ভারতকে চাপে রাখতে খালিস্তানিদের সাথে হোয়াইট হাউসের বৈঠক
প্রেসকার্ড নিউজ ওয়ার্ল্ড ডেস্ক, ২৪ সেপ্টেম্বর: মোদীর সফরের ঠিক আগে খালিস্তানিদের সাথে হোয়াইট হাউসের বৈঠক করলেন বাইডেন প্রশাসন ও গোয়েন্দা কর্তারা। বিশেষজ্ঞদের দাবি এই বৈঠক একটি উস্কানি, অপমান এবং বিশ্বাসের বিশ্বাসঘাতকতা।
বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের আগে ভারতবিরোধী খালিস্তানপন্থিদের সঙ্গে মার্কিন প্রশাসনের এই বৈঠককে গুরুত্বপূর্ণ ভাবা হচ্ছে। শনিবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শিখ কোয়ালিশন, দ্য শিখ আমেরিকান লিগাল, ডিফেন্স এডুকেশন ফান্ডসহ একাধিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা দেখা করেন মার্কিন প্রশাসনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে।
এতে আরও বলা হয়েছে, হোয়াইট হাউসের মূল চত্ত্বরে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের কর্মকর্তা ও শিখ নেতাদের এমন বৈঠক এই প্রথম। তবে নির্দিষ্টভাবে তাদের মধ্যে ঠিক কোন পর্যায়ে আলোচনা হয়েছে সেটা জানা যায়নি। তবে এই বৈঠক নিয়ে শিখ নেতারা যথেষ্ট সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
বৈঠক শেষে শিখ নেতা প্রিতপাল সিং নিজের এক্স হ্যান্ডলে লিখেন, ‘শিখ আমেরিকানদের সুরক্ষায় সতর্কতার জন্য মার্কিন কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ। আমাদের সম্প্রদায়ের সুরক্ষায় আরও কিছু করার জন্য আমরা যুক্তরাষ্ট্রের আশ্বাসে আস্থা রাখছি। স্বাধীনতা এবং ন্যায়বিচার অবশ্যই জয়ী হতে হবে’।
গত বছরের নভেম্বরে ভারতীয় বংশোদ্ভূত কানাডার নাগরিক খালিস্তান আন্দোলনের এক নেতাকে হত্যায় ভারতের বিরুদ্ধে জড়িত থাকার অভিযোগ এনেছিলেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। এরপর খালিস্তানপন্থি আরেক নেতাকে হত্যাচেষ্টায় ভারতের জড়িত থাকার তথ্য-প্রমাণ হাজির করে যুক্তরাষ্ট্র।
ওই সময় যুক্তরাজ্যের সংবাদপত্র ফিন্যান্সিয়াল টাইমস জানায়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডার দ্বৈত নাগরিকত্ব ধারণকারী পান্নুনকে হত্যার একটি চক্রান্ত ব্যর্থ করেছে বাইডেন প্রশাসন।
এদিকে মোদীর মার্কিন সফরের আগে আরো অস্বস্তি বাড়িয়ে তুলেছে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত খালিস্তানপন্থিরা। যা নিয়ে বিপাকে পড়েছে দিল্লী।
গত ১৯ সেপ্টেম্বর পান্নুন হত্যার ষড়যন্ত্র মামলায় ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালকে তলব করেছ যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত। অজিত ডোভালের সঙ্গে তলব করা হয়েছে ভারতের রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিটিক্যাল উইংয়ের (র) প্রাক্তন প্রধান সামন্ত গোয়েল, ওই সংস্থার এজেন্ট বিক্রম যাদব ও ভারতীয় ব্যবসায়ী নিখিল গুপ্তকে। ২১ দিনের মধ্যে তাদের এই সমনের জবাব পাঠানোর নির্দেশ দেন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ নিউইয়র্ক জেলা আদালত।
জানা গেছে, পান্নুনের আইনজীবী অ্যাটর্নির মাধ্যমে মামলাটি দায়ের করেছেন মার্কিন ফেডারেল কোর্টে। মামলার মাধ্যমে পান্নুন ক্ষতিপূরণ চেয়েছে ভারত সরকারের থেকে। গতবছর পান্নুনের বিরুদ্ধে হত্যার ছক কষেছিল ভারত। এমন অভিযোগে এই ক্ষতিপূরণের দাবী করেছে এই খালিস্তানি নেতা।
ব্যস্ততা এবং নিয়ন্ত্রণ একই আমেরিকান মুদ্রার দুটি দিক। শিখ বিদ্রোহের কার্ড ভারতের বিরুদ্ধে একটি নিয়ন্ত্রণ কৌশল হিসাবে খেলা হচ্ছে, এমনকি ওয়াশিংটন ভারতের উত্থানে সহায়তা করছে, এটিকে সেমিকন্ডাক্টর সাপ্লাই চেইনের একটি অংশ করে তুলেছে।
খালিস্তানি বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলির সাথে বাইডেন প্রশাসনের বৈঠকের বিবরণ বেশ বিরক্তিকর। রয়টার্স প্রথম রিপোর্ট করেছিল, উল্লেখ করেছে যে আমেরিকান ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা রুদ্ধদ্বার বৈঠকটি শুরু করেছিলেন এবং ব্যবস্থা করেছিলেন যেখানে মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন এবং এখানে সবচেয়ে আকর্ষণীয় অংশ, “কর্মকর্তারা শিখ আইনজীবীদের একটি দলকে ব্রিফ করেছেন।
প্রভাব নিয়ে চিন্তা করার জন্য এক মুহূর্ত বিরতি দিন। খালিস্তানি বিচ্ছিন্নতাবাদীরা যারা ভারতকে টুকরো টুকরো করার হুমকি দেয় এবং ভারতের সীমানার মধ্যে একটি বিদ্রোহ আন্দোলনকে পৃষ্ঠপোষকতা করে, খালিস্তান ইস্যুতে ভারত ও আমেরিকান রাষ্ট্রের মধ্যে যে গোপনীয় কথোপকথন হয়েছে তার উপর লোডাউন দেওয়া হয়েছে।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে, বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসের অভ্যন্তরে কথিত বৈঠকটি হয়েছিল। দুদিন পরেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পা রাখেন মোদি।
No comments:
Post a Comment