সপ্তাহান্তে সরকারি অফিসে মধুচক্রের আসর! আপত্তিকর অবস্থায় ধরা পড়ল যুগল
নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদা, ১৯ অগাস্ট: আরজি কর কাণ্ডের জেরে এমনিতেই ব্যাকফুটে রাজ সরকার। সেই আবহেই সরকারি দফতরে মধুচক্রের আসরের পর্দা ফাঁস, তাও আবার নিরাপত্তারক্ষর নেতৃত্বে। হাতে নাতে ধরলেন গ্ৰামবাসীরা। ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য মালদার হরিশ্চন্দ্রপুরে। হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ভূমি সংস্কার দফতরে হাতেনাতে মধুচক্রের আসর ধরে দিলেন গ্রামবাসীরা। অভিযোগ, ওই দফতরের নাইট গার্ডের নেতৃত্বেই দীর্ঘদিন ধরে দফতরের মধ্যেই চলছিল মধুচক্রের আসর।
হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ভূমি সংস্কার দফতরের কার্যালয়, গ্রামের একপ্রান্তে নির্জন এলাকায়। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, এই সুযোগেই প্রতি সপ্তাহের শনি-রবিববার করে সন্ধ্যে নামলেই অফিস চত্বরের মধ্যে থাকা হাইমাস্ট ল্যাম্পের আলো বন্ধ করে দিতেন ওই নাইট গার্ড। আর অন্ধকারের সুযোগে বাইরে থেকে যুগলরা ওই নাইট গার্ডের মদতে দফতরের ঘরে প্রবেশ করতেন। তারপরেই চলতো অশালীন কাজকর্ম। রবিবার যথারীতি রাত সাড়ে আটটা নাগাদ হঠাৎ করে দফতরের সামনের লাইট বন্ধ হয়ে যায়। এরপরই গ্রামের কিছু ছেলে লক্ষ্য করেন বাইরে থেকে যুবক-যুবতী দফতরে প্রবেশ করেন নাইট গার্ডের মদতে। এরপরই গ্রামবাসী সেখানে ছুটে যান। ওই প্রেমিক-যুগলকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পান তারা। মদ্যপানের পাশাপাশি চলছিল অশালীন কাজ।
গ্রামবাসীদের চিৎকার চেঁচামেচিতে আরও লোক জমায়েত হয়ে যায় সেখানে। সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হয় হরিশ্চন্দ্রপুর থানায়। খবর পেয়ে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী এলাকায় ছুটে আসে। উত্তেজিত গ্রামবাসীদের সঙ্গে সেখানে বচসায়ও জড়িয়ে পড়েন পুলিশকর্মীরা। এরপরে কার্যত উত্তেজিত জনতার কাছ থেকে নাইটগার্ড এবং ওই দুই যুবক-যুবতীকে উদ্ধারের পাশাপাশি আটক করে তাদের থানায় নিয়ে আসে হরিশ্চন্দ্রপুর পুলিশ। ধৃত নাইট গার্ডের নাম বিশু মণ্ডল (৩৮), আরেক যুবকের পরিচয় পাওয়া যায় বাবুল মণ্ডল (২৫) হিহেবে। দুজনেরই বাড়ি দক্ষিণ রামপুর এলাকায়।
উল্লেখ্য, একদিকে যখন কলকাতার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ করে নৃশংস ভাবে খুনের ঘটনায় ফুঁসছে সকলেই। প্রতিবাদের পাশাপাশি নারী সুরক্ষা ও কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। রাজ্য সরকারকে কাঠগড়ায় তোলা হচ্ছে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগ দাবী করছেন বিরোধীরা। সেই আবহেই সরকারি দফতরে এমন ন্যক্কারজনক ঘটনা প্রকাশ্যে আসায় চরম অস্বস্তিতে পড়েছে জেলা প্রশাসন। ভূমি সংস্কার দফতরের রেভেনিউ অফিসার দেবরাজ মুখোপাধ্যায় বলেন, 'ঘটনাটা কী ঘটেছে, খোঁজ নিয়ে দেখছি। উপর মহলে জানানো হয়েছে। যেমন নির্দেশ আসবে সেই অনুযায়ী কাজ হবে এবং আইন আইনের পথেই চলবে।'
No comments:
Post a Comment