সন্ধিক্ষণে তোপধ্বণি-ডালা দৌড়! ৫০০ বছরের পুরনো ছাতনা রাজবাড়ির দুর্গা পুজো, শুরু প্রস্তুতি
দেবনাথ মোদক ,বাঁকুড়া, ২৭ সেপ্টেম্বর: সময়ের সঙ্গে বদলেছে জীবনযাত্রা। সেই রাশভারী বিষয় এখন আর নেই। তবে এলাকার মানুষ জনসমীহ করে এলাকায়। পুজোর সময় সাধারণ মানুষের জন্য বাড়ির দরজাও খোলা থাকে। রাজা নেই। নেই রাজ্যপাট। তবুও প্রাচীন রীতি নীতি মেনে আজও পুজো হয়। দেবী দুর্গা পূজিতা হন। এক সময়ের ছত্রিনানগর বর্তমানের ছাতনা রাজবাড়িতে চলছে সেই পুজোর প্রস্তুতি।
রাজবাড়ি সূত্রে খবর, বিষ্ণুপুর মল্লরাজ বাড়ির সঙ্গে হুবুহু মিল রেখে এখানেও প্রতিমা তৈরি করা হয়। এমনকি পুজোপাঠও হয় একইভাবে। স্থানীয়দের কথায়, পাঁচ শতকেরও বেশি আগে বিষ্ণুপুর মল্লরাজা ও ছাতনার তৎকালীন রাজার মধ্যে দৈব সন্ধি হয়েছিল। শর্ত অনুযায়ী এখানে দুর্গা পুজো শুরু হয়।
ছাতনা রাজবাড়ি সূত্রে জানানো হয়েছে, এই পুজো প্রায় সাড়ে পাঁচশো বছরের পুরনো। আনুমানিক তিনশো বছর আগে বর্তমান মন্দিরটি তৈরি করেছিলেন রানী আনন্দ কুমারী। সময়ের ভারে সেই মন্দিরের অনেকটা অংশই ভেঙে যায়। সেই মন্দির সংস্কারের কাজ হয়েছে। সেই পুরনো আদল রেখেই মন্দিরটি সংস্কার হয়েছে।
এখানে দেবীর বোধন হয় জীতাষ্টমীতে। প্রতি বছর নতুন কাঠামোয় দেবীর মূর্তি তৈরি হয়। নাট মন্দিরেই মূর্তি তৈরির কাজ চলে। এবারও একই ভাবে মূর্তি তৈরি হচ্ছে। তবে মূর্তির আদল বদল হয়নি। একই ধাঁচে লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক, গণেশকে সঙ্গে নিয়ে মা দুর্গাকে দেখা যাবে। এক চালার দেবীর মূর্তি দেখা যায়।
সন্ধিক্ষণে আজও তোপধ্বণির প্রথা চালু রয়েছে। এছাড়াও দেবী দুর্গার কাছে নৈবেদ্য নিয়ে ভক্তদের ডালা দৌড় হয়। প্রতিমা বিসর্জনের সময় রাজপরিবারের কূল দেবী বাসুলীকে নিয়ে মন্দির পর্যন্ত দৌড়ানোর অনুষ্ঠান আছে। খাড়া দৌড় ঘিরেও মানুষের ব্যাপক উৎসাহ লক্ষ্য করা যায়। সাধারণ মানুষও প্রতি বছর অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে থাকেন এই পুজোর জন্য।
No comments:
Post a Comment