সন্দীপ ঘোষকে সপাটে চড়, শোরগোল আদালত চত্বরে
কলকাতা: দীর্ঘ ১৬ দিন জিজ্ঞাসাবাদের পর সোমবার সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন আরজি কর হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। আলিপুরের বিশেষ আদালত মঙ্গলবার তাঁকে ৮ দিনের সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে। আর এবারে সপাটে চড় খেলেন সেই সন্দীপ ঘোষ। প্রাক্তন অধ্যক্ষকে সপাটে চড় মারলেন এক বিক্ষোভকারী। এই ঘটনায় শোরগোল পড়ে যায় আদালত চত্বরে।
এদিন সকালে নিজাম প্যালেস থেকে আলিপুরের বিশেষ আদালতে নিয়ে যাওয়া হয় সন্দীপ ঘোষকে। সেই সময় তার গাড়ি ঘিরে 'চোর-চোর' স্লোগান ওঠে। শুধু তাই নয়, আদালত চত্বরেও তাঁকে উদ্দেশ্য করে স্লোগান দেওয়া হয়। গাড়ি ঘিরে শুরু হয় হইচই। যদিও সিবিআই আধিকারিকরা নিদিষ্ট সময়ই সন্দীপকে আদালতে হাজির করান। এদিকে বাইরে ক্রমাগত সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলতে থাকে। আর আদালত থেকে বের করে আনার সময়ই এক বিক্ষোভকারী সন্দীপকে সপাটে চড় মারেন।
গত ১৬ আগস্ট থেকে টানা ১৫ দিন সিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে হয় সন্দীপকে। মাঝে গত শনি-রবি বাদ দিয়ে সোমবার ফের তাঁকে সিজিও কমপ্লেক্সে তলব করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সন্ধ্যায় সেখানে থেকে নিজাম প্যালেসে নিয়ে যান তদন্তকারী আধিকারিকরা। এরপরেই তাঁদের তরফে জানানো হয় সন্দীপ ঘোষকে গ্ৰেফতার করা হয়েছে। তাঁর সঙ্গে আরও তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। এই তিনজন হলেন বিপ্লব সিনহা, আফসার আলি এবং সুমন হাজরা। সিবিআই তাদের জন্য ১০ দিনের হেফাজতের আর্জি জানিয়েছিল। তবে বিচারক সন্দীপ সহ সকলকেই ৮ দিনের সিবিআই হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
ধৃতদের মধ্যে বিপ্লবের সংস্থা নানা হাসপাতালে চিকিৎসার সরঞ্জাম সরবরাহ করত। তাঁর বাড়ি এবং সংস্থার অফিসে আগেই হানা দিয়েছিল সিবিআই। অন্যদিকে সুমন হাজরার ওষুধের দোকানেও তল্লাশি অভিযান চালায় সিবিআই এবং আফসার ছিলেন সন্দীপের নিরাপত্তারক্ষী।
সন্দীপের বিরুদ্ধে চিকিৎসার জৈব বর্জ্য দুর্নীতি, সরকারি টাকা নয়ছয়, নির্মাণের জন্য আইন ভেঙে ঠিকাদার নিয়োগ-সহ একাধিক আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ আনেন আরজি করের প্রাক্তন ডেপুটি সুপার আখতার আলি। সেই সূত্রে আরজি কর হাসপাতালের মর্গ থেকে শুরু করে অধ্যক্ষের দফতরে পৌঁছায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। অবশেষে সোমবার একসঙ্গে চারজন গ্রেফতার হন।
উল্লেখ্য, কলকাতার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে গত ৯ আগস্ট তরুণী চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হয়। তাঁকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার পর থেকেই ওই হাসপাতালের তৎকালীন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে থাকে। ধর্ষণ-খুন কাণ্ডে পুলিশ একজনকে গ্রেফতার করে। এরপর হাইকোর্টের নির্দেশে বর্তমানে এই মামলার তদন্ত করছে সিবিআই।
এর পাশাপাশি হাইকোর্টের নির্দেশে আরজি কর হাসপাতালে দুর্নীতির অভিযোগেরও তদন্ত করছে সিবিআই। এই দুই বিষয়েই সিবিআইয়ের আতশ কাঁচের তলায় রয়েছেন সন্দীপ ঘোষ। আর্থিক দুর্নীতির মামলার গত ২৪ আগস্ট সিবিআই এফআই করে। সূত্রের খবর, এই মামলাতেই ২৫ আগস্ট তাঁর বাড়িতেও হানা দেয় সিবিআই। এর পাশাপাশি বেশ কয়েকদিন ধরেই তাঁকে এইসব বিষয়ে জেরা করছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। শেষমেষ গ্ৰেফতার ও ৮ দিনের সিবিআই হেফাজতে সন্দীপ।
No comments:
Post a Comment