মিলল নির্যাতনের প্রমাণ, তারপরে খুন! আরজি করের মৃত ছাত্রীর প্রাথমিক পোস্টমর্টেম রিপোর্ট প্রকাশ
নিজস্ব প্রতিবেদন, ১০ আগস্ট, কলকাতা : আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে ছাত্রী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগে এল এক সাক্ষীর বয়ান। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টও এসেছে। সেখানে যৌন নির্যাতনের প্রমাণ পাওয়া যায়। ঘটনার তদন্ত চলে রাতভর। মধ্যরাতে একজনকে আটক করে লালবাজারে নিয়ে যাওয়া হয়। এ ঘটনায় একাধিক ব্যক্তি জড়িত থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
প্রাথমিক পোস্টমর্টেম রিপোর্ট অনুযায়ী, যৌনাঙ্গে ক্ষত ছিল এবং দুই চোখ দিয়েই রক্ত বের হচ্ছিল। মুখ, ঠোঁট, পেট, হাত, পা, এমনকি যৌনাঙ্গে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। মুখ, চোখ দিয়ে রক্তক্ষরণ, নখ ভাঙা, যৌনাঙ্গে রক্তপাত, পায়ে ও পেটে আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। প্রাথমিক রিপোর্টে তরুণীর সঙ্গে নির্যাতনের চিত্র স্পষ্ট।
ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী, ঘটনাটি ঘটেছে রাত ৩টা থেকে ভোর ৬টার মধ্যে। ছাত্রীর গলার ডান পাশের একটি হাড় ভেঙে গেছে বলে জানা গেছে। গলায় হাত রেখে শ্বাসরোধ করার চেষ্টা করা হলে সাধারণত এই ধরনের ফাটল দেখা দেয়। এক্ষেত্রেও তেমন কিছু ঘটেছে কিনা তাও খতিয়ে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা।
পুলিশকে দেওয়া প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ান অনুযায়ী, যখন ছাত্রীর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়, তখন তার পরনে ছিল গোলাপি রঙের কুর্তি। যৌনাঙ্গের কাছে একটি ভাঙা চুলের ক্লিপ পড়ে ছিল। মৃতদেহের পাশে পড়ে ছিল ভাঙা চশমা। মৃতদেহ পড়ে ছিল নীল রঙের গদিতে। এরপর আরজি কর সূত্রে জানা যায়, ওই নীল গদিতে রক্তের দাগ এবং প্রচুর মৃত চুলও পাওয়া গেছে। এ থেকে বোঝা যায় ধস্তাধস্তি হয়েছিল।
পরিবারের অভিযোগ, তাদের মেয়েকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। এ ঘটনায় ধর্মঘটের ঘোষণা দিয়েছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। মৃত ছাত্রীর বাবা-মাকে ফোন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিহত মেয়ের বাবা-মা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানান, "আমাদের মেয়ের মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত হোক।"
এদিন মুখ্যমন্ত্রীর গঠিত ১১ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করেন বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য। তিনি প্রশ্ন তোলেন, "মমতার তদন্ত কমিটিতে ইন্টার্ন কেন? ইন্টার্ন নির্জন বাগচী আরজি কর-এর টিএনসিপি ইউনিটের সদস্য বলে জানা যায়। এই কমিটির আরও এক ইন্টার্ন, সরিফ হাসান, একজন সক্রিয় তৃণমূল সদস্য।" তদন্তের নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।
রাতে এ ঘটনা তদন্তে এসআইটি গঠন করা হয়েছে। ভারপ্রাপ্ত যুগ্ম সিপি ক্রাইম মুরলীধর শর্মার সভাপতিত্বে সিট গঠন করা হয়েছে এবং তদন্ত শুরু হয়েছে। পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত খুনের মামলা দায়ের করেছে। হাসপাতালের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।
No comments:
Post a Comment