"থানায় পাল্টেছে প্রমাণ, ভুয়ো রেকর্ড তৈরি", আরজি কর মামলায় বিস্ফোরক দাবী সিবিআইয়ের
নিজস্ব প্রতিবেদন, ২৫ সেপ্টেম্বর, কলকাতা : আরজি কর কাণ্ডে চাঞ্চল্যকর দাবী করল সিবিআই। বুধবার সিবিআই দাবী করেছে, থানায় প্রমাণ পাল্টানো হয়েছে। এর আগেও পুলিশের বিরুদ্ধে আরজি কর কাণ্ডে প্রমাণ কারচুপির অভিযোগ ওঠে। এই ঘটনায় টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই।
এবার সেই টালা থানায় বড় অভিযোগ এসেছে। অভিযোগ রয়েছে, থানার ভেতরে প্রমাণ পরিবর্তন করে মিথ্যা রেকর্ড তৈরি করা হয়েছে। বুধবার বিশেষ সিবিআই আদালতে এই তথ্য জানিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
উল্লেখ্য, গত ৯ আগস্ট আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে এক মহিলা চিকিৎসকের মৃতদেহ পাওয়া যায়। মৃতদেহের ময়নাতদন্তের পর ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয়কে। পরে এই মামলায় ষড়যন্ত্রের অভিযোগে কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ ও টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলকেও গ্রেফতার করা হয়।
টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডল আদালতে জামিনের আবেদন করলে সিবিআই বিভিন্ন যুক্তি দিয়ে জামিনের বিরোধিতা করে। সেসব তর্কের একপর্যায়ে নথিপত্র জাল করার অভিযোগ ওঠে।
তদন্তকারীদের দাবী, টালা থানার ভিতরে জাল রেকর্ড তৈরি করা হয়েছে। সিবিআইয়ের দেওয়া নথিতে, পয়েন্ট ৪-এ লেখা আছে, 'মিথ্যা রেকর্ড তৈরি বা পরিবর্তন করা হয়েছে' অর্থাৎ ভুল রেকর্ড তৈরি বা পরিবর্তন করা হয়েছে।
সিবিআইয়ের দাবী, পরিস্থিতিগত প্রমাণ এবং আরজি কর মামলায় অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে এই তথ্য সামনে এসেছে।
টালা থানার ভূমিকা নিয়ে শুরু থেকেই প্রশ্ন উঠেছে। কেন সঠিক সময়ে এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়নি? পুলিশ কেন তাড়াহুড়ো করে মৃতদেহ দাহ করল? এমন অনেক প্রশ্ন উঠেছে।
বুধবার আদালতে তার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করে প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডল দাবী করেন, ঘটনার দিন তিনি তার দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেছেন। ৯ আগস্ট সকাল সাড়ে ৯টায় ঘটনার খবর পেয়ে আমরা সকাল সাড়ে ১০টায় ঘটনাস্থলে পৌঁছাই।
তার যুক্তি হল তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ গঠন করা হলেও এটি জামিনযোগ্য ধারা, তাই তাকে জামিন দেওয়া উচিত, কিন্তু তার যুক্তি দাঁড়াতে পারেনি। সিবিআইয়ের আবেদনে সন্দীপ ঘোষ এবং অভিজিৎ মণ্ডলকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জেল রিমান্ড দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে সন্দীপ ঘোষের জামিনের আবেদনও খারিজ হয়ে যায়।
আরজি কর ছাত্রী চিকিৎসক খুন মামলায় তাকে আদালতে হাজির করা হয়। তার বিরুদ্ধে প্রমাণ মিথ্যে করার চেষ্টা এবং দেরিতে এফআইআর দায়ের করার অভিযোগ আনা হয়েছে। দুইজনের নারকো এবং পলিগ্রাফ পরীক্ষা করা হবে কি না তা নিয়ে বুধবার শুনানি হওয়ার কথা ছিল, তবে সেন্ট্রাল ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরির কলকাতা অফিসের একজন বিশেষজ্ঞ মামলার কাজে কোনও রাজ্যে গেছেন। এ কারণে বুধবার তিনি আদালতে আসতে পারেননি।
No comments:
Post a Comment