আর্থিক অনটনে মাঝপথেই থামল স্নাতকোত্তরের পড়া! মাটির প্রদীপ গড়ে সংসার চলছে মহেশের - press card news

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Tuesday 29 October 2024

আর্থিক অনটনে মাঝপথেই থামল স্নাতকোত্তরের পড়া! মাটির প্রদীপ গড়ে সংসার চলছে মহেশের


নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদা, ২৯ অক্টোবর: আর্থিক অনটন, তাই মাঝপথেই ছেড়ে দিতে হয়েছে স্নাতকোত্তর স্তরের পড়া। সংসার সামাল দিতে বছর দুই ধরে মাটির প্রদীপ ও মাটির নানা সামগ্রী তৈরি করে জীবন অতিবাহিত করছেন পুরাতন মালদার ২৩ বছর বয়সী যুবক মহেশ পাল। বালিয়া নবাবগঞ্জে বাড়ির এক চিলতে জায়গায় ছোট্ট একটি কারখানায় এসব তৈরি করেন তিনি। সামনেই আলোর উৎসব দীপাবলী, তাই এখন নাওয়া-খাওয়া ভুলে প্রদীপ তৈরির কাজে ব্যস্ত মহেশ।


মহেশের বয়স যখন সাত বছর তখন তাঁর বাবা সুকুমার পাল মারা যান। সেই সময় মা চঞ্চলা দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে সংসার সামাল দিতে কাপড়ের দোকানে কাজ করতেন। কিন্তু তাতেও তিনজনের সংসার চলত না। ফলে আট বছর বয়সে মহেশকেও ইটভাটায় কাজ করতে হত। পরে কাপড়ের দোকানে কাজ করেছেন তিনি। এভাবেই কাজ করেও লেখাপড়া চালিয়ে গিয়েছেন। 


পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মহেশ মাধ্যমিকে দ্বিতীয় বিভাগে পাশ করলেও উচ্চ মাধ্যমিকে ৮০ শতাংশ নম্বর নিয়ে পাশ করেছিলেন। তারপরে বাংলা অনার্স নিয়ে গৌড় কলেজে ভর্তি হন। অনার্সেও প্রায় ৮০ শতাংশ নম্বর নিয়ে পাশ করে মালদা কলেজে বাংলা বিষয়ে স্নাতকোত্তর পড়তে ভর্তি হন ২০২২ সালে। কিন্তু মাঝপথেই থেমে যায় পড়াশোনা, খলনায়ক হয়ে দাঁড়ায় পরিবারের আর্থিক অনটন। 


মহেশ বলেন, “কয়েক মাস পড়ার পর অর্থাভাবে আর লেখাপড়া চালিয়ে যেতে পারিনি। মাঝপথে পড়া ছেড়ে এই মাটির কাজ শুরু করি। দু’বছর ধরে মাটির প্রদীপ থেকে শুরু করে ঘট, ধূনুচি তৈরি করছি। পাশাপাশি লক্ষ্মী, সরস্বতী, গণেশের ছোট ছোট প্রতিমাও তৈরি করে সংসার চালাচ্ছি। বোনকে লেখাপড়া করাচ্ছি।” তিনি জানান, তবে মাটির এই সামগ্রী তৈরি কিন্তু পারিবারিক পেশা ছিল না। ফরাক্কার বাসিন্দা মহেশের দাদু মাটির প্রদীপ তৈরি করেন। মাস তিনেক দাদু বাড়ি থেকে তিনি সেই কাজ শিখেছেন এবং তারপর থেকে নিজেই করছেন। 


মহেশ বলেন, “মাঝে মাটির প্রদীপের চাহিদা তলানিতে ঠেকলেও এখন ফের চাহিদা বেড়েছে। ফলে বিক্রিও হচ্ছে। এবারে অন্তত ৫০ হাজার মাটির প্রদীপ তৈরি করছি। বেশিরভাগ প্রদীপ তৈরিও হয়ে গিয়েছে। এখন শুকিয়ে বিক্রির পালা। পাইকাররা এসে বাড়ি থেকেই প্রদীপ নিয়ে যাচ্ছেন।”

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad