প্রদীপ ভট্টাচার্য, কলকাতা, ৫ অক্টোবর: পাখিদের মতো প্রাণী, যারা বেশিরভাগই এক সঙ্গী সাথী করে জীবন পার করে দেয়, তাদেরই আবার কেউ কেউ পরকীয়ায় মেতে ওঠে।
কোকিল গোষ্ঠীর পাখিরা বাসা বাঁধে না। তাই এদের নির্দিষ্ট কোনও সঙ্গীও থাকে না। শুধু প্রজনন মৌসুমে সঙ্গী নির্বাচন করে। প্রজননের পর অন্য পাখিদের বাসায় ডিম পাড়ে। তাই প্রজননের পর এরা সঙ্গীর সঙ্গে থাকা প্রয়োজন মনে করে না।
কিন্তু যেসব প্রাণীদের নিজেদের জোড়া থাকে, তাদের জন্য পরকীয়াটা একটু অদ্ভুত ধরনের। তবে এদের পরকীয়ার পেছনেও রয়েছে বৈজ্ঞানিক কারণ।
প্রথমে দেখে নেওয়া যাক কোন কোন পাখির পরকীয়ার প্রবণতা বেশি। এই তালিকায় সবচেয়ে পরিচিত পাখিটি হলো চড়ুই। যাদেরকে আমরা প্রায়ই চোখের সামনে দেখি। এছাড়া অন্যান্য পাখি গুলি হল- সং স্প্যারো, ইউরোপিয়ান স্টারলিং, মালার্ড ডাক, রেড ব্যাকড ফেরারিউরেন।
কেন এরা পরকীয়া করে?
এর পেছনে রয়েছে জেনেটিক কারণ। জেনেটিক বৈচিত্র বাড়ানোর জন্য অনেক পাখি পরকীয়া করে। একাধিক পুরুষ পাখির সঙ্গে মিলনের ফলে তাদের সন্তানেরা বৈচিত্রপূর্ণ জেনেটিক বৈশিষ্ট্য লাভ করে।
পরকীয়া করে পাখিরা প্রজনন সাফল্য বাড়াতে চায়। একাধিক পুরুষের সঙ্গে মিলিত হলে মেয়ে পাখির প্রজনন সাফল্য বৃদ্ধি পায় এবং তাদের সন্তানদের জীবিত থাকার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
পুরুষ পাখিদের মধ্যে প্রতিযোগিতা অনেক সময় পরকীয়ার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যারা শক্তিশালী বা সুস্থ তারা বেশি সংখ্যক মেয়ে পাখির সঙ্গে মিলিত হতে পারে।
আবার কিছু পাখি যেমন, মালার্ড হাঁস- এদের সামাজিক কাঠামো বেশ জটিল। এই সামাজিক কাঠামোতে পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে ওঠা খুব সাধারণ ব্যাপার। এতে তারা নিজেদের সামাজিক অবস্থান দৃঢ় করতে পারে।
গবেষকদের মতে, পাখিদের পরকীয়া সম্পর্কের পেছনে হরমোনের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। টেষ্টোস্টেরন এবং ইস্ট্রোজেন হরমোনের মাত্রা পাখিদের যৌন আকাঙ্ক্ষা ও যৌন আচরনকে প্রভাবিত করে।
পাখিদের পরকীয়া সম্পর্ক নিয়ে গবেষণা প্রমাণ করে যে, প্রকৃতি কেবলমাত্র একগামীতা দ্বারা পরিচালিত হয় না। জেনেটিক বৈচিত্র্য, প্রজনন সাফল্য, পুরুষের প্রতিযোগিতা এবং সামাজিক কাঠামো পাখিদের পরকীয়া সম্পর্কের প্রধান কারণ।
No comments:
Post a Comment