দেবীকে বাসি ভোগ দেওয়াই রীতি! গীতিকার পুলক বন্দ্যোপাধ্যায়ের‌ বাড়ির দুর্গা পুজোয় আজও অটুট প্রাচীন রীতি - press card news

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Sunday 29 September 2024

দেবীকে বাসি ভোগ দেওয়াই রীতি! গীতিকার পুলক বন্দ্যোপাধ্যায়ের‌ বাড়ির দুর্গা পুজোয় আজও অটুট প্রাচীন রীতি


নিজস্ব সংবাদদাতা, হাওড়া, ২৯ সেপ্টেম্বর: তাঁর সুর-গান এখনও দোলা দিয়ে যায় অনেক বাঙালির মনে। প্রখ্যাত সেই গীতিকার পুলক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে আজও সাড়ম্বরে অনুষ্ঠিত হয় দুর্গা পুজো। খুবই বিখ্যাত উত্তর হাওড়ার সালিখা হাউসের পুজো। এবারেও পুরোদমে চলছে পুজোর প্রস্তুতি। 


এই বাড়িতেই থাকতেন গীতিকার পুলক বন্দ্যোপাধ্যায়। এই বাড়িতে বসেই তিনি লিখেছেন বহু কালজয়ী গান। সেই সময়ে পুজোর অ্যালবামের হিট গানগুলো এখানে বসেই লেখা। পুলক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পূর্বপুরুষ তৎকালীন জমিদার রাধামোহন বন্দ্যোপাধ্যায় এখানে দুর্গা পুজোর সূচনা করেন। নন্দ কুমারের ফাঁসির সময় কলকাতা ছেড়ে এই বাড়িতে চলে আসেন। তারাপর শুরু হয় পুজো।


পুলক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলে এই পুজো জমজমাট হয়।পুজোর সময় আসতেন বহু বিখ্যাত মানুষ। উত্তম কুমার, বাপি লাহিড়ী, মান্না দে, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, আরতি মুখোপাধ্যায় সহ বহু জ্ঞানীগুণির সমাগম হত এই বাড়িতে। বৈঠক খানায় বসতো গানের আসর। আজও সেই স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে বলে জানান পুলক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইপো সুস্মিত বন্দ্যোপাধ্যায়।


তিনি আরও বলেন, "এই বাড়িতে বসেই শেষ গান লিখেছিলেন তার কাকা; 'আমায় একটু জায়গা দাও মায়ের মন্দিরে বসি'। ১৯৯৯ সালের ৭ই সেপ্টেম্বর গঙ্গায় ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেন। তাঁর মৃত্যুর পর পুজোর জৌলুস কমেছে। ঠিকমতো রক্ষণাবেক্ষণ হয় না সালিখা হাউসে। বৃষ্টির জল জমে থাকে উঠোনে।" তবুও সুস্মিত বন্দ্যোপাধ্যায় এই পুজোর ঐতিহ্য বজায় রেখে চলেছেন। সবরকম রীতি-নীতি মেনে পুজো হয়ে আসছে প্রায় ২৯০ বছর ধরে।


বাড়ির ঠাকুর দালানে তৈরি হয় প্রতিমা। কুমারী পুজো ও ফল বলি হয়। দশমীর আগের রাতে মায়ের বিশেষ ভোগ তৈরী হয়, যা বাসি ভোগ নামে পরিচিত। পান্তা ভাত, চালতা দিয়ে মুসুর ডাল, ল্যাটা মাছ পোড়া থাকে এই ভোগে। এই ভোগ খেয়ে মা পাড়ি দেন শ্বশুরবাড়ি। দশমীতে গঙ্গায় নিজেদের ঘাটে প্রতিমা নিরঞ্জন হয়। 


এই বাড়ির নতুন প্রজন্মের সদস্য সম্পদ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, এই বাড়ির সাথে তাঁর কাকা দাদু পুলক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্মৃতি আজও জড়িয়ে। তাঁকে চাক্ষুস না করলেও তাঁর লেখা গানের মাধ্যমে তিনি আজও সবার মনে রয়ে গেছেন। তাই এই বাড়ির পুজোর ঐতিহ্য বজায় রেখে পুজো করে যাবেন তারা।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad