'এই মামলা থেকে সরে আসুন', আরজি কর কাণ্ডে আইনজীবী কপিল সিব্বলকে অনুরোধ অধীর রঞ্জনের
কলকাতা: কলকাতার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় বাংলা সহ দেশের অনেক জায়গায় লাগাতার বিক্ষোভ চলছে। এই বিষয়ে মমতা সরকার শুধু বিরোধীদেরই নিশানায় নেই, তৃণমূলের অন্দরেও এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হচ্ছেন অনেকে। এই ঘটনায় ফের রাজ্য সরকারকে নিশানা করলেন কংগ্রেস নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী।
সুপ্রিম কোর্টে মমতা সরকারের তরফে এই মামলার প্রতিনিধিত্ব করছেন বিখ্যাত আইনজীবী কপিল সিব্বল। অধীর রঞ্জন চৌধুরী তাঁকে অনুরোধ করেছেন, এই মামলা থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য। তিনি বলেন, 'কপিল সিব্বল একজন বড় আইনজীবী, এই মামলা থেকে তাঁর নাম প্রত্যাহার করে নেওয়া উচিৎ, এটাই আমার অনুরোধ। বাংলার সাধারণ জনগণের ক্ষোভের কথা বিবেচনা করে সিব্বল জির উচিৎ সরে আসা।'
সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে অধীর রঞ্জন চৌধুরী বলেন, 'কপিল সিব্বল একজন বিখ্যাত আইনজীবী। ভারতের আইন জগতেও তিনি একজন বড় তারকা। আমি তাঁকে অনুরোধ করব, আপনি এই মামলা থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে নিন। বাংলার সাধারণ মানুষের আবেগ ও ক্ষোভের কথা ভেবেই আমি এ কথা বলছি। অপরাধীদের পাশে না থাকাই ভালো হয় কারণ আপনি একসময় লোকসভার নির্বাচিত প্রতিনিধি ছিলেন। এখনও রাজ্যসভার সদস্য।'
তিনি আরও বলেন, 'আরজি কর হাসপাতালের ঘটনার পর সাধারণ মানুষের মধ্যে যে ক্ষোভ রয়েছে, তা আগ্নেয়গিরির মতো বেরিয়ে আসছে, এটা দেখে আপনার (সিব্বল) ভাবা উচিৎ। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী চিকিৎসকের মৃত্যুর পর তাঁর পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন এবং তাঁদের মন জয় করার চেষ্টা করতে গিয়ে বলেন, আপনারা ১০ লক্ষ টাকা পেয়ে যাবেন, চুপ হয়ে যান। আপনাকেও (কপিল সিব্বল) তো কম রাশি দেওয়া হবে না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনেক টাকা আছে, যা আমাদের ট্যাক্সের টাকা।'
সোশ্যাল মিডিয়ার কথা উল্লেখ করে অধীর রঞ্জন চৌধুরী বলেন, 'সিব্বল সাহেব, সোশ্যাল মিডিয়ায় এখন যা দেখা যাচ্ছে, তা দেখে আমার খারাপ লাগছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় লোকেরা আপনার বিরুদ্ধে খারাপ লিখছে, আমার ভালো লাগছে না। আপনি একসময় আমাদের দলের নেতা, মন্ত্রী ও মানবসম্পদমন্ত্রী ছিলেন। আপনি ছোটখাটো মন্ত্রী তো ছিলেন না। এসবের পরিপ্রেক্ষিতে আপনারা এ মামলা থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে নেওয়া উচিৎ আপনার কাছে এটাই আমার অনুরোধ।'
কলকাতার আরজি কর হাসপাতালে ৯ আগস্ট তরুণী চিকিৎসকের মৃতদেহ পাওয়া যায়। চিকিৎসকের শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল এবং তাঁর রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। তদন্তে জানা যায়, ওই চিকিৎসককে ধর্ষণের পর খু করা হয়েছে। পুলিশ এই ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করে।
এদিকে এই নারকীয় ঘটনায় চিকিৎসকদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে এবং তারা ধর্মঘট শুরু করেন। কলকাতা হাইকোর্ট মামলার তদন্ত পুলিশের কাছ থেকে সিবিআই-এর কাছে হস্তান্তর করে। এর পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্ট এই ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করেছে, যার শুনানি হয় মঙ্গলবার ও বৃহস্পতিবার। সেখানে সরকারের পক্ষে লড়ছেন আইনজীবী কপিল সিব্বল।
No comments:
Post a Comment