চিকিৎসার গাফিলতিতে প্রসূতির মৃত্যু! ডাক্তারের ফাঁসি চাইছেন স্বামী
নিজস্ব সংবাদদাতা, মুর্শিদাবাদ, ১১ সেপ্টেম্বর: আরজি কর হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় উত্তাল সারা দেশ। সহপাঠীর সঙ্গে হওয়া নৃশংস ঘটনার প্রতিবাদে আন্দোলন করছেন জুনিয়র চিকিৎসকেরা। সেই আবহেই চিকিৎসার গাফিলতিতে রোগী মৃত্যুর অভিযোগ ঘিরে চাঞ্চল্য। ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার সকালে মুর্শিদাবাদের কান্দি মহকুমা হাসপাতালে। মৃত মহিলার নাম আবিদা সুলতানা। বাড়ি বীরভূমের কুলদিহা গ্রামে।
মৃতার পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে হঠাৎই পেটে ব্যথা ওঠে প্রসূতি আবিদা সুলতানার। বাড়ির লোকজন তাঁকে কান্দি মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে আসেন চিকিৎসার জন্য। মৃতার পরিবারের অভিযোগ, আবিদাকে রাত আটটার সময় হাসপাতালে ভর্তি করানো হলেও ডাক্তার তাঁকে দেখতে আসেন রাত নয়টার সময়। সেই সময় তাঁকে একটি ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়। ইঞ্জেকশন দেওয়ার এক ঘন্টার মধ্যেই ফের পেটে ব্যথা শুরু হয় ওই প্রসূতির। তখন পরিবারের লোকজন বারবার ডাক্তার এবং নার্সদের ডাকলেও তাঁরা একবারও তাঁকে দেখতে আসেননি বলে অভিযোগ। বুধবার ভোররাতে মৃত্যু হয় ওই প্রসূতির।
এরপরই চিকিৎসার গাফিলতিতে প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন পরিবারের সদস্যরা। হাসপাতাল চত্বরে তারা তুমুল বিক্ষোভ শুরু করেন। ঘটনার খবর পেয়ে কান্দি থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী হাসপাতালে পৌঁছায় এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
মৃতের স্বামী আনিসুর রহমান বলেন, ‘ডাক্তারবাবু প্রথমেই দেখে বলেছিলেন, স্ত্রীয়ের কিছুই হয়নি। যদি কিছুই না হবে তাহলে সে কীভাবে মারা গেল? এর পরিপ্রেক্ষিতে আমি তাঁদের ফাঁসি চাইছি, যে ডাক্তাররা অন্যায়ভাবে আমার স্ত্রীকে খুন করেছে।'
মৃতার পরিবারের এক মহিলার অভিযোগ, ‘আবিদার যখন পেটে ব্যথা হচ্ছিল তখন বারবার ডাক্তার এবং নার্সকে ডাকার পর নার্সরা এসে বলে তাঁর কিছুই হয়নি এবং সে নাটক করছে। এমনকি আমাদের বহরমপুরে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়েছিল।’
এই প্রসঙ্গে কান্দি মহকুমা হাসপাতালের সুপার রাজেশ সাহা ক্যামেরার সামনে কিছু না বলতে চাইলেও তিনি জানান, ওই মহিলা পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। হাসপাতালে ভর্তির পরই তাঁকে লেবার রুমে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখানে চিকিৎসার পর তিনি কিছুটা সুস্থ বোধ করেন। কিন্তু ভোরের দিকে তার মৃত্যু হয়।’
তিনি জানান, মৃত্যুর কারণ জানতে পুলিশের তরফে দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য মৃতের পরিবারকে দিতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তারা রাজি হননি। দেহটি নিয়ে তারা হাসপাতাল ছেড়ে চলে গেছেন। এই মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানের জন্য একটি তদন্ত কমিটি তৈরি করা হয়েছে।
No comments:
Post a Comment