ত্বকের রোগ আক্রান্ত মায়েদের স্ত-ন্যপান করানো কী উচিৎ?
প্রেসকার্ড নিউজ,লাইফস্টাইল ডেস্ক,৯ আগস্ট: মা ও শিশুর সুস্বাস্থ্যের জন্য বুকের দুধ পান করানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ।বুকের দুধ পান করানোর মাধ্যমে শিশুর শারীরিক ও মানসিক চাহিদা পূরণ হয়।মায়ের দুধে প্রোটিন,স্বাস্থ্যকর চর্বি,ভিটামিন এবং খনিজ রয়েছে যা শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।মায়ের দুধে অ্যান্টিবডি এবং অন্যান্য উপাদান থাকে।এর সাহায্যে নবজাতক শিশুকে রোগ ও সংক্রমণ থেকে রক্ষা করা যায়।বুকের দুধ পান করানো শিশুকে অনেক ধরনের সংক্রমণ, যেমন- ডায়রিয়া, শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ ইত্যাদি থেকে রক্ষা করতে পারে।বুকের দুধ পান করানো শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশকে উৎসাহিত করে,যা শিশুদের বুদ্ধিমত্তার স্তর অর্থাৎ IQ স্তরকে উন্নত করে।মায়ের দুধ সহজে হজম হয়।বুকের দুধ শিশুদের কোষ্ঠকাঠিন্য,গ্যাস,অ্যাসিডিটি এবং পেট ব্যথা ইত্যাদি সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।কিছু গবেষণা দেখায় যে বুকের দুধ পান করালে শিশুদের ক্যান্সার এবং অ্যালার্জির ঝুঁকি কম থাকে।
যদিও বুকের দুধ পান করানো একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া,কিন্তু যখন মায়ের একজিমা বা সোরিয়াসিসের মতো চর্মরোগ থাকে তখন তার জন্য এটি একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়।চর্মরোগের ক্ষেত্রে মায়ের শরীর থেকে শিশুরও সংক্রমণ হতে পারে বলে আশঙ্কা করেন মা।এমন পরিস্থিতিতে বুকের দুধ পান করানোর জন্য কিছু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিৎ।এই বিষয়ে আরও ভালো তথ্যের জন্য লখনউয়ের ঝালকারিবাই হাসপাতালের স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ দীপা শর্মার মতামত জেনে নেওয়া যাক।
চর্মরোগে আক্রান্ত মায়েদের বুকের দুধ পান করানোর সময় কিছু বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা উচিৎ -
ত্বক পরিষ্কার ও শুষ্ক রাখার চেষ্টা করুন।প্রতিবার খাওয়ানোর পরে হালকা সাবান এবং জল দিয়ে স্তনবৃন্ত এবং স্তন পরিষ্কার করুন এবং আলতো করে শুকিয়ে নিন।
ত্বকে শুষ্কতা থাকলে নারকেল তেল বা অলিভ অয়েলের মতো প্রাকৃতিক তেল ব্যবহার করতে পারেন।শুষ্ক ত্বকে চুলকানি এবং ফুসকুড়ি হওয়ার প্রবণতা বেশি,তাই এটি এড়ানো উচিৎ।
বুকের দুধ পান করানোর সময় ঠান্ডা কম্প্রেস ব্যবহার করুন। এটি ব্যথা এবং ফোলা কমাতে সাহায্য করে।চর্মরোগের উপসর্গ ঠাণ্ডা সেঁক লাগালে কমানো যায়।
একাধিক অবস্থানে বুকের দুধ পান করানো ব্যথা এবং জ্বালা কমাতে পারে।এর কারণে স্তনবৃন্ত ও স্তনে সমান চাপ পড়ে না।
ত্বকের কোনও সংক্রমণ হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে অ্যান্টি-বায়োটিক বা অ্যান্টি-ফাঙ্গাল ওষুধ ব্যবহার করুন। মনে রাখবেন যে এই ওষুধগুলি বুকের দুধে কী প্রভাব ফেলবে, এর জন্য একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।
চর্মরোগের ক্ষেত্রে সুষম খাবার খাওয়া জরুরি।আপনার খাদ্যতালিকায় ভিটামিন এ,সি,ডি এবং ই যুক্ত খাবার অন্তর্ভুক্ত করুন।এগুলো ত্বকের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।
বুকের দুধ পান করানোর সময় চর্মরোগের ক্ষেত্রে কী করা উচিৎ নয়?
আপনার যদি চর্মরোগ থাকে তবে হঠাৎ করে বুকের দুধ পান করানো বন্ধ করবেন না।এটি আপনার এবং আপনার শিশু উভয়ের জন্যই সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।সঠিক সময়ে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
যদি ত্বকে চুলকানি হয় তবে এটি আঁচড়ানো এড়িয়ে চলুন। এটি ত্বকে ক্ষত সৃষ্টি করতে পারে এবং সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায়।
ভুল অবস্থান স্তনবৃন্তে অতিরিক্ত চাপ দিতে পারে এবং ব্যথা বা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায়।সঠিক অবস্থানে শিশুকে বুকের দুধ পান করান।
সুগন্ধি লোশন ব্যবহার করবেন না।কারণ এগুলো ত্বককে আরও সংবেদনশীল করে তুলতে পারে।
ত্বকে লালভাব,ফোলাভাব,ফোঁড়া বা সংক্রমণের অন্যান্য লক্ষণ থাকলে তা উপেক্ষা করবেন না।সঠিক সময়ে চিকিৎসা না হলে অবস্থার অবনতি হতে পারে।
No comments:
Post a Comment