নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদা, ৩০ সেপ্টেম্বর: সাত বছর আগে পর্যন্ত স্ত্রী-সন্তান নিয়ে সুখের সংসার ছিল কৃষ্ণ দাসের। দুর্গা-সহ বিভিন্ন প্রতিমা তৈরী করে ভালো মতোই সংসার চালাতেন কৃষ্ণ দাস। কিন্তু হঠাৎ অঘটন। স্ট্রোক করে মৃত্যু হয় কৃষ্ণ দাসের। আর এতেই মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে কৃষ্ণের স্ত্রী বাসন্তী দাসের। বুঝে উঠতে পারছিলেন না কী করে ছেলে মেয়েদের নিয়ে সংসার চালাবেন! তবে, সাহস দেখালেন গৃহবধূ; দশ ভূজার মতো হাতে তুলে নিলেন খড়, মাটি, রঙ। শুরু করলেন প্রতিমা তৈরীর কাজ। এমনই এক দুর্গার জীবন সংগ্রামের খোঁজ মিলল মালদা থানার মঙ্গলবাড়ী গ্রাম পঞ্চায়েতের নলডুবি এলাকায়।
মালদা থানার মঙ্গলবাড়ী গ্রাম পঞ্চায়েতের নলডুবি এলাকার বাসিন্দা কৃষ্ণ দাস দুর্গা প্রতিমা তৈরী করে সাড়া জাগিয়েছিলেন এলাকায়। প্রতিমা তৈরীর আয়ে পরিবার নিয়ে সুখেই ছিলেন তিনি। হঠাৎ বিপর্যয়। সাত বছর আগে স্ট্রোক করে মৃত্যু হয় কৃষ্ণ দাসের। স্বামীকে হারিয়ে সংসারের হাল ধরেন স্ত্রী বাসন্তী দাস। দশ ভূজার মতো হাতে তুলে নেন খড়, মাটি,রঙ। শুরু করেন প্রতিমা তৈরীর কাজ। প্রথমে একটি দুর্গার বরাত পেয়েছিলেন বাসন্তী দাস। বর্তমানে বেশ কয়েকটি দশভূজার মূর্তি তৈরী করেন তিনি। আর এখন তো তাঁর ছেলেও হাত লাগান মূর্তি তৈরীর কাজে। গত সাত বছর ধরে অক্লান্ত পরিশ্রম করে বিভিন্ন মূর্তি বানিয়ে তিন মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। ছেলেকে লেখাপড়া শিখিয়ে বড় করে মূর্তি বানানোর কাজও শিখিয়েছেন।
দিন-রাত এক করে ছেলেদের মত পরিশ্রম করে নির্দিষ্ট সময়ে দেবী দুর্গার মূর্তি তিনি পৌঁছে দেন বিভিন্ন পুজো মণ্ডপে। কোনও প্রতিমায় থাকে থিমের ছোঁয়া, কোনওটি আবার সাজিয়ে তোলেন সাবেকিয়ানায়। তবে দশভূজার মৃন্ময়ী মূর্তি তৈরি করে নজর কেড়েছে দুই হাতের এই দুর্গা।এখন খুব ভালো করেই সংসার চলে বাসন্তী দাসের।আগামী দিনেও এই কাজ চালিয়ে যাবেন বলে জানান তিনি। আর যদি মূর্তি তৈরী শেখার ইচ্ছা কারও থাকে, তাঁকেও শেখাবেন বলে জানান বাসন্তী দাস।
No comments:
Post a Comment