হাসপাতালের নিরাপত্তা-সুরক্ষা নিয়ে এবার নির্দেশিকা জারি নবান্নের
নিজস্ব প্রতিবেদন, ১৯ সেপ্টেম্বর, কলকাতা : মুখ্য সচিব মনোজ পন্থ রাজ্যের প্রতিটি সরকারি হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজের নিরাপত্তা-সুরক্ষার জন্য কী কী করতে হবে তার একটি তালিকা তৈরি করে স্বাস্থ্য সচিবের কাছে পাঠিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার বিকেলে স্বাস্থ্য ভবনে নবান্নের পক্ষ থেকে এই নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে প্রতিটি মেডিক্যাল কলেজ ও সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসক, নার্স ও চিকিৎসা কর্মীদের নিরাপত্তা-সুরক্ষার জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে দশটি পয়েন্ট উল্লেখ করে তা দ্রুত বাস্তবায়নের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জুনিয়র চিকিৎসকদের দাবীর পরিপ্রেক্ষিতে ইতিমধ্যেই কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে সরিয়ে দিয়েছে রাজ্য। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের শীর্ষ দুটি পদেও পরিবর্তন আনা হয়েছে। তবে মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের নিরাপত্তা-সুরক্ষার দাবীতে কর্মবিরতিতে অনড় আন্দোলনরত চিকিৎসকরা।
বুধবার নবান্নে মুখ্যসচিবের সঙ্গে বৈঠকে তারা হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজের নিরাপত্তা-সুরক্ষার বিষয়টিও তুলে ধরেন। তাদের কথায়, "গত ৯ আগস্ট যেভাবে একজন মেডিক্যাল ছাত্রীকে ধর্ষণ ও খুন করা হয়েছে, পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ও সুরক্ষা না দিলে তারা কোন ভরসায় কাজে ফিরবেন।"
সেই বিবেচনায় নবান্নের এই পদক্ষেপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য সচিবের কাছে মুখ্য সচিবের পাঠানো নির্দেশনায় স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, নিরাপত্তা-সুরক্ষা ও পরিকাঠামোগত সমস্যা সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।
স্বাস্থ্য দফতরে নবান্নের পাঠানো নির্দেশিকা অনুসারে, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব প্রতিটি সরকারি হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজে পর্যাপ্ত সংখ্যক সিসিটিভি, পানীয় জলের ব্যবস্থা, টয়লেট, বিশ্রাম কক্ষ এবং পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করতে হবে। প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পরিকাঠামোও দ্রুত গড়ে তুলতে হবে।
রাজ্য ইতিমধ্যেই অবসরপ্রাপ্ত ডিজি সুরজিত কর পুরকায়স্থকে সরকারি হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজগুলির নিরাপত্তা খতিয়ে দেখার জন্য বিশেষ দায়িত্ব দিয়েছে।
নিরাপত্তা ও সুরক্ষার জন্য কেন্দ্রীয় স্তরে একটি হেল্পলাইন নম্বর চালু করতে হবে। প্রতিটি হাসপাতালে একটি বিশেষ অভিযোগ কমিটি প্রস্তুত করতে হবে। কমিটি অভিযোগ খতিয়ে দেখবে। প্রতিটি হাসপাতালে বিশেষ অ্যালার্ম সিস্টেম চালু করতেও বলা হয়েছে। যাতে কেউ কোনও বিপদে পড়লে তাৎক্ষণিক সাহায্য পেতে পারে। কোথায় কতগুলি বেড প্রয়োজন, কতগুলি রয়েছে তার একটি বিশদ তালিকা তৈরি করে দ্রুত রূপান্তর করা দরকার। চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের শূন্য পদের তালিকা তৈরি করে দ্রুত পূরণ করতে হবে।
আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকদের দাবী নবান্নের নির্দেশিকায় উল্লেখ করা হয়েছে। এখন দেখা যাক সরকারের এই নির্দেশনা মেনে জুনিয়র ডাক্তাররা কাজে ফেরেন কি না।
No comments:
Post a Comment