ভূত ছাড়ানোর নামে নাবালককে বেধড়ক মারধর, আটক ওঝা
নিজস্ব সংবাদদাতা, উত্তর ২৪ পরগনা, ২৫ সেপ্টেম্বর: ভূত ছাড়ানোর নামে এক নাবালককে গাছের ডাল দিয়ে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠল ওঝার বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার রাতে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার গোপালনগর মামুদপুর এলাকায়। যুক্তিবাদী মঞ্চের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে ওই নাবালককে রাতেই উদ্ধার করেছে। বুধবার যুক্তিবাদী মঞ্চের পক্ষ থেকে গোপালনগর থানায় ওই ওঝার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হলে পুলিশ তাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।
পুলিশ ও যুক্তিবাদী মঞ্চের মাধ্যমে জানা গিয়েছে, ১৫ বছর বয়সী ছেলে উৎপল সর্দার সম্প্রতি মাছ ধরতে গিয়ে পড়ে যায়। মাথায় আঘাত লেগে তার নার্ভের সমস্যা হয়। মাঝেমধ্যে চিৎকার চেঁচামেচি করছিল, ভুল বকছিল। মঙ্গলবার পরিবারের লোকেরা তাকে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে আনলে চিকিৎসকরা কলকাতা রেফার করে। এরপর পরিবারের লোকজন কলকাতার হাসপাতালে না নিয়ে গ্রামে ফিরিয়ে নিয়ে যায় এবং মামুদপুরে অভিযুক্ত ওঝার কাছে নিয়ে যায়। অভিযোগ, তারপরেই ওই ওঝা 'ভূতে ধরেছে' একথা বলে লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটায় তাকে। এই খবর পেয়ে যুক্তিবাদী মঞ্চের লোকজন ন'হাটা পুলিশ ফাঁড়িতে খবর দেয়। পুলিশ নাবালককে উদ্ধার করে নিয়ে আসে।
ওঝার কথায়, 'ছেলেটা দোষ পেয়েছিল, ওকে ভুতে ধরেছিল তাই ওকে ঝারিয়ে ঠিক করছিলাম। আগেও অনেক মানুষকে ভূতে ধরেছিল আমি এভাবেই তাদের ঝাড়িয়ে ভূত তাড়িয়ে দিয়েছি।' ওই নাবালকের পরিবারের লোকজনকে এদিন বাড়ি পাওয়া যায়নি, ছেলেকে নিয়ে কোথাও গিয়েছে।
যুক্তিবাদী মঞ্চের সম্পাদক প্রদীপ সরকার বলেন 'গতকাল রাতের ঘটনা। খবর আসে মামুদপুর গ্রামে এক ওঝা ভূত ছাড়ানোর নাম করে ১৫ বছরের একটি নাবালকের ওপর নির্মম অত্যাচার করছে, গায়ে গরম জল ঢেলে দেওয়া হচ্ছে। ছেলেটির স্নায়ু রোগের সমস্যা হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। বনগাঁ হাসপাতাল থেকে ট্রান্সফার করলে বাড়িতে এনে স্থানীয় ডাক্তার দেখায়। তিনিও কলকাতা নিয়ে যেতে বলেছিলেন। তা না করে বাড়ির লোকজন ওঝার কাছে নিয়ে যায়। বাচ্চাটির ওপর অমানবিক অত্যাচার চলছিল। আমরা সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে খবর দিই। পুলিশ তৎপরতার সঙ্গে বাচ্চাটিকে উদ্ধার করেছে। বাচ্চার জীবনটা বাঁচিয়েছে পুলিশ। আমরা আইনত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশের কাছে আবেদন জানিয়েছি।'
No comments:
Post a Comment