ক্রেতা সেজে সোনার দোকানে হাত সাফাই ২ বাংলাদেশি মহিলার! গ্ৰেফতার
নিজস্ব সংবাদদাতা, উত্তর ২৪ পরগনা, ২৩ সেপ্টেম্বর:ভিন দেশের মহিলা চোরদের দৌরাত্ম্যে ঘুম উড়েছিল সোনার দোকানের মালিকদের। পাসপোর্টের মাধ্যমে ভারতে এসে ক্রেতা সেজে চুরি করে ফের বাংলাদেশের ফিরে যাচ্ছিল মহিলা চোরেরা। ক্রেতা সেজে গিয়ে দক্ষতার সঙ্গে তারা হাতসাফাই করত। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। একটি সোনার দোকানে ঢুকে গহনা চুরি করতেই হাতেনাতে ধরে ফেললেন মালিক। পুলিশের হাতে গ্রেফতার দুই ভিনদেশী মহিলা চোর। রবিবার বিকালে ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার গোপালনগর থানার অন্তর্গত বনগাঁ চাকদা সড়কের কালিবাড়ি বাজারের একটি সোনার দোকানে।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম বিলকিস মণ্ডল ও জোহরা বেগম। বাড়ি বাংলাদেশের সাতক্ষীরা এলাকায়। তারা পাসপোর্টের মাধ্যমে ভারতে এসে চুরির ঘটনা ঘটিয়ে ফের বাংলাদেশে ফিরে যেত। পেট্রাপোল বন্দর এলাকায় একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকত তারা। ধৃতদের কাছ থেকে দুটি বাংলাদেশি পাসপোর্ট, সোনার বালা, দুটি আংটি, দুটি রূপোর গহনা এবং বাংলাদেশী ও ভারতীয় টাকা উদ্ধার হয়েছে।
গোপালনগর, হাবড়া, বারাসাত-সহ রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় সোনার দোকান গিয়ে গয়না চুরি করছিল তারা।ধৃতদের জেরা করে তাদের দলের আর সদস্যদের সন্ধান শুরু করেছে পুলিশ।
কীভাবে চুরি করত তারা? পুলিশ জানিয়েছে, এদের একটি বড় গ্রুপ রয়েছে। বয়স্ক এবং বাচ্চা নিয়ে এরা ঘুরে বেড়ায়। সুযোগ বুঝে তাদের দলের সদস্যরা কখনও ফাঁকা দোকানে কিংবা ভিড় দোকানে বাচ্চাদের নিয়ে কিংবা বয়স্ক মহিলাদের নিয়ে ঢুকে পড়ে। তারপর ব্যস্ত হয়ে দামি হার, চুরি, কানের দুল, আংটি দেখতে চাইত। দোকানদারকে বলতো বিল করুন। সেই ব্যস্ততার মধ্যে হাতের কৌশলে সোনার গহনা তারা সরিয়ে ফেলতো এবং সঙ্গে থাকা বাচ্চাদের কোমরে অথবা নিজেদের কোমরে গুঁজে ফেলতো। তারপরেই বেপাত্তা হয়ে যেত।
সম্প্রতি বারাসত, হাবড়া সহ একাধিক এলাকায় সোনার দোকানে এই অভিনব পদ্ধতিতে চুরির ঘটনা ঘটেছিল।অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল সোনার দোকানদাররা। একাধিক থানায় অভিযোগ জানিয়েছিলেন তাঁরা। সিসিটিভি ফুটেজ থেকে মহিলার ছবি উদ্ধার করে পুলিশ দীর্ঘদিন ধরে খোঁজাখুঁজি করছিল। রবিবার সন্ধ্যায় গোপালনগর থানা এলাকায় দুজন ধরা পড়তেই রহস্য উন্মোচন করল গোপালনগর থানার পুলিশ।
গোপালনগর স্বর্ণ ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক অজয় বান বলেন, 'এদের একাধিক গ্রুপ রয়েছে। কেউ মেয়ের বিয়ের জন্য গহনা কিনতে এসেছে বলে। কেউ জিনিসপত্র দেখার পরে মেয়ে আসছে বলে চলে যায়, সঙ্গে নিয়ে চলে যায় সোনার গহনা। এদের বড় একটা চক্র রয়েছে। বেশ কয়েক মাস আগে আমার নিজের দোকান থেকেও এভাবে বেশ কয়েকটি সোনার জিনিস হাওয়া গিয়েছিল। এবার নিশ্চয় পুলিশ এদের চক্রের সকলকেই ধরতে পারবে।'
সোমবার সকালে ধৃত দুই মহিলাকে পাঁচদিনের পুলিশ হেফাজতে চেয়ে আদালতে তোলা হলে বনগাঁ মহকুমা আদালত তিনদিনের পুলিশ হেফাজত দেয়।
No comments:
Post a Comment