এই মামলার তদন্ত করছে।
No comments:
Post a Comment