আরজি কর কাণ্ডে প্রতিবাদের শাস্তি? দুই ছাত্রীকে ক্লাস থেকে বের করে দেওয়ার নালিশ
নিজস্ব সংবাদদাতা, বাঁকুড়া, ২২ সেপ্টেম্বর: মেডিক্যাল কলেজের গণ্ডি ছাড়িয়ে 'থ্রেট কালচারে'র অভিযোগ এবারে সাধারণ ডিগ্রী কলেজেও। বাঁকুড়া সারদামনি মহাবিদ্যালয়ের এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদ কর্মসূচী ও মিছিলে অংশ নেওয়ায় দুই ছাত্রীকে তাঁর ক্লাস থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক তথা তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শ্যামল সাঁতরার বিরুদ্ধে। এটা থ্রেট কালচারের নামান্তর, এমনই বলছেন অনেকে। পাল্টা ছাত্রীদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক দলের নামে চাঁদা তোলার অভিযোগ। বাঁকুড়া সারদামনি মহাবিদ্যালয়ের এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই যথেষ্ট উত্তেজনা ছড়ায় কলেজ চত্বরে।
উল্লেখ্য, আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে সারা রাজ্যের সঙ্গে প্রতিবাদে সামিল বাঁকুড়াও। অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতারি ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবীতে বারবার সরব হয়েছেন এই জেলার শিক্ষার্থী-সহ সমাজের সর্বস্তরের মানুষ। এমনই প্রতিবাদ মিছিলে হাঁটার অভিযোগে থার্ড সেমিস্টার ও ফিফথ সেমিস্টারের দুই ছাত্রীকে তাঁর ক্লাস থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে বাঁকুড়া সারদামনি মহাবিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের প্রধান তথা তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শ্যামল সাঁতরার বিরুদ্ধে। ওই ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার সকাল থেকে কলেজের গেটের বাইরে অবস্থান কর্মসূচী শুরু করেন ছাত্রীদের একাংশ।
শিক্ষা যেখানে গণতান্ত্রিক অধিকার সেখানে একজন অধ্যাপক, ঘটনাচক্রে এক সময় যিনি রাজ্যের মন্ত্রী ছিলেন তিনি এই ধরণের অগণতান্ত্রিক কাজ করেন কী করে? সে নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বিষয়টি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে জানালেও তাঁকে পাশে পাননি বলে ছাত্রীদের অভিযোগ।
এই ঘটনায় ছাত্রীদের পাশে দাঁড়িয়েছে বামেরা। বাম যুবনেত্রী মৌমিতা ব্যানার্জী অন ক্যামেরা প্রাক্তন মন্ত্রী ও অধ্যাপক শ্যামল সাঁতরাকে ক্ষমা চাওয়ার দাবী জানিয়েছেন।
অভিযোগ অস্বীকার করে অধ্যাপক শ্যামল সাঁতরার দাবী, নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ওই ছাত্রীদের ক্লাসে আসতে নিষেধ করেছি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই তাঁরা ক্লাসে আসবে। বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কলেজের সুষ্ঠ পরিবেশ বজায় রাখা আমার দায়িত্ব।' তাঁর কথায়, ''ওই দুই ছাত্রী কলেজে ক্লাসের মধ্যে একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের হয়ে লিফলেট ছড়িয়ে অন্যান্য ছাত্রীদের কাছ থেকে চাঁদা তুলে উত্ত্যক্ত করত। ছাত্রীরা লিখিতভাবে অভিযোগ করেছিল আমাকে। ক্লাসে সুস্থ পঠনপাঠনের স্বার্থে দুই ছাত্রীকে ক্লাস করতে নিষেধ করা হয়েছে। ওই দুই ছাত্রী নিজেদের শুধরে নিতে পারলে আবার ক্লাসে আসবে।''
এই বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দেবব্রত মুখার্জী বলেন, ছাত্রীরা আমাকে বিষয়টি জানালে তাদের তা মিটিয়ে নিতে বলি। তবে ওই অধ্যাপকের শাসক যোগ ও প্রভাবশালী তত্ত্ব বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।
No comments:
Post a Comment